কেন্দ্রীয় সরকারের অনলাইন গেমিং বিরোধী নয়া বিলের কারণে দিনকয়েক আগেই স্পন্সর হাতছাড়া হয়েছে বিসিসিআই-এর (BCCI)। চুক্তির মেয়াদ ফুরানোর আগেই সরে দাঁড়িয়েছে ড্রিম ইলেভেন সংস্থা। এখনও তাদের বিকল্প খুঁজে উঠতে পারেন নি রাজীব শুক্ল, দেবজিৎ সইকিয়ারা। স্পন্সরের লোগো ছাড়াই এশিয়া কাপ (Asia Cup 2025) খেলছেন সূর্যকুমার যাদব, শুভমান গিলরা। ড্রিম ইলেভেন বিদায়ের ধাক্কা সামলে ওঠার আগে ফের আর্থিক জটিলতার মুখে পড়তে হলো ভারতীয় বোর্ড’কে। এবার উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের নোটিশ পেলো তারা। সরকারী তহবিলের অপব্যবহার, তহবিল তছরুপ, ক্রিকেটারদের পর্যাপ্ত সুবিধা না দেওয়ার মত একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে বিসিসিআই-এর (BCCI) অধীনস্থ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ উত্তরাখণ্ড (CAU)-এর বিরুদ্ধে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আদালতের নিশানায় দেশের ক্রিকেট প্রশাসনের সর্বোচ্চ সংস্থা।
Read More: Asia Cup 2025 BAN vs HKG Toss Report in Bengali: টসে জিতলো বাংলাদেশ, হং কং-এর বিরুদ্ধে বোলিং-ই হাতিয়ার লিটনদের !!
আদালতের নোটিশ পেলো BCCI-

মাসখানেক আগে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের আয় ও ব্যয়ের অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলো উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (CAU)। বিতর্কের সূত্রপাত সেখান থেকেই। বাইরের এক চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের তৈরি করা রিপোর্টে দেখা গিয়েছিলো একাধিক গড়মিল। ক্রিকেটারদের জন্য কলা কিনতে নাকি ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছে উত্তরাখণ্ডের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা, ঐ অডিট রিপোর্টে দাবী করা হয়েছিলো তেমনটাই। এছাড়াও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফি হিসেবে ৬.৪ কোটি এবং টুর্নামেন্ট ও ট্রায়াল আয়োজনের খরচ দেখানো হয়েছিলো ২৬.৩ কোটি টাকা। বিগত অর্থবর্ষে যেখানে টুর্নামেন্ট ও ট্রায়াল আয়োজনের খরচ ছিলো ২২.৩ কোটি, সেখানে এক ধাক্কায় সংখ্যাটা এতখানি বেড়ে যাওয়ার কারণ কি? ব্যাখ্যা চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন দেরাদুনের বাসিন্দা সঞ্জয় রাওয়াত (Sanjay Rawat) ও আরও অনেকে।
রাজ্যের ক্রিকেটাররা আদৌ কোনো সুযোগসুবিধা পান না, আদালতে দাখিল করা পিটিশনে তেমনটাই উল্লেখ করেছেন অভিযোগকারীদের আইনজীবী । খেলোয়াড়দের মানোন্নয়ন ও ক্রিকেটের উন্নতির জন্য যে খরচের খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তা অনেকটাই অতিরঞ্জিত। খাদ্যদ্রব্য ও মালপত্র পরিবহনের জন্য রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা কোটি-কোটি টাকা খরচ করলেও ক্রিকেটারদের জন্য পর্যাপ্ত ট্রেনিং বা সরঞ্জামের ব্যবস্থা তারা করে না বলেই আদালতকে জানান অভিযোগকারীরা। শুনানির সময় বিচারপতি মনোজ কুমার তিওয়ারি বিসিসিআই-এর (BCCI) উদ্দেশ্যে একটি নোটিশ জারি করেছেন। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলির আয়ব্যয়ের উপর নজরদারি রাখার কথা ভারতীয় বোর্ডের (BCCI)। তা সত্ত্বেও এহেন গাফিলতি কেন? রাজীব শুক্ল, দেবজিৎ সইকিয়াদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে আদালত।
দুর্নীতির অভিযোগ CAU-এর বিরুদ্ধে-

আসন্ন উত্তরাখণ্ড প্রিমিয়ার লীগের টেন্ডার নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন রাজ্য সংস্থার প্রাক্তন সহ-সভাপতি সুরেন্দ্র ভাণ্ডারি (Surendra Bhandari)। ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা টি-২০ টপ্রতিযোগিতা। কোনো স্বচ্ছ নিলাম পর্ব ছাড়াই একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে টুর্নামেন্ট আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন তিনি। ২০১৯ সালে উত্তরাখণ্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো বিসিসিআই (BCCI)। তারপর থেকে ২২ কোটিরও বেশী টাকা এরপর অনুদান হিসেবে পেয়েছে সিএইউ। এই বিপুল অর্থ ক্রিকেটের মানোন্নয়ন বা পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য খরচ করা হয় নি বলেই আদালতকে জানিয়েছেন সুরেন্দ্র ভাণ্ডারি (Surendra Bhandari)। বরং ঐ টাকা আত্মসাৎ করেছেন ক্রিকেট কর্মকর্তারা, অভিযোগ তাঁর।