TOP 3: ব্যাট-বলের চরমতম পরীক্ষা বলা হয় টেস্ট ক্রিকেটকে। পরিবেশ-পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিয়ে পাঁচ দিন ধরে প্রতিপক্ষকে মাত করতে চলে কৌশল নির্মাণ। কখনও প্রতি সেশনে পালটায় খেলার গতিপ্রকৃতি। পেন্ডুলামের মত দুলতে থাকে ম্যাচের ভবিষ্যৎ। কখনও প্রতিপক্ষের যাবতীয় পরিকল্পনা বানচাল করে ব্যাট হাতে মহীরুহ হয়ে উঠতে দেখা যায় কাউকে, আবার কখনও ব্যাটারকে বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়ে, তাঁর রক্ষণ ভেদ করে সাফল্য ছিনিয়ে নেন কোনো বোলার। ওয়ান ডে, টি-২০ ক্রিকেটের বাড়বাড়ন্তের মাঝেও টেস্ট ক্রিকেট যে আজও ক্রীড়াপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায় পয়লা নম্বর, তার প্রমাণ পাওয়া যায় হালের ভারত-অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান সিরিজগুলি থেকেই। ব্যাট-বলের যুদ্ধের দেড়শ বছরের ইতিহাসে মাত্র তিন বোলার কোনো রান খরচ না করেই একাধিক উইকেট নিয়েছেন। তাঁদের কথাই রইলো এই প্রতিবেদনে।
Read More: IND vs AFG: চোট সারিয়ে ফিরছেন রশিদ খান, ভারতের মহড়া নিতে শক্তিশালী স্কোয়াড ঘোষণা আফগানিস্তানের !!
রিচি বেনো-
এই বিশেষ তালিকায় সবার উপরে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি স্পিনার রিচি বেনো (Richie Benaud)। ৬৩ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার ‘ব্যাগি গ্রিন’ মাথায় চাপিয়ে খেলেছেন তিনি। ২৭.০৩ গড়ে নিয়েছেন ২৪৮ উইকেট। এর মধ্যে ১৯৫৯ সালে দিল্লীর মাঠে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর পারফর্ম্যান্স আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছে ক্রিকেট পরিসংখ্যানবিদদের নোটবইতে। ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ভারত গুটিয়ে গিয়েছিলো মাত্র ১৩৫ রানে। কিংবদন্তি নরি কন্ট্রাক্টর ৪১ রান করলেও বাকিরা সকলেই ব্যর্থ হন। এই ম্যাচে রিচি বেনো (Richie Benaud) ৩.৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে কোনো রান খরচ না করেই তুলে নিয়েছিলেন তিনটি উইকেট। তাঁর বলে উইকেট হারান উইকেটরক্ষক নানা যোশী। মিডিয়াম পেসার ভেন্টাপ্পা মুদ্দিয়া ও রমাকান্ত দেশাই। নানা যোশী করেন ১৫। বাকি দুজনে কোনো রানই করতে পারেন নি।
জো রুট-
এই তালিকায় থাকা দ্বিতীয় নামটি চমকে দেওয়ার মত। ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটার জো রুট (Joe Root) বল হাতে কামাল করেন শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। ২০২১ সালে ম্যাচটি আয়োজিত হয়েছিলো শ্রীলঙ্কার গলে। প্রথম ইনিংসে ৩৭ রানের লীড পেলেও ইংল্যান্ডের বোলিং-এর দাপটে দ্বিতীয় ইনিংসে এঁটে উঠতে পারে নি শ্রীলঙ্কা। মাত্র ১২৬ রানে গুটিয়ে যায় তারা। লঙ্কাবাহিনীর ব্যাটিং-এ শেষ পেরেকটা পোঁতেন জো রুট। ঘূর্ণি পিচে প্রতিপক্ষকে বেশ বেকায়দায় ফেলেন তিনি। লোয়ার অর্ডারে প্রতিরোধ গড়েছিলেন লাসিথ এমবুলদেনিয়া। তাঁর ৪০ রানের ইনিংসে দাঁড়ি টানে রুটের (Joe Root) ডেলিভারি। জনি বেয়ারেস্টোর হাতে ধরা পড়েন তিনি। পরের বলেই অসিথা ফার্নান্দোকেও বোল্ড করেন রুট। ১.৫ ওভার হাত ঘুরিয়ে কোনো রান খরচ না করেই তিনি তুলে নেন ২ উইকেট।
মুকেশ কুমার-
এই বিশেষ তালিকায় তৃতীয় নামটি ভারতের মুকেশ কুমারের (Mukesh Kumar)। সম্প্রতি কেপ টাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া। নিউল্যান্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের পিচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নাজেহাল হতে দেখা যায় প্রোটিয়া ব্যাটারদের। মহম্মদ সিরাজের আগুনে স্পেলে পরপর সাজঘরে ফেরেন ডিন এলগার, এইডেন মার্করাম’রা। বাংলার মুকেশ কুমার’ও (Mukesh Kumar) দুর্দান্ত বোলিং করেন। তাঁর শর্ট পিচ বলের নাগাল না পেয়ে রোহিত শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন কেশব মহারাজ। এরপর কাগিসো রাবাডা ধরা পড়েন শ্রেয়স আইয়ারের হাতে। ৫৫ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংস। ২.২ ওভার হাত ঘুরিয়ে ২ টি মেডেন ও কোনো রান খরচ না করেই ২ উইকেট নেওয়ার বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হন মুকেশ।