২০১০ সালে সিনিয়র দলের হয়ে অভিষেক হয় শিখর ধাওয়ানের (Shikhar Dhawan)। পথচলা শুরু করেন ওডিআই ক্রিকেট দিয়ে। ২০১১তে প্রথমবার টি-২০ খেলেন তিনি। টেস্ট অভিষেক হয় ২০১৩তে। বারো বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারে একের পর এক নজির গড়েছেন শিখর। পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন দিল্লীর বাম হাতি ওপেনার। ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেরা ক্রিকেটারের পুরষ্কারও পেয়েছেন। ৪৪.১১ গড়ে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৬৭৬৯ রান। ১৭টি শতরান’ও করেছেন তিনি। শতক সংখ্যার নিরিখে ভারতীয়দের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন ‘গব্বর।’ সামনে কেবল শচীন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলি, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও রোহিত শর্মার মত কিংবদন্তিরা। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে দ্বিশতক’ও করেছেন শিখর (Shikhar Dhawan)। ভারতীয় দলের হয়ে না হলেও ভারত-এ দলের হয়ে ২০১৩ সালে এই নজির গড়েছিলেন তিনি।
Read More: ৬, ৬, ৬, ৬, ৬…ঈশান কিষণের তাণ্ডবে কেঁপে উঠলো বাইশ গজ, ধুন্ধুমার দ্বিশতরান তরুণ তুর্কি’র !!
দুর্দান্ত দ্বিশতরান শিখর ধাওয়ানের-
প্রিটোরিয়ার মাঠে ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলো ভারত-এ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারতীয় শিবিরের অধিনায়ক চেতেশ্বর পূজারা (Cheteshwar Pujara)। মুরলী বিজয়ের সাথে ওপেন করতে নেমেছিলেন শিখর ধাওয়ান। শুরু থেকেই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে ভারত-এ। ৩৭ বলে ৪০ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরেছিলেন বিজয় (Murali Vijay)। এরপর পূজারার সাথে লম্বা জুটি গড়েন গব্বর। প্রোটিয়া বোলারদের নিয়ে রীতিমত ছেলেখেলা করেন দুজনেই। তবে আগ্রাসনের মাত্রা অনেকখানি বেশী ছিলো শিখরের (Shikhar Dhawan) ব্যাটে। প্রিটোরিয়ায় সেদিন ৩০ টি বাউন্ডারি ও ৭টি ছক্কা হাঁকান তিনি। ৮৬ বলে ১০০ রানের মাইলস্টোন পেরিয়েছিলেন বাম হাতি ব্যাটার। পরবর্তী ১০০ আসে মাত্র ৪৬ বলে। শেষমেশ ১৫০ বলে ২৪৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
ধাওয়ানের (Shikhar Dhawan) বিস্ফোরক দ্বিশতকের পাশাপাশি শতরান করেন চেতেশ্বর পূজারাও। সাধারণত মন্থর, ধ্রুপদী ব্যাটার হিসেবেই ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে পরিচিত তিনি। কিন্তু সৌরাষ্ট্রের তারকাও সেদিন ব্যাটিং করেন ঝড়ের গতিতে। ১১২.৩৭ স্ট্রাইক রেটে ৯৭ বলে ১০৯ রান করেন তিনি। মারেন ৮ টি বাউন্ডারি। তাঁদের ২৮৫ রানের জুটিতে ভর করে ভারত-এ পৌঁছে গিয়েছিলো ৪৩৩ রানে। জবাবে ব্যটিং করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা-এ’র হয়ে শতরান করেন ওপেনার রিজা হেনড্রিকস (Reeza Hendricks)। ভন ফান জার্সভেল্ড’ও করেন ১০৮ রান। কিন্তু পর্বত সমান লক্ষ্য স্পর্শ করা সম্ভব হয় নি প্রোটিয়া তারকাদের পক্ষে। ৪৮.৪ ওভারে ৩৯৪ করেই থেমে যেতে হয় তাদের। ভারত-এ’র হয়ে ৪ উইকেট নেন ঈশ্বর পাণ্ডে, জয়দেব উনাদকাট ২টি, সুরেশ রায়না, শাহবাজ নাদিম, স্টুয়ার্ট বিনি ১টি করে উইকেট পান। ১ উইকেট পান শিখর ধাওয়ান’ও।
ক্রিকেটে ফিরছেন শিখর ধাওয়ান-
২০২২ সালে ভারতীয় সিনিয়র দলের হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছিলেন শিখর ধাওয়ান (Shikhar Dhawan)। এরপর তাঁকে বাদ দেয় বিসিসিআই। প্রত্যাবর্তনের সুযোগের জন্য বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করেছিলেন দিল্লীর ওপেনার। কিন্তু ভারতীয় বোর্ড স্পষ্ট করে দেয় যে আগামীতে শুভমান গিল বা যশস্বী জয়সওয়ালদের উপরেই আস্থা রাখার কথা ভাবছে তারা। দেওয়াল লিখন পড়তে পেরে ২০২৪-এর অগস্টে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা করেন ধাওয়ান (Shikhar Dhawan)। তবে বেশীদিন বাইশ গজ থেকে দূরে থাকেন নি তিনি। গত বছরই কামব্যাক করেন লেজেন্ডস ক্রিকেট লীগে অংশ নিয়ে। গুজরাত গ্রেটস দলের অধিনায়কত্ব করেন তিনি। একটি অর্ধশতক’ও করেছিলেন। এছাড়া নেপাল প্রিমিয়ার লীগে করণালি ইয়াকসের হয়ে খেলেছেন তিনি। আগামী জুলাইতে ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়ন্সের হয়ে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস (WLC) প্রতিযোগিতাতেও খেলবেন তিনি।