ভারতীয় ক্রিকেট দলের পোস্টার বয় বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। গতকালই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ষোলো বছর সম্পূর্ণ করলেন তিনি। ব্যাট হাতে নিজেকে শচীন তেন্ডুলকরের উত্তরসূরি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই ৮০টি আন্তর্জাতিক শতরান, ২৫০০০-এর বেশী আন্তর্জাতিক রান রয়েছে কোহলির ঝুলিতে। ওডিআই বিশ্বকাপ, টি-২০ বিশ্বকাপ জিতেছেন, ট্রফি ক্যাবিনেটে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের মেডেল’ও। নিঃসন্দেহে ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম তারকাদের তালিকায় উপরের দিকে নাম থাকবে বিরাটের। ২০০৮ সালে অধিনায়ক হিসেবে অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ জেতার পর কেরিয়ার গ্রাফ ক্রমেই উপরের দিকে গিয়েছে বিরাটের। তাঁর সেই বিশ্বজয়ী স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন তরুবর কোহলিও (Taruwar Kohli)। সমনামীর মত আন্তর্জাতিক আঙিনায় ঝড় তুলতে না পারলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে দাপট দেখিয়েছেন তিনি।
Read More: KKR-কে টেক্কা দিতে মোক্ষম চাল GT-LSG’র, এই বিশ্বজয়ী তারকাদের করছে দলে সামিল !!
ঝাড়খণ্ডের বিপক্ষে করেন প্রথম ত্রিশতক-
২০১৩ সালের রঞ্জি ট্রফিতে পাঞ্জাবের জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন তরুবর কোহলি (Taruwar Kohli)। জামশেদপুরের মাঠে ঝাড়খণ্ড’কে ছিন্নভিন্ন করেছিলো তাঁর ব্যাট। কোয়ার্টার ফাইনালে টসে জিতে প্রথম ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো ঝাড়খণ্ড। তাদের ইনিংস থামে ৪০১ রানে। জোড়া শতরান করেন রামিজ নিমাত ও ঈশাঙ্ক জাগ্গি। জবাবে ব্যাট করতে নামা পাঞ্জাব প্রথম উইকেট হারায় ৭৫ রানের মাথায়। আউট হন রবি ইন্দর সিং। তিন নম্বরে নামেন তরুবর।
ওপেনার জীবনজ্যোৎ সিং-এর সাথে জুটি বেঁধে ইস্পাতনগরীতে ঝড় তোলেন তিনি। ব্যক্তিগত ১৩১ রানের মাথায় জীবনজ্যোৎ ফিরলেও থামানো যায় নি তরুবর’কে (Taruwar Kohli)। ৮২৩ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ৬০৯ বলে তিনি করেন অপরাজিত ৩০০ রান। ইনিংস সাজিয়েছিলেন ৩৪টি চার ও ২টি ছক্কা দিয়ে। মনদীপ সিং ৯৬ ও উদয় কৌল অপরাজিত ১১৩ করায় স্কোরবোর্ডে ৬৯৯ রান তোলে পাঞ্জাব। প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকায় সেমিফাইনালে যায় তারাই।
অরুণাচলের বিরুদ্ধে আসে দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরি-
পাঞ্জাব ছেড়ে বর্তমানে মিজোরামের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেন তরুবর কোহলি (Taruwar Kohli)। ২০১৯ সালে মিজোরামের জার্সিতেই করেছিলেন কেরিয়ারের দ্বিতীয় ট্রিপল সেঞ্চুরিটি। প্লেট গ্রুপের খেলায় টসে জিতে প্রথম ব্যাটিং বেছে নিয়েছিলো অরুণাচল। প্রথম ইনিংসে ৩৪৩ রান করে তারা। রাহুল দালাল করেন ১৭৮। জবাবে ব্যাট করতে নামা মিজোরামের প্রথম উইকেট পড়েছিলো দ্রুত। কিন্তু এরপর ঢাল হয়ে দাঁড়ান কোহলি, সঙ্গী পান লালরুহআইজালা, কেবি পবনদের। লালরুহআইজালা করেন ১২৪, পবন আউট হন ১০২ রান করে। ফের একবার তরুবরকে (Taruwar Kohli) সাজঘরে ফেরাতে বেগ পেতে হয় প্রতিপক্ষ বোলারদের। লিচা তেহি, তেচি নেরি’দের বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে দেখা যায় তাঁকে। ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে থেমেছিলেন ৩০০-তে। অরুণাচলের বিরুদ্ধে অপরাজিত থাকেন ৩০৭ রানে। মারেন ২৬টি চার।
তরুবর কোহলির কেরিয়ার পরিসংখ্যান-
জলন্ধরে জন্ম তরুবর কোহলির (Taruwar Kohli)। ২০০৮ সালে আইপিএল (IPL) দিয়ে বড় মঞ্চের সাথে পরিচয় হয় তাঁর। ঐ বছরই পাঞ্জাবের জার্সিতে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিষেক হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। ২০০৯ সালে খেলেন লিস্ট-এ ক্রিকেট। দেড় দশক বিস্তৃত ক্রিকেট কেরিয়ারে কোহলি খেলেছেন ৫৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। ৫৩.৮০ গড়ে তাঁর সংগ্রহ ৪৫৭৩ রান। ১৪টি শতরান ও ১৮টি অর্ধশতক রয়েছে তাঁর। বিজয় মার্চেন্ট, বীরেন্দ্র শেহবাগ, রবীন্দ্র জাদেজাদের মত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একাধিক ত্রিশতক করার বিরল রেকর্ড রয়েছে তাঁর। লিস্ট-এ ক্রিকেটে তিনি মাঠে নেমেছেন ৭২টি ম্যাচে। ৬০ ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ১৯১৩। গড় প্রায় ৪০। শতরানের সংখ্যা ৩, অর্ধশতক ১১। খেলেছেন ৫৭টি ম্যাচ টি-২০। ২৪.৫৮ গড়ে তাঁর রান সংখ্যা ১০৫৭। আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালস, পাঞ্জাব কিংসের মত দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।