আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ভারত বনাম বাংলাদেশ (IND vs BAN) দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ। কানপুরের গ্রিনপার্ক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সম্মুখসমরে দুই পক্ষ। চেন্নাইতে সিরিজের প্রথম ম্যাচটিতে টাইগারদের নাস্তানাবুদ করেছে ভারতীয় দল। ২৮০ রানের বিরাট ব্যবধানে জিতে ১-০ এগিয়ে গিয়েছেন রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, রবিচন্দ্রণ অশ্বিনরা। কানপুরে ভারতের সামনে রয়েছে বাংলাদেশকে হোয়াইট ওয়াশ করে ২০২৫-এর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) ফাইনালের বার্থ প্রায় কনফার্ম করে ফেলার সুযোগ। অন্যদিকে পাকিস্তানকে হারিয়ে আসা বাংলাদেশ যেভাবে ভারতের বিপক্ষে মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রথম টেস্টে, তাতে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে তাদের নিয়ে। শান্ত, লিটনরা চাইবেন সমালোচনার জবাব দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে। মানসিক ভাবে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের উপর চাপ বেড়েছে খেলা শুরুর এক দিন আগে। আচমকাই অবসরের ঘোষণা করেছেন তাদের তারকা অলরাউন্ডার শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan)।
Read More: একই দলে ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেটার’রা, প্রকাশিত সম্মিলিত টি-২০ একাদশ !!
দুই ফর্ম্যাটকে বিদায় জানালেন শাকিব-
বয়স থাবা বসিয়েছে পারফর্ম্যান্সে। চোখের সমস্যা, আঙুলের চোটের কারণে মাঠে দিতে পারছেন না সেরা’টা। শাকিবকে নিয়ে এহেন অভিযোগ উঠছিলো বেশ কয়েক দিন ধরে। ভারতের বিরুদ্ধে চেন্নাই টেস্টে কম সংখ্যক ওভারে বোলিং করা বা একাধিক ক্যাচ ফস্কানোর পর নানা মহল থেকে কটাক্ষের তীর উড়ে এসেছিলো তাঁর দিকে লক্ষ্য করে। সেরা সময় যে পেরিয়ে এসেছেন তা বুঝেছিলেন শাকিব স্বয়ং। তাই কানপুরে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে নামার আগেই কেরিয়ারের অন্যতম কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেললেন তিনি। আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ দ্বৈরথ। তার আগেই জানিয়ে দেন যে টেস্ট ও টি-২০ থেকে অবসর নিচ্ছেন তিনি। তবে বিদেশে নয়, ঘরের মাঠেই লাল বলের ফর্ম্যাটকে বিদায় জানানোর পরিকল্পনা শাকিব। আগামী মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মীরপুরেই খেলতে চাইছেন ‘ফেয়ারওয়েল’ টেস্ট।
দীর্ঘতম ফর্ম্যাটের পাশাপাশি ক্ষুদ্রতম ফর্ম্যাট থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করে দিয়েছেন শাকিব আল হাসান। ভারতের বিপক্ষে আসন্ন টি-২০ সিরিজও খেলছেন না তিনি। জানান, “টি-২০তেও আমার ভাবনা খানিকটা একই রকম। আমি নির্বাচক, বোর্ড প্রেসিডেন্টের সাথে কথা বলেছি। আমার মনে হয় যে এটাই আমার টি-২০ থেকে সরে দাঁড়ানোর সেরা সময়। আগামী কিছু সিরিজে নতুন মুখেরা জায়গা পাক।” প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখে এরপর শাকিবের মন্তব্য, “যদি আমি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে ভালো খেলি আর বিসিবি মনে করে টি-২০তে আমার দলকে কিছু দেওয়ার আছে আর আমি যদি তখন ফিট থাকি, তাহলে ভেবে দেখা যাবে। এই মুহূর্তে আমি নিজেকে টি-২০তে দেখছি না। তাই বলাই যায় যে আমি দুটো ফর্ম্যাটে দাঁড়ি টানছি।” শাকিবের বিদায়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বিরাট শূন্যতা যে তৈরি হবে তা নিশ্চিত।
শাকিব আল হাসানের কেরিয়ার পরিসংখ্যান-
নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার শাকিব আল হাসান। অলরাউন্ডার হিসেবে দেড় দশকেরও বেশী সময় বাইশ গজের দুনিয়ায় নিজের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। পা রেখেছেন আইসিসি র্যাঙ্কিং-এর শীর্ষপদে। লম্বা কেরিয়ারে তিনি এখনও পর্যন্ত খেলেছেন ৭০টি টেস্ট ম্যাচ। ১২৮ ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ৪৬০০ রান। শতরানের সংখ্যা ৫, অর্ধশতক ৩১টি। সাথে ২৪২টি টেস্ট উইকেটও রয়েছে শাকিবের। টি-২০’র দুনিয়ায় শাকিব দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ১২৯ ম্যাচে। তাঁর রান সংখ্যা ২৫৫১ ও উইকেট সংখ্যা ১৪৯। আন্তর্জাতিক টি-২০তে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী তিনি। এখনও পর্যন্ত নিজের ওডিআই কেরিয়ারের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কিছু ঘোষণা করেন নি শাকিব। বাম হাতি অলরাউন্ডার পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে ২৪৭ ম্যাচে ৯ শতরান-সহ ৭৫৭০ রান করেছেন ও নিয়েছেন ৩১৭টি উইকেট।