টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যর্থতা অব্যাহত। গত বছরে ভারতে এসে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো টাইগার্সরা। তারপর ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও (BAN vs SA) কোনো রকম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে নি তারা। মীরপুর ও চট্টগ্রামে দু’টি টেস্টেই মুখ থুবড়ে পড়তে হয় মুশফিকুর রহিম (Mushfiquar Rahim), সাদমান ইসলাম’দের। ছবিটা খানিক বদলেছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিম্বাবুয়ে সফরে। ১-১ ফলে অমীমাংসিত থাকে দু’টি সিরিজই। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও জয়ের দিশা খুঁজে পেলো না বাংলাদেশ। গলে সিরিজের প্রথম টেস্টটি (SL vs BAN) ড্র হয়েছিলো। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে ফের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় বাংলাদেশ। কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবের মাঠে হারতে হলো ইনিংস ও ৭৮ রানের ব্যবধানে। ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (Najmul Hossain Shanto)।
Read More: টিম ইন্ডিয়ায় শেষ হচ্ছে গৌতম গম্ভীরের দাপট, এন্ট্রি নিচ্ছেন সচিন তেন্ডুলকারের দুঃস্বপ্ন !!
নেতৃত্ব ছাড়লেন নাজমুল শান্ত-

চলতি বছরের জানুয়ারিতে টি-২০ নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত (Najmul Hossain Shanto)। জুনের গোড়ায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় ওয়ান ডে অধিনায়কের পদ থেকে। বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো মেহদী হাসান মিরাজকে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হারের পর লাল বলের ফর্ম্যাটেও নেতৃত্বের মুকুট খুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন শান্ত। তিনি জানিয়েছেন, “এটা কোনো ব্যক্তিগত ব্যাপার নয়। আমি দলের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মনে হয় এতে দলের মঙ্গলই হবে। আমি গত কয়েক বছর ধরেই এই সাজঘরের অংশ। আমার মতে তিন ফর্ম্যাটে তিন জন আলাদা অধিনায়ক রাখা বিচক্ষণতার পরিচয় নয়। আমি জানি না বোর্ড কি সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু ওনারা যে সিদ্ধান্তই নিক, আমি তার পূর্ণ সমর্থন করব। তবে আমার মতে তিন ফর্ম্যাটে তিন জন আলাদা অধিনায়ক সামলানো দলের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।”
ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি, স্পষ্ট জানিয়েছেন শান্ত (Najmul Hossain Shanto)। বাম হাতি ব্যাটার বলেছেন, “এই সিদ্ধান্ত আবেগের বশবর্তী হয়ে নিয়েছি বলে কেউ যেন মনে না করেন। আমি কিছু নিয়ে হতাশ নই। আমি সাফ জানাতে চাই যে দলের মঙ্গলের জন্যই এই পদক্ষেপ নিয়েছি।” কিছুদিন আগেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (BCB) একটি চিঠি লিখে নেতৃত্ব ত্যাগের কথা জানিয়েছিলেন তিনি, বলেছেন শান্ত। ২০২৩-এর নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ‘হোম’ সিরিজের আগে দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। গত দেড় বছরে অধিনায়কের ব্লেজার গায়ে মাঠে নেমেছিলেন ১৪টি টেস্ট ম্যাচে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে মাত্র ৪টি ম্যাচ। হেরেছে ৯টি। অমীমাংসিত থেকেছে ১টি ম্যাচ। পাকিস্তানের মাটিতে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় লাল বলের ফর্ম্যাটে অধিনায়ক হিসেবে তাঁর কেরিয়ারের সোনালী অধ্যায়।
তাইজুল ইসলাম পেতে পারেন দায়িত্ব-

টি-২০তে এই মুহূর্তে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লিটন দাস (Litton Das)। ওয়ান ডে’তে অধিনায়ক নির্বাচিত হয়েছেন মেহদী হাসান মিরাজ (Mehidy Hasan Miraz)। শান্ত’র বিদায়ের পর এই দু’জনের মধ্যে কাউকে টেস্টে স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ইতিপূর্বে কার্যনির্বাহী অধিনায়ক হিসেবে লাল বলের ফর্ম্যাটে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতাও রয়েছে দু’জনেরই। লিটন ২০২৩ সালে একটি টেস্টে অধিনায়ক ছিলেন, আর মেহদী গত বছর দায়িত্ব সামলেছিলেন দু’টি ম্যাচে। তবে তিন ফর্ম্যাটে তিন অধিনায়ক নীতি যদি বেছে নেয় বিসিবি, সেক্ষেত্রে অধিনায়ক হিসেবে যোগ্য বিকল্প হতে পারেন তাইজুল ইসলাম (Taijul Islam)। বাম হাতি স্পিনার নিজের ইচ্ছুক দায়িত্ব সামলাতে। গত বছর ৫৫ টেস্টে ২৩৭ উইকেটের মালিক এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, “১০ বছরের বেশী সময় ধরে খেলছি। আমি (অধিনায়কত্বের জন্য) পুরোপুরি তৈরি।”