বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় কে? প্রশ্নের উত্তরে শতকরা নব্বইভাগ ক্রিকেটপ্রেমীই উচ্চারণ করবেন শাকিব আল হাসানের (Shakib Al Hasan) নাম। পদ্মাপারের দেশকে বাইশ গজের দুনিয়ায় আলাদা পরিচিতি যদি কেউ দিয়ে থাকেন তাহলে তা শাকিবই। ব্যাটিং ও বোলিং-দুই বিভাগেই দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করেছেন তিনি। রয়েছে তিন ফর্ম্যাটেই অলরাউন্ডারদের তালিকায় শীর্ষস্থানে জায়গা করে নেওয়ার বিরল কৃতিত্ব’ও।। ২০২৪-এ টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছিলেন তিনি। টি-২০ থেকে দীর্ঘ বিশ্রাম নেওয়ার ঘোষণাও করেন। কিন্তু চেয়েছিলেন ওয়ান ডে খেলা চালিয়ে যেতে। সেই সুযোগ আর আসে নি তাঁর সামনে। জাতীয় দল থেকে তাঁর বাদ পড়া যতটা না ক্রিকেটীয় কারণে, তার চেয়ে অনেক বেশী রাজনৈতিক কারণে বলেই উঠেছিলো অভিযোগ। সম্প্রতি সেই জল্পনাতেই যেন সিলমোহর দিলেন বাংলাদশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা।
Read More: IND vs WI 1st Test Pitch and Weather: আহমেদাবাদ টেস্টে থাকছে বৃষ্টির ভ্রুকুটি? ফলাফলে কতটা প্রভাব ফেলবে পিচ? জেনে নিন সব প্রশ্নের উত্তর !!
শাকিব-আসিফ দ্বন্দ্বে সরগরম পদ্মাপার-

গত বছরের গোড়ায় সাধারণ নির্বাচন হয়েছিলো বাংলাদেশে। বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গড়ে আওয়ামি লীগ। ফের একবার প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন শেখ হাসিনা। আওয়ামি লীগের টিকিটেই মাগুরার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan) । সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করতে চান, জানিয়েছিলেন ক্রিকেট নক্ষত্র। কিন্তু মাসখানেকের মধ্যেই পালটে যায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক আবহ। জুলাই-অগস্টে ঘটে গণঅভ্যুত্থান। দেশ ছেড়ে পালাতে হয় শেখ হাসিনাকে। উত্তেজিত জনতা অগ্নিসংযোগ করেছিলো শাকিবের (Shakib Al Hasan) বাড়িতেও। দেশে আর ফেরা হয় নি তাঁর’ও। পাকিস্তান ও ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের জার্সিতে টেস্ট খেলার পর তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় ক্রিকেটীয় মানচিত্র থেকে। এরপর কেটে গিয়েছে ১২ মাস। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, এশিয়া কাপের মত টুর্নামেন্টে লাল-সবুজ জার্সিতে দেখা যায় নি শাকিবকে।
আওয়ামি লীগের সাথে জড়িত থাকার কারণেই জাতীয় দল থেকে সরানো হয়েছে তাঁকে, এহেন অভিযোগ আগেও তুলেছিলেন শাকিব ভক্তেরা। সম্প্রতি ফের একবার মাথাচাড়া দিয়েছে সেই বিতর্ক। গত ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মদিন ছিলো শেখ হাসিনার। সমাজমাধ্যমে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান শাকিব। সেই পোস্টের প্রসঙ্গ টেনেই ক্রিকেট তারকা’কে আক্রমণ শানান বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। তিনি ফেসবুকে লেখেন, “একজনকে পুনর্বাসন না করায় সহস্ত্র গালি দিয়েছেন আপনারা আমাকে। But I was right. End of the discussion.” পালটা দেন শাকিব’ও (Shakib Al Hasan) । অন্য একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “যাক শেষমেশ কেউ একজন স্বীকার করে নিলেন যে তার জন্য আমার আর বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দেওয়া হলো না, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারলাম না। ফিরবো হয়তো কোন দিন আপন মাতৃভূমিতে। ভালোবাসি বাংলাদেশ।”
শেষ শাকিবের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার-

শাকিব (Shakib Al Hasan) বনাম আসিফ দ্বন্দ্ব থামে নি এরপরও। ফেরানো হবে না তারকা অলরাউন্ডারকে, স্পষ্ট জানিয়ে দেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। “শাকিবকে আমরা বাংলাদেশের পতাকা বহন করতে দিতে পারি না। ইতিপূর্বে আমি বোর্ডকে এভাবে না বললেও এখন বোর্ডের প্রতি আমার স্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে যে শাকিব আল হাসান কখনোই বাংলাদেশের টিমে আর খেলতে পারবেন না,” চ্যানেল ২৪-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান তিনি। আসিফ মাহমুদের আক্রমণ’কে বিশেষ আমল দিচ্ছেন না শাকিব নিজে। আসিফের মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেছেন, “উনি (শেখ হাসিনা) বরাবরই ক্রিকেট পছন্দ করতেন-তাই না? খেলার সূত্রেই আমাদের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিলো আমি রাজনীতিতে আসার অনেক আগে থেকেই। সেই কারণেই আমি ওনাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আমার অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না। কাউকে প্ররোচিত করতেও চাই নি।”