কানপুরে ভারত বনাম বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ শুরুর আগে বড়সড় বোমা ফাটিয়েছেন শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan)। সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দিয়েছেন যে আর দেশের হয়ে টেস্ট ও টি-২০ ম্যাচ খেলবেন না তিনি। বয়স থাবা বসিয়েছে তাঁর পারফর্ম্যান্সে, ভুগছেন চোখের সমস্যায়, আঙুলের চোটের কারণে বোলিং করতে পারছেন না টানা-এমন হাজারো অভিযোগ উঠেছিলো শাকিব’কে (Shakib Al Hasan) নিয়ে। সেরা সময় যে পেরিয়ে এসেছেন তা হয়ত বুঝতে পেরেছিলেন শাকিব স্বয়ং। তাই আন্তর্জাতিক কেরিয়ারকে য়ার লম্বা করলেন না অহেতুক। আপাতত টেস্ট ও টি-২০ থেকে সরে যাবেন বলে ঘোষণা করেছেন। তবে ওয়ান ডে’তেও তাঁর স্থায়িত্ব যে বেশীদিন নয়, তা বোঝা গিয়েছে শরীরী ভাষায়। তিম বাংলাদেশকে বিদায় জানিয়ে নতুন ইনিংস শুরু করতে চলেছেন, ঘোষণা করেছেন তারকা অলরাউন্ডার।
Read More: IND vs BAN 2nd Test: পরিত্যক্ত দ্বিতীয় দিনের খেলা, কানপুরে বৃষ্টিতে বিশ বাঁও জলে টেস্ট ম্যাচ !!
অবসরের ঘোষণা শাকিব আল হাসানের-

কানপুরে ম্যাচ শুরুর আগে শাকিব (Shakib Al Hasan) সাংবাদিকদের জানিয়ে দেন যে সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দেশের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চান তিনি। তবে গণঅভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি এখনও স্থিতিশীল নয় বাংলাদেশে। ফলে সিরিজ আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। পূর্বতন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামি লীগের সাংসদ ছিলেন শাকিব (Shakib Al Hasan), তাই একটা বড় অংশের মানুষের চোখে রাতারাতি ভিলেন হয়ে উঠেছেন তিনি। একইসাথে তাঁর বিরুদ্ধে খুনে প্ররোচনা দেওয়ার মামলাও রজু হয়েছে আদালতে। এই মুহূর্তে দেশে ফেরা যে কঠিন হতে পারে তাঁর জন্য, তাও জানেন শাকিব আল হাসান। ফলে কানপুরের এই ম্যাচটিই যে আদতে তাঁর শেষ টেস্ট হতে পারে তাও স্বীকার করে নিয়েছেন কিংবদন্তি অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার জানান, “আমি দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের জন্য উপলব্ধ। কিন্তু যেহেতু দেশে এখন অনেক কিছু ঘটছে, সেহেতু সম্পূর্ণ বিষয়টি আমার হাতে নেই। আমি টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আমার পরিকল্পনাগুলো বিসিবি’র সাথে আলোচনা করেছি। আমি ফারুখ (আহমেদ) ভাই ও নির্বাচকদের সাথে কথা বলেছি। যদি খেলার সুযোগ পাই তাহলে মীরপুরেই হবে আমার শেষ টেস্ট ম্যাচ। বোর্ড চেষ্টা করছে যাতে আমি নিরাপদে খেলতে পারি, একইসাথে যাতে কোনো সমস্যা ছাড়াই দেশ’ও ছাড়তে পারি।” যদিও শাকিব’কে আলাদা করে নিরাপত্তা দেওয়া যে সম্ভব নয় তা পরে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। “কাউকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা বোর্ডের হাতে নেই,” বলেছেন বিসিবি প্রধান ফারুখ আহমেদ।
দেখে নিন শাকিবের সাংবাদিক সম্মেলনের কিছু মুহূর্ত-
Big Breaking 🚨🚨🚨
Shakib announced retirement from Test and T20
Shakib Al Hasan has made up his mind to retire from both formats. The veteran all-rounder announced his retirement from Tests and T20Is at a press conference on the eve of the Kanpur Test against India.… pic.twitter.com/QbMFkuKSzb
— BringingJusticetoYou (@JusticeBengal) September 26, 2024
মার্কিন মুলুকে নতুন ‘ঘাঁটি’ শাকিবের ?

টেস্টের পাশাপাশি টি-২০ ক্রিকেট থেকেও আপাতত অবসরই নিচ্ছেন, ঘোষণা করেছেন শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan)। সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশ তারকা বলেন, “টি-২০তেও অনেকটা একই রকম আমার ভাবনা। আমি নির্বাচক, বোর্ড সভাপতি’র সাথে কথা বলেছি। আমি মনে করি যে এটাই আমার টি-২০ থেকে সরে দাঁড়ানোর সেরা সময়। আগামী কিছু সিরিজে নতুন মুখেরা জায়গা পাক।” তবে কৌশলে প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনাও জিইয়ে রেখে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-২০’র তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী। “যদি আমি ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে ভালো খেলি আর বিসিবি মনে করে টি-২০তে আমার দলকে কিছু দেওয়ার আছে আর আমি যদি তখন ফিট থাকি, তাহলে ভেবে দেখা যাবে। এই মুহূর্তে আমি নিজেকে টি-২০তে দেখছি না। তাই বলাই যায় যে আমি দুটো ফর্ম্যাটে দাঁড়ি টানছি।”
আন্তর্জাতিক টেস্ট ও টি-২০ থেকে সরে দাঁড়ালেও বাইশ গজকে পুরোপুরি যে বিদায় শাকিব (Shakib Al Hasan) জানাচ্ছেন না তা স্পষ্ট তাঁর বক্তব্য থেকেই। আপাতত কিছু দিনের বিশ্রামের পরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দুনিয়ায় ফিরতে পারেন তিনি। ভারতের আইপিএল (IPL), ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিপিএল (CPL), আমেরিকার মেজর লীগ ক্রিকেটের (MLC) মত টুর্নামেন্টে নিয়মিত তিনি। আগামীতে সেই প্রতিযোগিতাগুলোতেই প্রধান ফোকাস রাখতে চলেছেন তিনি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে স্থায়ী ভাবে বসবাস করা সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। হতে পারে গ্রেপ্তারও। ফলত দেশ ছেড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আপাতত বসবাস করতে পারেন শাকিব (Shakib Al Hasan)। ২০২২ সালে মার্কিন মুলুকে পাকাপাকি বসবাস করার জন্য গ্রিন কার্ড পেয়েছেন ক্রিকেট তারকা। তাই সপরিবারে বিদেশে গিয়ে থিতু হতে বিশেষ সমস্যা হবে না তাঁর।