ক্রিকেট হচ্ছে ভদ্রলোকের খেলা। এবার ইংল্যান্ড এবং ভারতের মধ্যে চলমান তৃতীয় টেস্টে সেই ভদ্রতার লক্ষণ রেখা অতিক্রম করতে দেখা গেল ভারতীয় দলের অধিনায়ক শুভমান গিলকে (Shubman Gill)। এদিন দিনের শেষে ইংল্যান্ড দুই ওপেনার ব্যাটসম্যানের উপরে চড়াও হয়ে উঠেছিলেন শুভমান। এমনকি ইংল্যান্ড দলের ওপেনার ব্যাটসম্যান জ্যাক ক্রোওলিকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক। শুভমান গিলের এই আচরণ কোনোভাবেই মান্যতা দেবে না আইসিসি। এমনকি তাকে বড় সরল শাস্তি দিতে পারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা। হোম অফ ক্রিকেট অর্থাৎ লর্ডসে ভারত অধিনায়কদের দাপট দেখা গিয়েছে একাধিকবার। সৌরভ গাঙ্গুলীর (Sourav Ganguly) লর্ডসের ব্যালকনিতে জামা উড়ানো থেকে শুরু করে বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ও জেমস এন্ডারসনের মধ্যে বিবাদ এলপ্রকার ভাবে আজও খবরের শিরোনামে থাকে।
লর্ডসে নিয়ম ভাঙলেন শুভমান

এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন শুভমান গিল (Shubman Gill)। ভারতের নায়ক ইংল্যান্ডের তারকা ওপেনার জ্যাক ক্রোলির সঙ্গে ‘F’ – সম্পর্কিত শব্দ ব্যবহার করেছেন। ক্রিকেটের আইন ও আচরণবিধি অনুযায়ী, মাঠের মধ্যে খেলোয়াড়দের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সৌজন্য বজায় রাখা অপরিহার্য। অশালীন ভাষা ব্যবহার বা অন্য কোনো খেলোয়াড়কে উদ্দেশ্য করে অপমানজনক মন্তব্য করা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। আইসিসি খেলোয়াড় এবং খেলোয়াড় সহায়তা কর্মীদের জন্য আচরণবিধির ধারা ২.৩ অনুসারে, “আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলাকালীন শ্রবণযোগ্য অশ্লীলতার ব্যবহার” লেভেল ১ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
Read More: “আমায় ভাঙিয়ে পয়সা কামাচ্ছে…” বিস্ফোরক বুমরাহ, লর্ডসে পাঁচ উইকেট নিয়ে কটাক্ষ নিন্দুকদের !!
এমনকি, যদি কোনো খেলোয়াড় এই ধরনের আচরণ করে, তবে তাকে ম্যাচ রেফারি বা আম্পায়ার সতর্ক করতে পারেন, জরিমানা করতে পারেন অথবা খেলার জন্য নিষিদ্ধ করতে পারেন। আইসিসির আচরণবিধির ধারায় স্পষ্ট বলা আছে যে, আম্পায়ারদের লেভেল ১-এর আওতায় থাকা খেলোয়াড়রা সর্বনিম্ন শাস্তি হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাকে তিরস্কার করা হতে পারে। এছাড়া, সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে তাঁর ম্যাচ ফির ৫০ শতাংশ এবং একটি বা দুটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হবে। এছাড়াও, ম্যাচে বল বিতর্ক নিয়ে মাঠে আম্পায়ারের সাথেও তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন শুভমান (Shubman Gill)।
কঠিন শাস্তি পাবেন ভারত অধিনায়ক

শুভমান গিল লর্ডস টেস্টের তৃতীয় দিনে আগ্রাসী মেজাজ ধারণ করেছিলেন ইংল্যান্ডের ওপেনার ব্যাটসম্যান এর উপরে। আসলে ইংল্যান্ডের বানানো ৩৮৭ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ভারত ৩৮৭ রান বানাতে সক্ষম হয়েছিল। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু হয়েছিল তৃতীয় দিন শেষ হওয়ার মাত্র ১০ মিনিট আগে। এই সময়ের মধ্যে অন্ততপক্ষে দুই ওভার খেলা গড়ানো সম্ভব ছিল। ভারতের উদ্দেশ্য ছিল, অন্তত দুই ওভার করে প্রতিপক্ষকে একটু চাপে ফেলা। কিন্তু ওপেনার জ্যাক ক্রলি বারবার বল করার ঠিক আগে সরে যাচ্ছিলেন এবং একটি বল তাঁর গ্লাভসে লাগায় ফিজিও ডেকে সময় অপচয় করছিলেন। স্লিপে ফিল্ডিং করছিলেন ভারত অধিনায়ক শুভমান গিল। তিনি ক্ষুব্ধ হয়েই জ্যাক ক্রলির মুখোমুখি হয়ে বলেন –“Grow some fu%&!ng b..ls!”।
এরপর আবার ক্রলিকে উদ্দেশ্য করে শুভমান বলেন, “ভাই সব ঠিক তো ?” যদিও শুভমানকে মুখে কোনো জবাব দেননি ক্রলি। এরপর শুভমান তাঁর হাত দিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে ইমপ্যাক্ট সাব-এর ‘X’ চিহ্ন দেখিয়ে প্যাভিলিয়নের দিকে ইঙ্গিত করেন। শুভমান বোঝাতে চেয়েছিলেন, ‘সমস্যা হলে বাইরে চলে যেতে।’ যা দেখে আর ঠান্ডা থাকতে পারেননি ক্রলি। হাত নেড়ে গিলকে পালটা জবাব দেন তিনিও, তবে ক্রোলির সতীর্থ বেন ডাকেট এসে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে, মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj) এবং কেএল রাহুল (KL Rahul) সহ বাঁকি খেলোয়াড়রা ইংলিশ ওপেনারের উদ্দেশ্যে স্লেজিং শুরু করে দিয়েছিলেন। তৃতীয় দিন শেষে কেবলমাত্র এক ওভার কেলে ইংল্যান্ড দল কোন উইকেট না হারিয়ে ২ রান বানাতে সক্ষম হয়েছে।