চার বছর আছে বিশ্বসেরা হওয়ার জার্নি। মাস দেড়েক ধরে চলা এই ক্রিকেটিং জার্নিতে শেষ অবধি আমরা পাই জয়ীদের। কত আনন্দ, কত আবেগ আমরা দেখেছি এযাবৎ বিশ্বকাপে। এসবের শেষে প্রদীপের শিখার তলায় থেকে যায় একাধিক কিংবদন্তীতিরা যাদের কোনও দিন পরে হয়ে ওঠেনা বিশ্বসেরা মুকুট। আজকের প্রতিবাদ তাদের নিয়ে।
দেখে নিন সেইসব ক্রিকেট তারকাদের
১০. লাসিথ মালিঙ্গা
বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর পেসার।তার আগুনে স্পেলের কাছে একসময় খতম হয়েছে বিভিন্ন দলের ব্যাটিং লাইন আপ।তার নিঁখুত ইয়র্কার খেলাটা ঋতিমতো কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের কাছে।নিজের সেরা সময় জিতিয়েছেন একাধিক সব ম্যাচ শ্রীলঙ্কা দলকে।এমন একজন ধারাবাহিক দুরন্ত বোলারের বিশ্বকাপ জেতাটা অধরাই থেকে গেছে।
৯. ক্রিস গেইল
তার মাঠে নামা মানে চার – ছক্কার বন্যা।গোটা বিশ্ব জুড়ে তার বিরাট ভক্ত সংখ্যা।গোট বিষয়টি উপভোগ করেন তিনিও।ক্রিকেটের অন্যতম সুপারস্টার মাতিয়েছেন বিশ্বকাপেও।৩৫ টি বিশ্বকাপ ম্যাচে তার রান সংখ্যা ১১৮৬।এমনকি ২০১৫ এর বিশ্বকাপে একটি ডবল সেন্চুরি রয়েছে তার।দীর্ঘ বর্নময় কেরিয়ারে ” ইউনিভার্সাল বস ” এর ট্রফি কেবিনে নেই কোনও বিশ্বকাপ।
৮. জ্যাক কালিস
ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।এই মুহূর্তে বিশ্বের তাবড় তাবড় অলরাউন্ডারের কেউই তার ধারে কাছে নেই।একদিকে তার যেমন আছে ২৭৩ টি উইকেট, ঠিক তেমনই রয়েছে ১১, ০০০ রান।এমন একজন ক্রিকেটারের বিশ্বকাপ জেতেননি।তার মতো একজন ক্রিকেটারকে মিস করে ক্রিকেট বিশ্ব।
৭. ব্রায়ান লারা
তার সময়কার অন্যতম সেরা ক্রিকেটার মনে করা হয় তাকে।কব্জির দুরন্ত মুন্সীয়ানা এবং অসাধারণ ব্যাটিং স্টান্সে সেই সময়কার একাধিক বোলারদের ঋতিমতো চাপের মুখে দাড় করিয়েছিলেন তিনি।তার কেরিয়ারের দিকে লক্ষ্য রাখলে দেখা যাবে তার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস এসেছে কঠিন সময়।একাধিক পালক জুটেছে লারার বর্নময় কেরিয়ার জুড়ে।কিন্তু বিশ্বকাপ টা অধরাই থেকে গিয়েছে।
৬. রাহুল দ্রাবিড়
ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান।প্রথম বিশ্বকাপ ১৯৯৯ এ।সেইবার আট ম্যাচে ৪৬১ রান করেছিলেন তিনি।প্রসঙ্গত, সেই বার বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন তিনি।পরবর্তী সময়ে ২০০৩ এর বিশ্বকাপে ফের আরেকবার সাফলতা পান দ্রাবিড়।কিন্তু সেই বার ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে যায় ভারত।সেইবছর বিশ্বকাপে ৩১৮ রান করার পাশাপাশি উইকেটের পিছনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন দ্রাবিড়।পরবর্তী সময়ে ২০০৭ এর বিশ্বকাপে অধিনায়ক নির্বাচিত হন এই কিংবদন্তী ক্রিকেটার।কিন্তু সেই বার বিরাট বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট দলকে।
৫. এবিডি ভিলিয়ার্স
