নানা আলোচনা শেষে অবশেষে আবার প্রায় এক বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরছেন সুরেশ রায়না, এমন খবর বেশ আলোড়ন তুলেছে। দীর্ঘ দিন জাতীয় দলে না থাকায় প্রশ্ন উঠেছিল ভারতীয় দলের জার্সি পিঠে চাপিয়ে ওয়ানডেতে আর কি দাপট দেখাতে পারবেন সুরেশ রায়না? মহেন্দ্র সিং ধোনির প্রিয় রায়না কি ভারতীয় দলে ফিরে আসতে পারবেন? এসব প্রশ্নই যখন ঘুরপাক খাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেটের অলিন্দে তখন ই খবর বেড়িয়েছে শ্রীলঙ্কার ওয়ানডে দলে ফিরতে পারেন সুরেশ রায়না। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ভাল খেলার পরও ভারতের জাতীয় দলে জায়গা হয়নি রায়নার। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডও মিডল অর্ডারে তরুণদের সুযোগ দিয়েছে। আইপিএলে যারা ভালো খেলেছেন, তাদের সুযোগ দেয়া হয়েছে সিনিয়র দলে। আর যারা সুযোগ পাচ্ছেন, তারাও নিজেদের প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা চালায়। কিন্তু নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে এবার শ্রীলঙ্কার সাথে সুযোগ পাওয়ার যোগ্য দাবীদার ২০১০-১৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ১২টি একদিনের সীমিত ওভারের খেলায় ভারতকে নেতৃত্ব দেওয়া সুরেশ রায়না।
নির্ভর যোগ্য সূত্রে জানা গিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্টের মতে, “নিচের দিকে রায়না দ্রুত গতিতে রান তুলতে পারে, সামনে যে একের পর এক সীমিত ওভারের খেলা হবে তাতে রায়না খেলানো প্রয়োজন হবে। আর এছাড়া ২০১৯ এর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপেও সে ভাল ভূমিকা রাখতে পারে।”
২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলার পর আর জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামা হয় নি সুরেশ রায়নার। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর ই অষ্ট্রেলিয়ার সাথে বাদ পড়েন। এরপর একবার মাঝে নিউজল্যান্ডের বিরুদ্ধে সুযোগ পেলেও জ্বরের কারনে না খেলে ই বাদ পড়তে হয়। এরপর আর নির্বাচকরা বিবেচনায় আনে নি। কিন্তু এখন একাধিক ওয়ানডে সিরিজে নির্বাচকরা অনেক খেলোয়ারকে সুযোগ দিবে তার ভিতর রায়নাও সুযোগ পাবে। বাঙ্গালুরের জাতীয় ক্রিকেট একাডেমী হতে এর মাঝে তাকে এবং ভারতের সাবেক অধিনায়ক ধোনীকে ফিটনেট টেস্টে উর্ত্তীন ঘোষনা করা হয়েছে। এ ফিটনেস টেস্টের মধ্যে দিয়ে নির্বাচকরা নিশ্চিত হতে পারবেন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার জন্য তিনি শারীরিক ভাবে প্রস্তুত কিনা। যেহেতু গত মার্চে করার বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে তিনি নেই, তাই এবার যদি তিনি সুযোগ পান তবে তা হবে তার জন্য আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার ফিরে পাওয়ার সুযোগ।
রায়না কে কেন্দ্রীয়য় চুক্তি হতে বাদ দেওয়ার অন্যতম কারন ছিল ঘরোয়া ক্রিকেটেও মনোযোগী না হওয়া। উত্তরপ্রদেশের হয়ে মাত্র তিনটি রঞ্জি ম্যাচই খেলেছেন এই আসরে৷ মুস্তাক আলি ও বিজয় হাজারেতে পাওয়া যায়নি তাকে৷ অনেকেই তখন বলছিলেন রায়না ক্রিকেট ছেড়ে রাজনীতিতেই ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে চলেছেন৷ অন্যদিকে তার উত্তরপ্রদেশ দলের কোচের অভিযোগ, রায়নার ক্রিকেটে এখন আর মন নেই৷ ফ্যামিলি ম্যান হওয়ার পর থেকেই রায়নার ক্রিকেট থেকে ভালোবাসা কমে গিয়েছে তাঁর৷ তবে পরে বিষয় নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রায়নার কথাটা শুনলে দৃষ্টিভঙ্গিটা বদলে যাবে সবার৷ রায়না ও তার ছোট্ট দশ মাসের মেয়ে গ্রেসিয়া দু’জনেই বেশ অসুস্থ ছিল গত কয়েক মাস৷
রায়না বলেন, “লোকের বলার জন্য কিছু একটা চাই৷ তারা এটা-সেটা বলবেই৷আমার মেয়েকে আমি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম৷ বাড়ির কাজ করছিলাম৷ এটার জন্য আমার সমালোচনা করা হচ্ছে৷ বাইরের লোক এসে তো এই কাজগুলো করে দেবে না। তাই না।” এখন সব কিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল ১৩ আগস্ট নির্বাচকরা যে দল ঘোষনা করবেন তাতে থাকতে পারে রায়নার নাম।