IPL 2025: ২০২২ সালে আইপিএলে (IPL) পথচলা শুরু করেছিলো গুজরাত টাইটান্স। আবির্ভাবেই ট্রফি জিতে চমকে দিয়েছিলো তারা। দ্বিতীয় মরসুমেও নজর কেড়েছিলো গুজরাত (GT)। পৌঁছে গিয়েছিলো ফাইনালে। টানা দ্বিতীয় খেতাব জয়ের পথে সেবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। শেষ বলে বাউন্ডারি হজম করে টাইটান্সদের স্বপ্ন ভাঙলেও কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছিলো তাদের পারফর্ম্যান্স। ২০২৪-এর আইপিএলে বড়সড় রদবদলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাদের। দল ছাড়েন হার্দিক পান্ডিয়া। নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান শুভমান গিল (Shubman Gill)। গুছিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়েছিলো ফ্র্যাঞ্চাইজির। যার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে মাঠে। অষ্টম হয়ে শেষ করেছে তারা। ২০২৪-এর ব্যর্থতা ভুলতে মরিয়া গুজরাত। রিটেনশনের পর হাতে রয়েছে ৬৯ কোটি। তা দিয়েই মেগা অকশনে বাজিমাত করতে চায় তারা।
Read More: IND vs AUS 1st Test: পারথ্ টেস্টে নেই শুভমান গিল, বিকল্প হিসেবে ‘ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি’ নিচ্ছেন এই ক্রিকেটার !!
ঈশান কিষণ-
ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha), ম্যাথু ওয়েড ও বি আর শরথ, ২০২৪ আইপিএলের (IPL) স্কোয়াডে থাকা তিন উইকেটরক্ষককেই সরিয়ে দিয়েছে গুজরাত টাইটান্স (GT)। তাই জেড্ডার মেগা অকশনে উইকেটরক্ষক-ব্যাটারদের দিকে অবশ্যই নজর থাকবে গুজরাত টাইটান্সের। তাদের উইশলিস্টের প্রথমেই থাকতে পারে ঈশান কিষণের (Ishan Kishan) নাম। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। ২০১৮ থেকে ২০২৪ অবধি তিনি খেলেছেন কিন্তু এবারের রিটেনশন তালিকায় পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নরা রাখে নি ঝাড়খণ্ডের তারকাকে। তবে তাঁকে ফেরানোর চেষ্টা করতে পারেন আম্বানিরা। জোর টক্করের সম্ভাবনা রয়েছে তাই। তবে গুজরাত অধিনায়ক শুভমান গিলের সাথে অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক ঈশানের। ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’-এর জন্য অল-আউট ঝাঁপাতে তাই দ্বিধা করবেন না তিনি। ১৫-১৮ কোটি খরচ করতে পারে টাইটান্স ফ্র্যাঞ্চাইজি।
রহমানুল্লাহ গুরবাজ-
ঈশান ছাড়াও উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজের (Rahmanullah Gurbaz) দিকেও নজর দিতে পারে গুজরাত টাইটান্স। এর আগেও একবার টাইটান্স শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেইবার ট্রেড পদ্ধতিতে তাঁকে কলকাতা নাইট রাইডার্সে পাঠিয়ে দিয়েছিলো ফ্র্যাঞ্চাইজি। এবার ফের তাঁকে সই করানোর চেষ্টা করতে পারেন শুভমান গিল’রা। এই মুহূর্তে ভালো ফর্মে রয়েছেন গুরবাজ। চলতি বছরের টি-২০ বিশ্বকাপে ভালো খেলেছেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজেও করেছেন শতরান। নিজের দিনে প্রতিপক্ষ বোলারদের কাছে ত্রাস হয়ে উঠতে পারেন তিনি। ঋদ্ধিমানের অবসরের পর কেবল উইকেটরক্ষক নয়, একজন ওপেনার’ও প্রয়োজন গুজরাতের (GT)। সেই শূন্যস্থান পূরণে কার্যকরী হতে পারেন গুরবাজ। ৩-৪ কোটি খরচ হতে পারে তাঁর জন্য।