২০০৪ সালে সাউথ আফ্রিকার হয়ে অভিষেক হয় বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম তারকা এবিডি ভিলিয়ার্স । ২০০৭ এর বিশ্বকাপে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন এবি। যদিও বিশ্বকাপের প্রসঙ্গ উঠলে সাউথ আফ্রিকার ভাগ্য কখনও সহায় হয়নি। ফেরা যাক এবি’র প্রসঙ্গে, যখনই বাইশ গজে নেমেছেন, তখনই কোনও না কোনও রেকর্ড ভেঙেছেন। মাঠে এমন এমন জায়গায় বল পাঠিয়েছেন যেখানে অধিনায়ক এবং বোলারদের পক্ষে ফিল্ড সেট করা ছিলো ভাবনার বাইরে। একদিবসীয় ক্রিকেটে তার গড় ৫৩.৫০।অবসর নেওয়ার আগে অবধি আইসিসি’র ক্রম তালিকায় বরাবর উপরের দিকে থাকতেন এবি।
৪. অনিল কুম্বলে
ভারতের হয়ে টেস্টে এবং ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী অনিল কুম্বলে, এমন কিংবদন্তী একজন ক্রিকেটারের ও বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরা থেকে গেছে।স্পিনের দাপটে বিপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করা ,দলের প্রয়োজনে উইকেট তুলে নেওয়া সবক্ষেত্রেই জুড়ি মেলা ভার ছিলো কুম্বলের।ভারতের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি।১৯৯৬ এর বিশ্বকাপে নিয়েছিলেন ১৫ টি উইকেট।ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল এই ওপেনারের কাপ জেতা অধরাই থেকে গেছে।
৩. কুমার সাঙ্গাকারা
তার অধিনায়কত্বে শ্রীলঙ্কা ২০১১ এর বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে গেছিলো।সেই বার বিশ্বকাপে নয় ম্যাচে তার রান সংখ্যা ৪৬৫।তিলকারত্নে দিলশান এবং শচীন তেন্ডুলকরের পর সেই বার বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন তিনি।এর আগেও ২০০৭ এর বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছে জয় অধরা ছিলো তার।কিংবদন্তী ক্রিকেটার যারা বিশ্বকাপ জেতেনি সেই তালিকায় অন্যতম একজন কুমার সাঙ্গাকারা।
২. লান্স ক্লুজেনার
বিশ্ব ক্রিকেটে কিংবদন্তী অলরাউন্ডারের প্রসঙ্গ উঠলে যে নাম গুলো প্রথমে চোখের সামনে ভেসে উঠবে তাদের মধ্যে অন্যতম একজন লান্স ক্লুজেনার।তার মতো একজন অলরাউন্ডার যে কোনও দলের কাছে সম্পদ।
ডাউন অর্ডারে ব্যাট করতে নেমে সাউথ আফ্রিকাকে এনে দিয়েছেন একাধিক ম্যাচে জয়। ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপের খুব ফাইনালে পৌঁছে গেছিলো সাউথ আফ্রিকা তার কৃতিত্বের উপর ভর করে।
১. সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
এপ্রসঙ্গে প্রথমেই যে ক্রিকেটারের নাম উঠে আসবে তিনি হলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ১৯৯২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আঙিনায় আত্মপ্রকাশ হয় সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ১৯৯৬ ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক তাকে জায়গা করে দেয় ইতিহাসের পাতায়। ঐতিহাসিক লর্ডসের মাটিতে অভিষেক টেস্টে সেন্চুরি করে সেইবার ঋতিমতো সারা ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে হয়েছিলেন দেশের অধিনায়ক। একঝাঁক উঠতি তারকাদের নিয়ে পৌঁছে গেছিলেন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে। নির্ভয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করাটা শিখিয়েছিলেন তিনি।