ক্রিকেটের সমস্ত দল চালানোর জন্য তাদের নিজেদের একটি ক্রিকেট বোর্ড থাকে। ক্রিকেট বোর্ডের ব্যানারের নীচেই কোনো খেলোয়াড় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। এই অবস্থায় প্রত্যেক খেলোয়াড়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য নিজেদের বোর্ডের তরফে সম্পূর্ণ সমর্থন জরুরী হয়ে যায়, যার সাহায্যে তারা নিজেদের কেরিয়ারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।
এই ৫জন দিগগজ খেলোয়াড়ের জন্য নিজের বোর্ডই হয়েছে শত্রু
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কথা বলা হলে এমন কিছু খেলোয়াড় রয়েছেন যাদের পুরো কেরিয়ার চলাকালীন বোর্ডের টিম সিলেকশনে দারুণ সমর্থন পাওয়া গেছে। কিন্তু ক্রিকেট জগতে কিছু দুর্ভাগ্যবান খেলোয়াড় থাকেন যারা নিজেদের বোর্ডের সমর্থন পান না। আজ আমরা আপনাদের এই প্রতিবেদনে ক্রিকেট জগতের সেই ৫জন দিগগজ খেলোয়াড়ের ব্যাপারে জানাব যারা কখনো বোর্ডের সমর্থন পাননি।
শোয়েব আকতার
পাকিস্তান ক্রিকেট দলে সবসময়ই জোরে বোলারদের কর্তৃত্ব থেকেছে। পাকিস্তানের জোরে বোলিংয়ে বেশকিছু দিগগজ নাম ক্রিকেট জগতে এসেছে। এই সমস্ত বোলারদের কথা বলা হলে গতির সম্রাট শোয়েব আকতারের নাম যথেষ্ট বড়ো। পাকিস্তানই নয় শোয়েব আকতারের নাম পুরো ক্রিকেট জগতেই অনেক বড়ো থেকেছে। শোয়েব নিজের বোলিংয়ে পাকিস্তানের দলের হয়ে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত খেলেছেন। আকতারের বোলিংই তাকে বিশেষ জায়গা দিয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে শোয়েব সবসময়ই পাকিস্তানী বোর্ডের নিশানায় থেকেছে। শোয়েবের বিশ্বস্ততার উপর পিসিবি সবসময়ই প্রশ্ন তুলেছে। পিসিবির সঙ্গে শোয়েবের বহু বছর পর্যন্ত ঝামেলা থেকেছে, অর্থাৎ পাকিস্তান বোর্ড কখনো শোয়েবকে সমর্থন করেনি আর তার সঙ্গে শত্রুর মতোই ব্যবহার করেছে।
কেভিন পিটারসন
ইংল্যাণ্ডকে ক্রিকেটের জনক মনে করা হয়। এই দলের ক্তহা বলে এখানে বেশকিছু মহান খেলোয়াড় প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ইংল্যান্ডের মহান খেলোয়াড়দের মধ্যে ব্যাটসম্যানদের মধ্যে নজর দেওয়া হলে কেভিন পিটারসন্নের নামকে কখনো উপেক্ষা করা যাবে না। ইংল্যাণ্ডের প্রাক্তন ব্যাটসম্যান আর অধিনায়ক পিটারসনের দুর্দান্ত কর্তৃত্ব থেকেছে। পিটারসন নিজের খেলায় প্রত্যেক ফর্ম্যাটে নাম করেছেন। এই ব্যাটসম্যান ইংল্যাণ্ডের জন্য অনেক বড়ো যোগদান দিয়েছেন, কিন্তু তিনি কখনো বোর্ডের সমর্থন পাননি। কেভিন পিটারসনের কেরিয়ারে ইংল্যাণ্ড বোর্ড বারবার তাকে ভুল প্রমানিত করেছেন। ২০১০ এর পর কেভিন পিটারসনের সোশ্যাল মিডিয়া্র পোষ্ট তাকে ইসিবির শত্রু করে তুলেছে। ইসিবি এরপর তাকে আর সমর্থন করেনি আর ২০১৩র অ্যাসেজের পর তাকে দল থেকে বাদ দিয়ে দেয়।
ডোয়েন ব্র্যাভো