লিয়াম লিভিংস্টোন-
গুজরাত (GT) মিডল অর্ডারে এতদিন খেলে এসেছিলেন ডেভিড মিলার, আজমাতুল্লাহ ওমরজাই, বিজয় শঙ্কর’রা। কিন্তু রিটেনশন তালিকায় একজনকেও রাখে নি ফ্র্যাঞ্চাইজি। নতুন করে স্কোয়াড সাজাতে হবে তাদের। মিডল অর্ডারের শূন্যস্থান পূরণে তারা আস্থা রাখতে পারে ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার লিয়াম লিভিংস্টোনের (Liam Livingstone) উপর। ধুন্ধুমার ব্যাটার হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তাঁর। যে কোনো অবস্থা থেকে দ্রুত বদলে দিতে পারেন ম্যাচের গতিপথ। মাঝের ওভারে অফস্পিনার হিসেবেও দলকে সাফল্য এনে দিতে পারেন তিনি। পাঞ্জাব কিংসের হয়ে ইতিমধ্যে আইপিএলে (IPL) বেশ কিছু কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন তিনি। তা সত্ত্বেও রিটেন করা হয় নি লিভিংস্টোন‘কে। সেই ফায়দাটাই তুলতে পারে গুজরাত। ফর্মে থাকা তারকার জন্য তীব্র লড়াইয়ের সম্ভাবনা। ৮-১০ কোটি খরচ হতে পারে তাঁর জন্য।
কাগিসো রাবাডা-
দলের দুই সেরা পেস অস্ত্র মহম্মদ শামি (Mohammed Shami) ও মোহিত শর্মা’কে এবার রিলিজ করে দিয়েছে গুজরাত টাইটান্স। গত মিনি নিলাম থেকে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে দলে নেওয়া স্পেন্সার জনসনের উপরেও দেখানো হয় নি আস্থা। সম্পূর্ণ পেস বিভাগকেই নতুন করে গড়তে হবে শুভমান গিল’দের। বিশেষজ্ঞদের ধারণা যে একজন ‘মার্কি’ পেসার নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাগিসো রাবাডার দিকে হাত বাড়াতে পারে গুজরাত। ইতিপূর্বে দিল্লী ক্যাপিটালস, পাঞ্জাব কিংসের মত দলের হয়ে আইপিএল (IPL) খেলেছেন রাবাডা (Kagiso Rabada)। ৮০ ম্যাচে মাত্র ২১.৯৬ গড়ে ১১৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ২০২০-২১ মরসুমে ৩০ উইকেট নিয়ে জিতেছেন পার্পল ক্যাপ’ও। নতুন বলে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে তাঁর। রাবাডার জন্য’ও দড়ি-টানাটানি হবে ভালোই। ১২-১৩ কোটিও উঠতে পারে দাম।
রবিচন্দ্রণ অশ্বিন-
গুজরাত টাইটান্সের (GT) ‘উইশলিস্টে’ পঞ্চম নামটি হতে পারে রবিচন্দ্রণ অশ্বিনের। দীর্ঘ কেরিয়ারে চেন্নাই সুপার কিংস, দিল্লী ক্যাপিটালস, রাজস্থান রয়্যালস, পাঞ্জাব কিংসের মত দলের হয়ে খেলেছেন ৩৮ বর্ষীয় তারকা। ২১২ ম্যাচে ১৮০ উইকেট নিয়েছেন। সাথে রয়েছে ৮০০ রান’ও। পাওয়ার প্লে এবং ডেথ ওভারে বোলিং করতে পারেন ডান হাতি অফস্পিনার। তাঁর ক্যারম বল বা স্লাইডার সমস্যায় ফেলতে পারে প্রতিপক্ষকে। বিশেষ করে আহমেদাবাদের বাইশ গজে দল’কে দুর্দান্ত সাফল্য এনে দিতে পারেন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও কার্যকরী ক্যামিও খেলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। লোয়ার অর্ডারে তেওয়াটিয়া, রশিদ খানদের সাথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন তিনি। বয়স বিপক্ষে যাচ্ছে তাঁর। তবুও অন্তত দি বা তিন মরসুমের জন্য অশ্বিনের উপর বিনিয়োগ করতে পারে গুজরাত। খরচ করতে পারে ৪-৬ কোটি টাকা।