ভারতীয় ক্রিকেটে তরুণ ক্রিকেটারদের উত্থান নিয়ে নির্বাচকদের ভাবনাচিন্তা মাঝেমধ্যেই চর্চায় উঠে আসে। এর ফলে রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) এবং বিরাট কোহলির (Virat Kohli) ভবিষ্যৎ নিয়েও একাধিক সময় জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বয়স বাড়লেও তাদের পারফর্মেন্সের ধারাবাহিকতা সমস্ত কিছুকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার (India vs Australia ODI Series) মাটিতে দুরন্ত শতরান করে হিটম্যান নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার (India vs South Africa ODI Series) বিপক্ষে রাঁচিতে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে যোগ্য জবাব দিলেন বিরাট কোহলি। ম্যাচ শেষে নিজেকে এখনও উজাড় করে দেওয়ার জন্য তৈরি বলে তিনি জানালেন।
Read More: ‘গন্ডারের চামড়া দরকার..’, গৌতম গম্ভীরকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন জাহির খান !!
বিরাটের বিধ্বংসী ব্যাটিং-

রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টসে হেরে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমেছিল ভারতীয় দল। ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal) ১৬ বলে ১৮ রান করে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হন। এইরকম সময় রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি জুটি বেঁধে দলের ভরসা হয়ে ওঠেন। দুজনে মিলে গড়েন ১০৯ বলে ১৩৬ রান। হিটম্যান ৫১ বলে ৫৭ রানের ইনিংস গড়েন। ৩ টি ছয় এবং ৫ টি চার মারেন তিনি। এরপর রুতুরাজ গায়কোয়াড (Ruturaj Gaikwad), ওয়াশিংটন সুন্দরের (Washington Sundor) মতো তরুণ ব্যাটসম্যানরা হতাশ করে মাঠ ছাড়েন।
তবে বিরাট কেএল রাহুলের (KL Rahul) সঙ্গে জুটি বেঁধে স্কোরবোর্ড এগিয়ে নিয়ে যান। তিনি একের পর এক দৃষ্টিনন্দন শট খেলে ভক্তদের মন জয় করে নেন। এর সঙ্গেই নিজের ওডিআই ক্যারিয়ারের ৫২ তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে নতুন ইতিহাস তৈরি করেন। এই তারকা ব্যাটসম্যানের ইনিংস ১২০ বলে ১৩৫ রানে শেষ হয়। তিনি হাঁকান ১১ টি চার এবং ৭ টি ছয়।
বিরাট কোহলির বার্তা-

বিরাটের (Virat Kohli) শতরানে ভর করে শেষ পর্যন্ত ভারত ১৭ রানে জয় ছিনিয়ে নেয়। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন এই তারকা ব্যাটসম্যান। তিনি ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “এইভাবে ব্যাটিং করতে পেরে ভালো লাগছে। প্রথম ২০-২৫ ওভার পিচ ভালো ছিল। তারপর ধীর গতির হয়ে যায়। তাই মনে হচ্ছিল বাইরে বেরিয়ে এসে শট মারতে হবে। তবে বেশি কিছু ভাবার প্রয়োজন নেই। খেলাটা উপভোগ করতে হবে। যখন একটা ইনিংস শুরু করো এবং তার গভীরে যাও এতো বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তুমি জান তোমায় কী করতে হবে।
পরিস্থিতিকে বুঝে ইনিংস গড়তে হয়। আমি খুব বেশি অনুশীলনে বিশ্বাস করি না। ক্রিকেট খেলা আমার কাছে একটা মানসিক বিষয়। আমি যখন মানসিকভাবে ক্রিকেট খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করি তখন শারীরিকভাবেও বেশি পরিশ্রম করতে পারি। যতক্ষণ আমার ফিটনেস ভালো পর্যায় থাকে আমি আনন্দে থাকি। আমি অনেকবার বলেছি যদি আমি মাঠে নামি তাহলে১২০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করি। ম্যাচের আগে আমি একদিন ছুটি নিয়েছিলাম। আমার বয়স ৩৭ বছর ফলে নিজের দিকেও একটু খেয়াল রাখতে হয়।
আমি গত ১৫-১৬ বছর ধরে ৩০০’এর বেশি একদিনের ম্যাচ এবং এতো ক্রিকেট খেলেছি। তুমি খেলার মধ্যে থাকলে এবং অনুশীলনে দীর্ঘ সময় ব্যাটিং করলে মাঠের মধ্যে তার প্রতিফলন ঘটে। তবে ফর্মে কোন সমস্যা থাকলে তার জন্য সময় লাগে। অপেক্ষা করতে হয়। এই পর্যায়ে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা নয় মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ ও প্রস্তুত থাকা দরকার। খেলার মধ্যে থেকে নিজেকে উন্মাদনার মধ্যে রাখা এবং কমবেশি নিজের যত্ন নেওয়া উচিত।”