TOP 5: সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে মাঝেমধ্যেই চোখে পড়ে যে ভারতীয় ক্রিকেট তারকা বীরেন্দ্র শেহবাগ (Virender Sehwag) নাকি সাত পাকে বাঁধা পড়েছেন নিজের তুতো বোন আরতি’র সাথে। যদিও বাস্তবটা খানিক আলাদা। আরতির মাসির সাথে বিয়ে হয়েছিলো শেহবাগের এক কাজিনের। একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে যখন প্রথম আলাপ হয়েছিলো দু’জনের তখন শেহবাগের বয়স ছিলো সাত বছর, আর আরতি তখন পাঁচ বছরের বালিকা। সেই সময় বন্ধুত্ব হয়েছিলো দু’জনের। পরে সেই বন্ধুত্বই পর্যবসিত হয়েছিলো ঘনিষ্ঠতায়। ২০০৪ সালে বিয়ে করেন তাঁরা। বর্তমানে আর্যরীর ও বেদান্ত নামে দুই পুত্রসন্তানও রয়েছে তাঁদের। শেহবাগের ক্ষেত্রে ‘কাজিন’কে বিয়ে করার খবর সত্যি না হলেও ক্রিকেটদুনিয়ায় এমন উদাহরণ যে নেই, তা নয়। পড়শি দেশ পাকিস্তান ও বাংলাদেশে এমন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার রয়েছেন, যাঁরা জীবনসঙ্গিনী করেছেন বোনদের।
Read More: শ্রেয়স অধ্যায় অতীত, ট্রফিজয়ী অধিনায়ককে ফেরাতে রাজী নন শাহরুখ-ভেঙ্কি মাইশোররা !!
শাহীদ আফ্রিদি-নাদিয়া-

পাকিস্তানের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার শাহীদ আফ্রিদি (Shahid Afridi)। ধুন্ধুমার ব্যাটিং-এর পাশাপাশি বল হাতেও যথেষ্ট কার্যকরী ছিলেন তিনি। দেশের হয়ে খেলেছেন ২৭টি টেস্ট ম্যাচ ও ৩৯৮টি ওয়ান ডে। এছাড়া ২০০৯ সালে কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তান দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের পর পাকিস্তান দলের নির্বাচক হিসেবেও দায়িত্ব সামলাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২০০০ সালে আফ্রিদি, যখন কেরিয়ারের মধ্যগগনে, তখনই মামাতো বোন নাদিয়ার সাথে বিয়ে হয়েছিলো তাঁর। আনসা, আকসা, আজওয়া, আকমারা ও আরওয়া নামে পাঁচ কন্যাসন্তানও রয়েছে শাহীদ আফ্রিদি ও নাদিয়ার। জৈষ্ঠ্য কন্যা আনসা’র বিয়ে হয়েছে আরেক ক্রিকেট নক্ষত্র শাহীন শাহ আফ্রিদির সঙ্গে। জামাইয়ের বিরুদ্ধে মাঠেও নেমেছেন শাহীদ আফ্রিদি।
সাইদ আনোয়ার-লুবনা-

নব্বইয়ের দশকে বিস্ফোরক ওপেনার হিসেবে সুখ্যাতি ছিলো পাকিস্তানের সাইদ আনোয়ারের (Saeed Anwar)। ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর করা ১৯৪, দীর্ঘ সময় ওয়ান ডে ক্রিকেটে কোনো ব্যাটারের খেলা সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিলো। শেষমেশ ২০১০-এ গোয়ালিয়রের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই রেকর্ড ভাঙেন শচীন তেন্ডুলকর। ৫৫টি টেস্ট খেলেছেন আনোয়ার, ওয়ান ডে’তে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ২৪৭টি ম্যাচে। তাঁর ঝুলিতে রানসংখ্যা যথাক্রমে ৪০৫২ ও ৮৮২৪। ‘কাজিন’-এর সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হয়েছেন তিনিও। ১৯৯৬ সালে বিয়ে হয় সাইদ আনোয়ার ও লুবনা’র। পেশায় আনোয়ারের স্ত্রী ছিলেন একজন চিকিৎসক। বিসমাহ ও খুজিমাহ নামে দুই সন্তান রয়েছে তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। ২০০১-এ শেষ হয় তাঁদের যৌথ পথচলা। দীর্ঘ রোগভোগের পর প্রয়াত হন লুবনা।
মুস্তাফিজুর রহমান-সামিয়া পরভিন-

পাকিস্তানের পাশাপাশি ‘কাজিন’দের বিয়ে করার নজির রয়েছে বাংলাদেশী ক্রিকেটারদেরও। সেই তালিকায় নাম থাকবে ‘কাটার মাস্টার’ মুস্তাফিজুর রহমানের (Mustafizur Rahman)। ২০১৫ সালে ভারতের বিরুদ্ধে সাড়া জাগিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। গত এক দশকে ‘টাইগার্স’ বোলিং লাইন-আপের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন তিনি। ওয়ান ডে ও টি-২০তে জায়গা করে নিয়েছেন বিশ্বসেরাদের তালিকায়। এখনও অবধি খেলেছেন ১৫ টেস্ট, ১১২টি ওয়ান ডে ও ১১১টি টি-২০। উইকেটসংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। ২০১৯ সালে বিয়ে করেন মুস্তাফিজ। বিশ্বকাপ খেলে দেশে ফেরার পর মামার মেয়ে সামিয়ে পরভিনের সাথে পরিণয় সূত্রে বাঁধা পড়েন তিনি। মুস্তাফিজের স্ত্রী মেধাবী ছাত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন সামিয়া।
মোসাদ্দেক হোসেন-শর্মিন শামিরা ঊষা-

তালিকায় চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে নাম থাকবে বাংলাদেশের মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের (Mosaddek Hossain Saikat)। ‘টাইগার্স’দের হয়ে ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় তাঁর। ২০২২ অবধি নিয়মিত খেলেছেন দেশের হয়ে। ৪টি টেস্ট, ৪৩টি ওয়ান ডে ও ৩৩টি টি-২০তে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বাংলাদেশের। রান সংখ্যা যথাক্রমে ১৭৩, ৬৩৪ ও ৩৮৯। লাল বলের ক্রিকেটে উইকেট না পেলেও সাদা বলের দুই ফর্ম্যাটে নিয়েছেন যথাক্রমে ১৭ ও ১৮টি উইকেট। দেশের জার্সি গায়ে চাপানোর বেশ কয়েক বছর আগে-২০১২ সালে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন মোসাদ্দেক। পাত্রী ছিলেন তাঁর ‘কাজিন’ শর্মিন শামিরা ঊষা। যখন বিয়ে হয় তাঁর, তখন বয়স ছিলো মাত্র ১৬। যদিও এই বিয়ে টেকে নি বেশীদিন। ২০১৮ সালে বিচ্ছেদ হয় মোসাদ্দেক ও শর্মিনের।
বাবর আজম-নাদিয়া-

ক্রিকেটদুনিয়ার অন্যতম চর্চিত নাম বাবর আজম (Babar Azam)। আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটার হিসেবে সুবিদিত তিনি। দীর্ঘ সময় পাকিস্তানের নেতৃত্বও সামলেছেন। তাঁর অধিনায়কত্বে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালও খেলেছে পাক দল। ২০২২ নাগাদ খবর ছড়িয়েছিলো যে মামাতো বোন নাদিয়ার সাথে বাগদান সেরেছেন বাবর। ২০২৩-এ বিয়ে করতে চলেছেন তাঁরা। শেষমশ তেমন কিছু অবশ্য হয় নি। গোটা বিষয়টিই ‘গুজব; বলে উড়িয়ে দিয়েছে ক্রিকেটতারকার পরিবার। পরে অভিনেত্রী হানিয়া আমিরের সাথে নাম জড়িয়েছিলো প্রাক্তন পাক অধিনায়কের। কিন্তু সেই খবরেরও কোনো সত্যতা পাওয়া যায় নি। এখনও অবধি খাতায়-কলমে ‘সিঙ্গল’ই রয়েছেন বাবর।