২০০৮ সালে পথচলা শুরু করেছিলো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (IPL)। বিসিসিআই আয়োজিত ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ টুর্নামেন্ট ২০২৫-এ পা দিয়েছে আঠারোতে। অর্থাৎ আক্ষরিক অর্থেই ‘সাবালক’ হয়ে উঠেছে সে। ধুন্ধুমার ক্রিকেটের সাথে বিনোদনের যে ককটেল বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছিলো ভারত, তার আবেদন আজও একই রকম আকাশছোঁয়া। দীর্ঘ যাত্রাপথে বহু শৃঙ্গ জয় করেছে আইপিএল (IPL)। তরুণ প্রতিভাদের আত্মপ্রকাশের দুর্দান্ত এক মঞ্চ উপহার দিয়েছে এই টুর্নামেন্ট। বাইশ গজের দুনিয়ায় অর্থের বিনিয়োগ বেড়েছে বহু গুণ। উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের মত প্রতিযোগিতার সাথে এখন পাল্লা দিচ্ছে ভারতের টি-২০ লীগ। গত আঠারো বছরে অজস্র সোনালী মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছে আইপিএল (IPL)। কিছু বিতর্কিত অধ্যায়’ও যে তাকে পেরোতে হয় নি তা নয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১৩’র স্পট ফিক্সিং অধ্যায়।
Read More: IPL 2025 SRH vs RR Toss Report in Bengali: টস জিতলেন রিয়ান, সঞ্জুকে সরিয়ে রেখেই হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে নামছে রাজস্থান !!
স্পট ফিক্সিং-এ জড়িয়েছিলেন তিন তারকা-

‘স্পট ফিক্সিং’ শব্দবন্ধের সাথে ক্রিকেটদুনিয়ার প্রথম পরিচয় ২০১০ সালে মহম্মদ আমির, মহম্মদ আসিফ ও সলমন বাটের সৌজন্যে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন অর্থের বিনিময়ে নো-বল করার অভিযোগ উঠেছিলো তাঁদের বিরুদ্ধে। ২০১৩ সালে আইপিএলকেও (IPL) কাঁপিয়ে দিয়েছিলো স্পট ফিক্সিং বিতর্ক। রাজস্থান রয়্যালসের তিন ক্রিকেটার শান্তাকুমারণ শ্রীশন্থ (S Sreesanth), অজিত চাণ্ডিলা ও অঙ্কিত চৌহানের বিরুদ্ধে গড়াপেটার উদ্দেশ্যে বুকিদের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই সময় দিল্লী পুলিশের তৎপরতায় সামনে এসেছিলো গোটা বিষয়টি। গ্রেপ্তারও হন তাঁরা। ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিলো বিসিসিআই। তিন খেলোয়াড়কেই আজীবন নির্বাসিত করার সিদ্ধান্ত নেয় দেশের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয় সুপ্রিম কোর্ট’ও। দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের হস্তক্ষেপে বদলে গিয়েছিলো বিসিসিআই-এর সংবিধান।
ভারতীয় দলের হয়ে ২০০৭-এর টি-২০ বিশ্বকাপ জিতেছেন শান্তাকুমারণ শ্রীশন্থ, জিতেছিলেন ২০১১’র ওয়ান ডে বিশ্বকাপ’ও। স্পট ফিক্সিং-এর ঘটনায় নাম জড়ানো তিন ক্রিকেটারের মধ্যে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে বড় নাম। নির্বাসনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবী তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। অস্বীকার করেন গড়াপেটার অভিযোগ। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ২০১৫ সালে খানিক স্বস্তি পেয়েছিলেন শ্রীশন্থ (S Sreesanth)। দিল্লীর এক আদালত তাঁকে মুক্তি দেয় ফিক্সিং-এর অভিযোগ থেকে। এরপরেও অবশ্য নির্বাসন প্রত্যাহার করে নি ভারতীয় বোর্ড। শেষমেশ ২০১৭তে কেরল হাইকোর্ট শ্রীশন্থকে নির্দোষ ঘোষণা করায় উঠে যায় নির্বাসন। এরপর কেরল রাজ্য দলের হয়ে রঞ্জিতে কয়েকটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ডান হাতি পেসার। কিন্তু জাতীয় দলে আর ডাক আসে নি। অবসরের পর কয়েকটি টি-২০, টি-১০ লীগ’ও খেলেছেন তিনি।
শাস্তি কমেছে অঙ্কিত-চাণ্ডিলারও-

শ্রীশন্থ নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ার পর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অজিত চাণ্ডিলা (Ajit Chandila) ও অঙ্কিত চৌহান’ও। প্রথমে মুক্তি পান অঙ্কিত (Ankeet Chavan)। অবসর নেওয়ার আগে মুম্বইতে ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটে খেলার ছাড়পত্র’ও পেয়েছিলেন তিনি। ২০২৩-এ স্বস্তির খবর পেয়েছিলেন চাণ্ডিলাও। বিসিসিআই-এর ন্যায়পাল বা ওম্বুডসম্যান বিনীত সরণ নিজের রায়ে জানান যে দিল্লী পুলিশের স্পেশ্যাল সেলের তদন্তের ভিত্তিতে গত ০৯/০৫/২০১৩ তারিখে নিবন্ধিত কেসের ভিত্তিতে বিসিসিআই ১৭/০/২০১৩ তারিখে আবেদনকারী (অজিত চান্ডিলা)’কে সকলপ্রকার ক্রিকেটীয় কার্য্যকলাপ থেকে নির্বাসিত করে। ১৮/০১/২০১৬ তারিখে বিসিসিআই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি কর্তৃক চাপানো আজীবন নির্বাসনের সাজা কমিয়ে ৭ বছরের করা হলো। ২০২৩-এর জানুয়ারিতে মুক্তি পান তিনি। যদিও ৪০-এর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো চাণ্ডিলা আর ক্রিকেটের আঙিনায় কামব্যাক ঘটাতে পারেন নি।