শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan) ও বিতর্ক যেন বরাবরই চলে হাত ধরাধরি করে। একুশ শতকের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হওয়ার পাশাপাশি বাইশ গজের দুনিয়ার অন্যতম বিতর্কিত চরিত্র’ও তিনি। নিদাহাস ট্রফি চলাকালীন ড্রেসিং রুমের কাঁচের দরজা ভাঙার অভিযোগ একসময় উঠেছিলো শাকিব ও তাঁর সতীর্থদের বিরুদ্ধে। কখনও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অখুশি হয়ে স্টাম্পে লাথি মেরে সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়। কখনও আবার বিশ্বকাপের (ICC World Cup) মত মঞ্চে প্রতিপক্ষ ব্যাটারকে টাইমড আউট করে তিনি উঠে এসেছেন ক্রিকেটদুনিয়ার চর্চায়। অনুশীলনের সময় জনৈক ভক্ত সেলিফি তুলতে চাওয়ায় তাঁকে শারীরিক নিগ্রহেরও অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ‘ব্যাড বয়’-এর বিরুদ্ধে। এহেন শাকিব (Shakib Al Hasan) এবার বিতর্কের কেন্দ্রে অনৈতিক বোলিং অ্যাকশনের কারণে।
Read More: “ফিরে আসুক সেরা সময়…” ৩৬-এ পা বিরাট কোহলি’র, শুভেচ্ছায় ভরালো সোশ্যাল মিডিয়া !!
আতসকাঁচের নীচে শাকিবের অ্যাকশন-
অনৈতিক বোলিং অ্যাকশনের কারণে এর আগে বিতর্কে জড়িয়েছেন মুথাইয়া মুরলীধরণ, লাসিথা মালিঙ্গা (Lasith Malinga) থেকে সঈদ আজমলের মত তারকা। এবার একই অভিযোগ উঠলো বাংলাদেশের শাকিব আল হাসানের (Shakib Al Hasan) বিরুদ্ধে। সংবাদসংস্থা ক্রিকবাজ সূত্রে জানা গিয়েছে যে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশী তারকার বোলিং অ্যাকশন নিয়ে দেখা দিয়েছে সন্দেহ। গত সেপ্টেম্বর মাসে ভারত সফরে আসার আগে সারে’র হয়ে সমারসেটের বিরুদ্ধে একটি কাউন্টি ম্যাচ খেলেছিলেন শাকিব (Shakib Al Hasan)। ব্যাট হাতে সেখানে বিশেষ ভালো প্রদর্শন করতে পারেন নি। কিন্তু ৯টি উইকেট নিয়েছিলেন হাত ঘুরিয়ে। সেই ম্যাচেই তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন দুই আম্পায়ার ডেভিড মিলন্স ও স্টিভ ও’শনসি। ম্যাচ রিপোর্টে তা উল্লেখও করেন তাঁরা।
অভিযোগ পাওয়ার পরেই ব্যবস্থা নিয়েছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট সংস্থা (ECB)। তারা শাকিব’কে নির্দেশ দিয়েছে বোলিং অ্যাকশন পর্যালোচনা করার জন্য। এখনও পর্যন্ত তাঁকে নির্বাসিত করা হয় নি। কিন্তু আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হতে চলেছে বলে মিলেছে খবর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সতেরো বছর কাটিয়ে ফেলেছেন শাকিব (Shakib Al Hasan)। তিন ফর্ম্যাট মিলিয়ে ৪৪৭ ম্যাচে নিয়েছেন ৭১২ টি উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট, লিস্ট-এ ও অন্যান্য টি-২০ যোগ করলে সংখ্যাটা ১২০০’র বেশী। এর মধ্যে কখনও তাঁকে বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় নি। কেরিয়ারের একদম শেষলগ্নে এসে শাকিবের (Shakib Al Hasan) বিরুদ্ধে প্রশ্ন ওঠায় অবাক অনেকেই।
দেশের মাঠে অবসর নিতে পারেন নি শাকিব-
কানপুরে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হওয়ার আগেই শাকিব (Shakib Al Hasan) জানিয়ে দেন যে লাল বলের ফর্ম্যাটকে বিদায় জানাচ্ছেন। সাথে টি-২০ থেকেও আপাতত সরে দাঁড়ানোর কথাই ঘোষণা করেন তিনি। শাকিব চেয়েছিলেন দীর্ঘ টেস্ট কেরিয়ারের শেষটা হোক দেশের মাটিতেই। কিন্তু তা বাস্তবে আর সম্ভব হয় নি। বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর ‘খলনায়ক’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন শাকিব (Shakib Al Hasan)। পূর্বতন শাসক দল আওয়ামি লীগের সাথে তাঁর যোগাযোগের কারণেই সমস্যায় তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে খুনে জড়িত থাকার মামলাও নথিভুক্ত হয়েছে। এই অবস্থায় দেশে ফিরলে তাঁর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে বলে ভাবছেন ক্রিকেটতারকা। তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে নি বাংলাদেশ ক্রিকেট সংস্থা। ফলে মীরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলে অবসর নেওয়া সম্ভব হয় নি শাকিবের পক্ষে।