T20 World Cup: কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপে (T20 World Cup) জমে উঠেছে গ্রুপ-ডি’র লড়াই। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের মাঠে এক খড়কুটোর মত উড়ে গিয়েছিলো শ্রীলঙ্কা। আজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজদের কাছে সুযোগ ছিলো ঘুরে দাঁড়ানোর। অন্যদিকে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিয়ে সুপার এইটের দৌড়ে এক পা এগোনোর লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিলো বাংলাদেশ। দুই উপমহাদেশীয় প্রতিপক্ষের লড়াই গত কয়েক বছরে ক্রিকেটদুনিয়ার এক অন্যতম উপভোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়ে উঠেছে। আজও ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজারখানেক দর্শককে নিরাশ করলেন না দুই দলের ক্রিকেটাররা। ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই দেখা গেলো তীব্র লড়াই। ৩৯ ওভারের দ্বৈরথের পর ক্রিকেটের ‘নাগিন ক্লাসিকো’তে শেষ হাসি অবশ্য আজ বাংলাদেশের।
Read More: ভারত-পাক ম্যাচে তারকার ছড়াছড়ি, কেমন হতে পারে যৌথ একাদশ? দেখে নিন !!
বল হাতে নায়ক রিশাদ-মুস্তাফিজুর-
প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতেই সমস্যায় পড়েছিলো শ্রীলঙ্কা। ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই তাস্কিন আহমেদের (Taskin Ahmed) শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন কুশল মেন্ডিস (Kusal Mendis)। ৮ বলে ১০ রানের বেশী এগোতে পারেন নি তিনি। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজুর রহমান (Mustafizur Rahman)। ভারতের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে খেলেন নি তিনি। আজ একাদশে ফিরেই বাজিমাত করলেন তারকা পেসার। ৫ বলে মাত্র ৪ রান করে উইকেট হারান কামিন্দু মেন্ডিস (Kamindu Mendis)। এরপর ধনঞ্জয় ডি সিল্ভার সাথে জুটি গড়ে লঙ্কান ইনিংসকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়াস করেছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা (Pathum Nissanka)। কিন্তু নবম ওভারের পঞ্চম বলে থামতে হয় তাঁকেও। ২৬ বলে ৪৭ করেন নিশাঙ্কা। আজ শ্রীলঙ্কার সফলতম ব্যাটার তিনিই। তাঁকেও আউট করেন মুস্তাফিজুর।
বল হাতে ঘাতক হতে ওঠেন তরুণ রিশাদ হোসেন (Rishad Hossain)। পর ডান হাতি লেগস্পিনার ফিরিয়ে দেন চরিথ আশালঙ্কা ও লঙ্কান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে (Wanindu Hasaranga)। আশালঙ্কা ২১ বলে ১৯ ও হাসারাঙ্গা করেন ১ বলে ০। বেশীদূর এগোতে পারেন নি ধনঞ্জয় ডি সিলভাও। ২৬ বলে ২১ রান করে রিশাদের তৃতীয় শিকার হন তিনি। আজ কেবল ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে নজর কাড়লেন বছর ২১-এর তরুণ। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এসে দাসুন শানাকা’কে ৩ রানের মাথায় ফেরান তাস্কিন আহমেদ। আজ ৪ ওভারে ২৫ রানের বিনিময়ে নিলেন ২ উইকেট নিলেন তিনি। মহেশ তীক্ষণাকে আউট করে নামের পাশে তৃতীয় উইকেট যোগ করে নেন মুস্তাফিজুরও। লড়ছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউজ (Angelo Mathews)। ১৬ করে তানজিম হাসান সাকিবের বলে আউট হন তিনিও। শ্রীলঙ্কা থামে ১২৪ রানে।
সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতলো বাংলাদেশ-
ডালাসের এই গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামেই কানাডার বিরুদ্ধে বড় রান তাড়া করে জিতেছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখানেই গতকাল পাকিস্তানকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে তারা। পিচ ব্যাটিং সহায়কই মনে হয়েছিলো। কিন্তু আজ দুই দলকেই ব্যাট হাতে বেশ জড়সড় মনে হলো বাইশ গজে। ১২৫ রানের লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিলো বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতেই জোড়া ধাক্কা খায় তারা। ভারতের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচের পর গ্রুপ পর্বের প্রথম খেলাতেও শূন্য করলেন সৌম্য সরকার (Soumya Sarkar)। বাংলাদেশী ক্রিকেটমহলে তাঁর ‘শূন্য’ সরকার ডাকনামটি সম্ভবত আরও জনপ্রিয়তা পাবে আজকের পর। তাঁকে আউট করেন ধনঞ্জয় ডি সিলভা। পরের ওভারেই ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। ৬ বলে ৩ রান করেন তিনি। ব্যর্থ অধিনায়ক শান্ত’ও (Najmul Hossain Shanto)। তুষারা’র দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে করেন ১৩ বলে ৭ রান।
২৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিলো বাংলাদেশ। খাদের কিনার থেকে তাদের টেনে তোলেন লিটন দাস ও তৌহিদ হৃদয়। ফর্ম সমস্যায় জর্জরিত লিটন (Litton Das) আজ এক প্রান্ত আগলে ব্যাটিং করলেন। অন্যদিকে ঝড় তোলেন হৃদয় (Towhid Hridoy)। তাঁর ২০ বলে ৪০ রানের ইনিংসই জয় ও হারের মাঝে ব্যবধান লিখে দিলো। লিটন করেন ৩৮ বলে ৩৬। হাসারাঙ্গার বলে দুই ‘সেট’ ব্যাটার ফেরার পর ধস নামে বাংলাদেশী ব্যাটিং-এ। শাকিব, রিশাদ ও তাস্কিন আহমেদ ফেরেন যথাক্রমে ৮, ১ ও ০ রান করে। ৮ উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশ ফের দাঁড়িয়েছিলো হারের সামনে। কিন্তু প্রতিরোধের পাহাড় হয়ে দাঁড়ান মাহমুদুল্লাহ (Mahmudullah Riyad)। তাঁর অপরাজিত ১৬ রানে ভর করেন ১ ওভার বাকি থাকতে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টাইগার্সরা।