বেশ জমে উঠেছে আইপিএলের (IPL 2023) ১৬ তম মরশুম। একেরপর এক হাই ভোল্টেজ থ্রিলার দেখা যাচ্ছে মরশুম জুড়ে। শেষের পথে চলে এসেছে চতুর্থ সপ্তাহের খেলাও, এমনকি প্রতিটি দল তাদের অর্ধেক ম্যাচ খেলেও ফেলেছে। ইতিমধ্যে ৭ টি করে ম্যাচ খেলার পর পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস ল শেষ স্থানে রয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস। অজিঙ্কা রাহানে (Ajinkya Rahane) থেকে শুরু করে রিঙ্কু সিং (Rinku Singh) সবার নয়নের মনি হয়ে উঠেছেন এই আইপিএলে। প্রতিটি দল তাদের সেরা প্রদর্শন দেখানোর চেষ্টা করলেও এমন কিছু প্লেয়ার রয়েছেন যারা একেরপর সুযোগ পেয়েও তাকে কাজে লাগাতে পারছেন না। এমনকি দলের বোঝা ও হয়ে দাঁড়িয়েছেন। ব্যাটিং করতে এসে নষ্ট করছেন একাধিক বল ও বোলিং করতে এসে দিয়ে ফেলছেন অত্যাধিক রান। চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৫ প্লেয়ার যারা টি টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট নয় তবুও খেলে যাচ্ছেন একেরপর এক ম্যাচ।
১. কে এল রাহুল

বিগত কয়েক সময় ধরেই বেশ সমস্যার মুখে রয়েছেন ভারতীয় দলের নির্ভরশীল এই ব্যাটসম্যান। গতবছর আইপিএলের পর থেকে চোটের কারণে কিছু মাস ক্রিকেট থেকে দূরে ছিলেন রাহুল (KL Rahul), কিন্তু তিনি মাঠে ফিরলেও তুলনামূলক প্রদর্শন দেখাতে হন ব্যার্থ। ভারতীয় দলের হয়ে চূড়ান্ত ফ্লপ হওয়ার পর তিনি এবছর আবার লখনৌ সুপার জায়ান্টস দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার অধিনায়কত্বে দল ভালো করলেও ব্যক্তিগতভাবে খুব বেশি সফল হননি রাহুল।
তার ব্যাট থেকে ম্যাচ উইনিং নক আসলেও তার পারফরমেন্স তার দলকে ব্যার্থতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। তিনি এই আইপিএলে (৭ ম্যাচ পরে) ৩৭.৪৩ গড়ে ২ টি অর্ধশতরান সহ ২৬২ রান করেছেন। তবে তার স্ট্রাইক রেট ১১৩.৯১ যেটি এই ফরম্যাটের ক্ষেত্রে খুবই খারাপ। এমনকি গুজরাতের বিরুদ্বে অর্ধশতরান করার পরেও টুকটুক করে খেলা চালিয়ে গিয়ে দলকে পরাজয়ের দিকে ঠেলে দেন রাহুল।
২. ডেভিড ওয়ার্নার

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন আইপিএল ইতিহাসে বিদেশি প্লেয়ার হিসাবে সর্বাধিক রান বানানো ডেভিড ওয়ার্নার (David Warner)। আইপিএল ইতিহাসে সব থেকে বেশি বার (৩) অরেঞ্জ ক্যাপ জিতেছেন এই অজি ব্যাটসম্যান। বেশ কিছু সময় ধরে ফর্মের সন্ধানে রয়েছেন ওয়ার্নার। এবছর ঋষভ পন্থের (Rishabh Pant) অনুপস্থিতিতে দিল্লি দলের দায়িত্ব নিয়েছেন ডেভিড ।
অধিনায়ক হিসেবে তিনি এর আগে একবার ট্রফিও জিতেছেন তবে এবছর তার অধিনায়কত্বে প্রথম ৫ ম্যাচেই পরাজয় এসেছে দিল্লির। ব্যাট হাতে অবশ্য দলকে কিছুটা রান বানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে তিনিও রাহুলের মতন ই প্রচুর দল খেলে ফেলেছেন। ৭ ম্যাচের পর ৪৩.৭১ গড়ে ১১৯.৫৩ স্ট্রাইক রেটে তিনি ৩০৬ রান বানিয়েছেন। রানের তালিকায় শীর্ষের দিকে থাকলেও তার প্রদর্শনে চাপের মুখে পড়তে হয়েছে দিল্লি দলকে।
৩. লকি ফার্গুসন

নিউজিল্যান্ডের পেসার লকি ফার্গুসন এবছর কলকাতা দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। কিউ’ই এই বলার বিগত কয়েক সময় ধরে সমস্যার মুখে রয়েছেন। প্রথমত আইপিএলে চোটের কারণে প্রথম কয়েকটি ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি তিনি। তবে যে কটি ম্যাচ কলকাতার হয়ে তিনি প্রদর্শন দেখিয়েছেন, তিনি হয়েছেন চূড়ান্ত ফ্লপ।
কেবলমাত্র ৭ ওভার বোলিং করার সুযোগ পেয়েছেন লকি এবং দিয়েছেন ৯৬ রান অর্থাৎ তার ইকোনমি রেট ১২.৫২ এবং উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১ টি। তার এই চরম ফ্লপ পারফরমেন্সের পর সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল কলকাতা দলকে। ১০ কোটি টাকায় গুজরাট থেকে ট্রেড হয়েছিলেন KKR-এ এবং হতাশ করেছেন টিম ম্যানেজমেন্ট কে।
৪. বেন স্টোকস

এবছর আইপিএলে বেশ দাম পেয়েছে অলরাউন্ডাররা। তাদের মধ্যে একজন হলেন ইংল্যান্ডের লাল বলের অধিনায়ক বেন স্টোকস (Ben Stokes)। ২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হওয়া টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলের হয়ে বেশ প্রদর্শন দেখিয়ে আইপিএল নিলামে তাকে কেনা হয়েছিল ১৬.২৫ কোটি টাকায়। মৌসুমে এখন পর্যন্ত ২ টি ম্যাচ খেলেছেন স্টোকস, খেলার পাশাপশি তিনি চোটের কারণে ইতিমধ্যে দলের থেকে বাইরেও আছেন। তিনি দুই ম্যাচে ৭ ও ৮ রান করেন এবং মাত্র একটি ওভার বল করেছেন।
৫. মায়াঙ্ক আগারওয়াল

এই তালিকায় একেবারে শেষে রয়েছেন হায়দ্রাবাদ দলের ওপেনার ব্যাটসম্যান মায়াঙ্ক আগারওয়াল (Mayank Agarwal)। তাকে দলে পেতে ৮ কোটি টাকা খরচ করেছিল সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। এমনকি অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেছিল তাকে অধিনায়কত্ব তুলে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি এই সিজিনে হচ্ছেন ব্যার্থ। গত সিজিনে পাঞ্জাব কিংসের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আগারওয়াল, এবং সম্পূর্ণ রূপে ছিলেন ব্যার্থ। ৭ ম্যাচে তিনি মোট ২৩.৪৩ গড়ে ১৬৪ রান করেছেন এবং তার স্ট্রাইক রেট মাত্র ১১১.৫৬।