ওয়েস্টইন্ডিজ ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় আর তাদের বোর্ডের মধ্যে কখনো ভালো সম্পর্ক থাকেনি। ওয়েস্টইন্ডিজের খেলোয়াড়রা শুরু থেকেই নিজেদের বোর্ডের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার তো বড়ো খেলোয়াড়দের সঙ্গেও বোর্ড শত্রুর মতো ব্যবহার করেছে। এই খেলোয়ড়দের কথা বলা হলে এদের মধ্যে প্রধান নাম তারকা অলরাউন্ডার ডোয়েন ব্র্যাভোড় নাম আসে। ব্র্যাভো ওয়েস্টইন্ডিজের হয়ে তিন ফর্ম্যাটেই খেলেছেন। তিনি টি-২০ ক্রিকেটের অনেক বড়ো খেলোয়াড়। ব্র্যাভোকে বিশ্বজুড়ে টি-২০ লীগ খেলতে দেখা যায়, কিন্তু যখন ওয়েস্টইন্ডিজের ব্যাপার আসে তো ব্র্যাভোকে বেশ কয়েকয়াব্র উপেক্ষা করা হয়ে থাকে। ব্র্যাভো নিজের পুরো কেরিয়ারে কখনো বোর্ডের সমর্থন পাননি আর এই কারণে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে রয়েছেন।
উসমান খোয়াজা
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক রিকি পন্টিং একজন ভীষণ মহান ব্যাটসম্যান থেকেছেন। রিকি পন্টিংয়ের যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া দলে উসমান খোয়াজাকে তাঁর সঠিক উত্তরাধিকারী মনে করা হত। উসমান খোয়াজা নিজের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রদর্শনে যথেষ্ট প্রভাবিত করেছেন আর দলের হয়ে দাবি পেশ করেছেন। উসমান খোয়াজাওকে নিজের কেরিয়ারে কখনো নিয়মিত সুযোগ দেওয়া হয়নি। খোয়াজার কাছে এখনো যথেষ্ট ক্রিকেট বাকি রয়েছে। খোয়াজা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রায় ৯ বছর ক্রিকেট খেলেছেন, কিন্তু তাকে এখনো পর্যন্ত মাত্র ৯৫টি ম্যাচ খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া উসমান খোয়াজাকে সবসময়ই বলির বকরা করেছে। তিনি কখনো বোর্ডের সমর্থন পান না।
আম্বাতি রায়ডু
ভারতীয় ক্রিকেট দল বেশকিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড় পেয়েছে। ভারতের অনুর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট থেকে প্রত্যেকবার এমন কিছু তারকা পাওয়া যায় যাদের আলাদাই যোগ্যতা দেখতে পাওয়া যায়। এইভাবে অনুর্ধ্ব ১৯ দলের অধিনায়ক থাকা আম্বাতি রায়ডুর মধ্যেও সেই বিশেষ প্রতিভা দেখা গিয়েছিল। আম্বাতি রায়ডু নিয়মিত ভারত এ আর ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রভাব ফেলেছেন। রায়ডুকে বড়ো ব্যাটসম্যান মনে করা হত। তবে ২০১৩র পর তাকে ভারতীয় দলে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কখনো ইনি দলে ধারাবাহিকভাবে থাকতে পারেননি। রায়ডু আইপিএলে নিয়মিত ভালো প্রদর্শন করে ২০১৮য় ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তন করেন। তাঁর ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত দেখা যাচ্ছিল কিন্তু তারপর থেকে বোর্ড তাকে উপেক্ষা করে বিশ্বকাপের দলে জায়গা দেয়নি। এরপর রায়ডু নিরাশ হয়ে অবসর নিয়ে ফেলেন। তবে তিনি নিজের অবসর ভেঙে এখন ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।