বিসিসিআই-তে জয় শাহ (Jay Shah) যুগের অবসান। ২০১৯ সালে সচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। প্রথম দফায় মেয়াদ ফুরিয়েছিলো ২০২২-এ। প্রথা ভেঙে দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ২০২৫ অবধি চেয়ারে থাকার কথা ছিলো তাঁর। কিন্তু তার এক বছর আগে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালেন তিনি। তৃতীয় ভারতীয় হিসেবে আইসিসি’র চেয়ারম্যান হলেন তিনি। পঞ্চম ভারতীয় হিসেবে বসলেন বিশ্ব ক্রিকেটের শীর্ষ পদে। নিউজিল্যান্ডের গ্রেগ বার্কলে (Greg Barclay) দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করার পর মনোনয়ন জমা করেছিলেন জয় শাহ (Jay Shah)। ভোটদানে অংশগ্রহণকারী ১৬ দেশের মধ্যে ১৫টিকে পাশে পান ভারতীয় কর্মকর্তা। মতদান থেকে বিরত থাকে পাকিস্তান। সর্বসম্মতিক্রমেই পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে গৃহীত হয়েছিলো তাঁর নাম। অগস্টের শেষে নির্বাচিত হয়েছিলেন আর আজ অর্থাৎ ডিসেম্বরের ১ তারিখ দায়িত্ব নিলেন তিনি।
Read More: CT 2025: বিসিসিআই-এর মোক্ষম চালে ১২৮০ কোটি জলে পাকিস্তানের, পথে বসছে বোর্ড !!
জয় শাহের উত্তরসূরি হচ্ছেন স্নেহাশীষ ?
এই মুহূর্তে শূন্য বিসিসিআই সচিবের আসনটি। জয় শাহের (Jay Shah) উত্তরসূরি হিসেবে কে বসবেন পদে? চলছে জল্পনা। কিছু দিন আগে অবধি শোনা যাচ্ছিলো যে দিল্লী ক্রিকেট সংস্থার রোহন জেটলি (Rohan Jaitley) রয়েছেন বিসিসিআই-এর শর্টলিস্টে। কিন্তু ঘোষণা করা হয় নি তাঁর নাম। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর যে দৌড়ে রয়েছেন সিএবি’র (ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল) বর্তমান প্রেসিডেন্ট স্নেহাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়’ও (Snehasish Ganguly)। তাঁর ছোটো ভাই সৌরভ এর আগে ২০১৯ থেকে ২০২২ অবধি বিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। পরিবারের দ্বিতীয় সদস্য হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার অন্দরে পা রাখতে পারেন স্নেহাশীষ (Snehasish Ganguly)। ন্যাশানাল হেরাল্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, “যদি সুযোগ আসে জাতীয় স্তরে কাজ করার তাহলে আমার আপত্তি নেই। দীর্ঘ সময় খেলেছি। আমি জানি কি করতে হয়।”
সিএবি’র প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুই বছর কাটিয়ে ফেলেছেন ৫৯ বর্ষীয় স্নেহাশীষ (Snehasish Ganguly)। রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার অধীনে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ টুর্নামেন্ট ‘বেঙ্গল প্রো টি-২০ লীগ’ চালু করতে পারা তাঁর সময়কালের অন্যতম অর্জন বলে মনে করেন তিনি। সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট জানিয়েছেন, “কয়েক বছর আগেই সিএবি বুঝতে পেরেছিলো নিজস্ব ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ চালু করার ব্যাপারে। অন্য কোনো রাজ্যকে দেখে প্রভাবিত হই নি। অন্যদের সাথে আমাদের তফাৎ বলতে এই যে অন্য সংস্থাগুলি সেখানে দলগুলিকে সহায়তা করছে আর আমরা সফলভাবে নিলামের মাধ্যমে দলগুলির মালিকানা নির্ধারণ করতে পেরেছি। সাথে মেয়েদের সংস্করণ’ও একইসাথে চালু করতে পেরেছি।” মহিলাদের ক্রিকেট নিয়ে উচ্ছ্বসিত স্নেহাশীষ। বলেন, “রাজ্যে মেয়েদের ক্রিকেটের স্তর অনেক উন্নত হয়েছে। প্রতিভাবান সিনিয়র দলের পাশাপাশি আমাদের অনুর্দ্ধ-১৯ দলও দুর্দান্ত।”
ইডেন নিয়ে আশাবাদী সৌরভের দাদা-
বিসিসিআই-তে জয় শাহের (Jay Shah) শূন্য আসনে তিনি বসবেন কিনা তা সময় বলবে। তবে সিএবি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইডেন গার্ডেন্সকে দেশের সেরা ভেন্যু হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি যে বদ্ধপরিকর তা বুঝিয়েছেন স্নেহাশীষ (Snehasish Ganguly)। বলেন, “গত ১৫ বছরে আপনি ধরেই নিতে পারেন না (যে ইডেন ম্যাচ পাবেই)। ভেন্যু হিসেবে বিসিসিআই-এর হাতে প্রচুর বিকল্প রয়েছে। (২০২৩ বিশ্বকাপের সময়) আমাদের জয় শাহের সাথে দীর্ঘক্ষণ লড়তে হয়েছিলো পাঁচটা জমজমাট ম্যাচের জন্য-যার মধ্যে সেমিফাইনাল, ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তান ও ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকাও ছিলো।” চ্যালেঞ্জটা কতখানি কঠিন ছিলো তাও ন্যাশনাল হেরাল্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি। “ইডেনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। তা সত্ত্বেও দর্শকদের ম্যাচ দেখার অভিজ্ঞতা সর্বোত্তম করে তোলার জন্য কিছু কিছু রদবদল জরুরী ছিলো।”
ক্রিকেটের নন্দনকাননের দুর্বলতাগুলি খুঁজে বের করে তা মেরামতের প্রয়াস ছিলো সিএবি’র, জানিয়েছেন রাজ্য সংস্থার প্রধান। “ক্লাব হাউজ, মিডিয়া সেন্টার, গ্যালারির নীচের শৌচালয়গুলি সংস্কারের পর আমরা আমরা বিসিসিআই প্রতিনিধিদলকে ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলাম আইপিএল ২০২৩-এর সময়।” ২০২৬-এর টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup 2026) ফাইনালের সম্ভাব্য ভেন্যু হিসেবে দেখা হচ্ছে ইডেনকে। শীঘ্রই ফের শুরু হবে সংস্কার। সেই কারণে জল্পনা ছিলো যে ২০২৫-এর আইপিএলে (IPL) ইডেনে খেলতে পারবে না নাইট রাইডার্স। আগ্রহ প্রকাশ করেছিলো ত্রিপুরা। নতুন মাঠ তৈরি হচ্ছে সেখানে। তবে নাইটদের গৃহহীন হওয়ার সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন সিএবি প্রধান। “এমন রিপোর্টের কোনো ভিত্তি নেই। বরং উল্টোটাই সত্যি। ১২ বছর পরে ইডেন আইপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও ফাইনাল পাচ্ছে। আমরা তা আয়োজনের জন্য মুখিয়ে রয়েছি,” মন্তব্য তাঁর।
Also Read: বড় ঘোষণা জয় শাহের, আইসিসি’র মসনদে বসার আগেই নিলেন চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত !!