স্বপ্নভঙ্গ ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের! পুরুষদের মতন জেতা হলো না টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। শারজাহতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পরাস্ত হওয়ার পর কার্যত বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়ে গিয়েছে ভারতের (Team India)। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু হয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার, প্রথম ম্যাচেই পরাস্ত হয়ে টনক নরেছিলো হারমান-স্মৃতিদের। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যথাক্রমে পরস্পর দুই ম্যাচ জিতে ভারতীয় দলের আশা জেগেছিল। কিন্তু, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর চার ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে খাতায়-কলমে এখনও টিকে রয়েছে হারমানপ্রীত-স্মৃতি মান্ধানারা। তবে সোমবার নিউজিল্যান্ড পাকিস্তানকে হারিয়ে দিলে বিদায় নিশ্চিত টিম ইন্ডিয়ার। যদি পাকিস্তান কোনো মতে টিম ইন্ডিয়াকে হারাতে সক্ষম হয় তো নিউজিল্যান্ডের বদলে টিম ইন্ডিয়া পৌঁছাবে সেমিফাইনালে।
বিশ্বকাপ থেকে বিদায় টিম ইন্ডিয়ার
আবার পাকিস্তান যদি খুব বড় ব্যবধানে জেতে তাহলে ভারত এবং নিউজিল্যান্ড দু’জনকে টপকে সেমিফাইনালে পৌঁছে যাবে পাকিস্তান। গ্রুপ এ’ তে অস্ট্রেলিয়া চার ম্যাচে চার জয় নিয়ে আট পয়েন্ট সহ সেমিফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে। কালকের ম্যাচের কথা বলতে গেলে, টস জিতে অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। শারজাহতে দ্বিতীয় ব্যাটিং করা কতটা কষ্টের তা বুঝতে পারলো টিম ইন্ডিয়া। টসের পরেই প্রথম ধাক্কা খায় ভারত। ওয়ার্মআপের সময়ে গোড়ালিতে চোট পান স্পিনার আশা শোভনা, এরপর অস্ট্রেলিয়া দলের অনুমতি নিয়েই একাদশে বদল ঘটে টিম ইন্ডিয়ার। শোভানার জায়গায় রাধা যাদবকে প্রথম একাদশে সুযোগ দেয় ভারত।
ভারত বেশ ভালো শুরু করে, প্রথম দুই ওভারে অজিদের রান ছিল মাত্র ৯। তৃতীয় ওভারেই পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নেন রেণুকা সিং। ওপেনার বেথ মুনি (২) এবং জর্জিয়া ওয়ারহ্যাম (০) এলবিডব্লিউ আউট হন। ওপেনিং করতে আসা গ্রেস হ্যারিস এবং এলিসা হিলির পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক তাহলিয়া ম্যাকগ্রার মধ্যে ৬২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে।
১২তম ওভারে রাধা ফেরান ম্যাকগ্রাকে, তার সংগ্রহ ছিল ৩২। ১৪তম ওভারে প্যাভিলিয়নে ফেরেন হ্যারিসও। ৪০ বানিয়ে আউট হন তিনি। জলদি উইকেট হারিয়ে ফেলেন অ্যাশলে গার্ডনারও। ৬ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। ১০১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে অজি বাহিনী। তবে অস্ট্রেলিয়ার রানের গতি বাড়াতে সাহায্য করেন অলরাউন্ডার এলিস পেরি। ২৩ বলে ৩২ রান বানান পেরি। শেষ বলে ছয় মেরে অস্ট্রেলিয়ার রান দেড়শো পার করেন লিচফিল্ড।
হারমানের লড়াই হলো ব্যার্থ
রান রেট বাড়ানোর লক্ষ্যেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন শেফালী ভার্মা। প্রথম তিন ওভারে ওঠে ২৫ রান। মারমুখী ছিলেন শেফালি বর্মা। তবে চতুর্থ ওভারে খারাপ শট খেলে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় শেফালিকে। ১৩ বলে ২০ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ফ্লপ স্মৃতি মন্ধনা, ১২ বলে ৬ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। সপ্তম ওভারে তোপ অর্ডারের ভরসযোগ্য খেলোয়াড় জেমাইমা রদ্রিগেসও আউট হয়ে যান। ১৬ রান বানিয়েই হারান নিজের উইকেট। ক্যাপ্টেন হারমানপ্রীত কৌর এবং দীপ্তি শর্মার মধ্যে ৫৫ বলে ৬৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে।
১৬তম ওভারে রানের গতি বাড়াতে সোফি মোলিনিউকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন দীপ্তি। ২৯ রান বানিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন দীপ্তি। এমনকি পাওয়ার হিতার রিচা ঘোষ ১ রান বানিয়ে রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। দীপ্তি আউট হতে সব দায়িত্ব ওঠে ক্যাপ্টেন হারমানের কাঁধে। শেষ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ১৪ রানের। পুরো ওভার জুড়ে অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড মাত্র চার রান দেন এবং দু’টি উইকেটও তুলে নেন তিনি। ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত অপরাজিত থেকে যান ৫৪ রানে। তার লড়াই হলো ব্যার্থ! ৯ রানের হারে ভারত (Team India)। ম্যাচে হারের ফলে বিশ্বকাপ কার্যত বিদায় হরমনপ্রীত কৌরদের। স্রেফ অঙ্কের বিচারে টিকে রয়েছেন।