বর্তমান প্রজন্মের অন্যতম প্রতিভাবান ব্যাটার শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)। যে গুটিকয় ব্যাটার তিন ফর্ম্যাটেই সফল তাঁদের মধ্যে রাখা যেতে পারে শ্রেয়সকে। রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসে এক মরসুমে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড রয়েছে তাঁর। একাধিকবার দ্বিশতরানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। লিস্ট-এ ক্রিকেটে বিজয় হাজারে ট্রফিতেও ঝড় তুলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। দিনকয়েক আগেই কর্ণাটক ওপুদুচ্চেরির বিরুদ্ধে করেছেন ঝলমলে শতরান। টি-২০’র ময়দানেও অনবদ্য তিনি। দেশের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি আইপিএলে দিল্লী ক্যাপিটালস, কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) হয়ে জাত চিনিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটের আসরেও তাঁর ব্যাটে দেখা গিয়েছে ঝড়। একাধিক স্মরণীয় ইনিংস খেলেছেন তিনি। তবে শ্রেয়সের (Shreyas Iyer) শ্রেষ্ঠতম টি-২০ ইনিংসটি সম্ভবত এসেছিলো ২০১৯-এর সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে।
Read More: CT 2025: তারকা পেসারের সাথে ছিটকে যাচ্ছেন অধিনায়কও, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ঘোর সঙ্কটে দল !!
ধুন্ধুমার ব্যাটিং শ্রেয়স আইয়ারের-
২০১৯ সালে সিকিমের মুখোমুখি হয়েছিলো শক্তিশালী মুম্বই। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো তারা। শুরুটা মোটেই ভালো হয় নি। দ্বিতীয় ওভারের চতুর্থ বলেই মাত্র ১০ রান করে সাজঘরে ফেরেন অজিঙ্কা রাহানে (Ajinkya Rahane) । এর কিছুক্ষণ পর আউট হন পৃথ্বী শ’ও (Prithvi Shaw)। বিপিন শর্মা’র বলে উইকেট ছুঁড়ে আসেন তরুণ ওপেনার। করেন ৪ বলে ১০ রান। ২২ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে বসা মুম্বইকে এরপর লড়াইতে ফেরান সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) ও শ্রেয়স আইয়ার। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই মাত্র ৩৩ বলে ৬৩ করে নজর কাড়েন সূর্য। ১৯০.৯০ স্ট্রাইক রেটে ইনিংস সাজিয়েছিলেন তিনি। মারেন ৮টি চার ও ২টি ছক্কা। যদিও সেদিন ব্যাট হাতে সূর্যের তেজকেও ছাপিয়ে গিয়েছিলেন শ্রেয়স (Shreyas Iyer)। তাঁকে রুখতে গিয়ে রীতিমত দিশাহারা হয়ে পড়েছিলো সিকিম।
তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৫৫ ডেলিভারিতে ১৪৭ রানের অসামান্য ইনিংস খেলে্ন শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)। ৭ টি বাউন্ডারি মেরেছিলেন তিনি। আর প্রতিপক্ষ বোলারদের হোলকার স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে আছড়ে ফেলেন ১৫ বার। অর্থাৎ ১৪৭ রানের মধ্যে কেবলমাত্র ২২ বলেই তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো ১১৮ রান। শেষমেশ মিলিন্দ কুমার যখন সতেরোতম ওভারে তাঁকে ফেরাতে সক্ষম হন, ততক্ষণে রানের পাহাড়ে পৌঁছে গিয়েছে মুম্বই। সিদ্ধেশ লাড, আদিত্য তারেদের সৌজন্যে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৫৮ অবধি এগিয়ে গিয়েছিলো তাড়া। এই পর্বতসমান লক্ষ্য কখনোই দুর্বল সিকিমের পক্ষে তাড়া করা সম্ভব ছিলো না। যথাসাধ্য লড়াই করেও ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১০৪-এর বেশী এগোতে পারে নি তারা। ১৫৪ রানের ব্যবধানে জেতেন শ্রেয়সরা (Shreyas Iyer)।
জাতীয় দলে ফিরেছেন শ্রেয়স-
২০২৪ সালে বেশ ওঠানামার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে শ্রেয়স আইয়ারের (Shreyas Iyer) কেরিয়ার। আইপিএল জিতেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে। মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি, ইরানী কাপ ও সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফি জিতেছেন। কিন্তু পাশাপাশি বাদ পড়তে হয়েছে জাতীয় দল থেকে। বিসিসিআই-এর সাথে সংঘাতের কারণে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেও ছাঁটাই হতে হয়েছে তাঁকে। অগস্ট মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওডিআই সিরিজের পর বেশ কয়েক মাস আন্তর্জাতিক আঙিনা থেকেই দূরেই থাকতে হয়েছে শ্রেয়সকে। সুযোগ মেলে নি বাংলাদেশ বা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। এমনকি অস্ট্রেলিয়া সফরেও মুম্বইয়ের তারকার কথা ভাবেন নি নির্বাচকেরা। অবশেষে নতুন বছরের গোড়ায় কপাল খুলছে তাঁর। গত ১৮ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) জন্য ১৫ সদস্যের যে স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বোর্ড, সেখানে ডাক পেয়েছেন তিনি।