Shahid Afridi: ২৬/১১, উরি, পাঠানকোট, পুলওয়ামার পর পহলগাঁও-ভারতের বুকে সন্ত্রাসবাদী হামলার নেপথ্যে এবারও সেই পাকিস্তান। গত ২২ তারিখ বৈসরণ উপত্যকায় নিরীহ পর্যটকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় আতঙ্কবাদীরা। ঘটনায় ২৫ জন পর্যটক মারা গিয়েছেন। রুখে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন স্থানীয় টাট্টুওয়ালা সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ। মুহূর্তে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যেতে হয় তাঁকেও। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই নাশকতার দায় স্বীকার করে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার মদতপুষ্ট ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফোর্স।’ মঙ্গলবারের নৃশংস হত্যাকাণ্ড স্তম্ভিত করেছে ভারত’কে। প্রত্যাঘাতের পথে হেঁটেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করা হয়েছে ইতিমধ্যে। নেওয়া হয়েছে আরও বেশ কিছু কঠিন পদক্ষেপ। সীমান্তের ওপারে অবশ্য দেখা গিয়েছে অন্য ছবি। হত্যাকাণ্ডের সমালোচনা করার বদলে দায় ঝাড়তেই ব্যস্ত পাক প্রশাসন।
Read More: IPL 2025 MI vs LSG Match Preview: মুম্বাইয়ের মাটিতে জয়ে ফিরতে মরিয়া লখনউ, পরিসংখ্যানে এগিয়ে এই দল মারবে বাজি !!
প্রমাণ চাইলেন শাহিদ আফ্রিদি-

পহলগাঁওতে নাশকতার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে ভারতীয় ক্রিকেটমহল। আক্রান্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন শচীন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলিরা। ধর্মের নামে হানাহানি বন্ধ হোক, আওয়াজ তুলেছেন মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। শ্রীবৎস গোস্বামী ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় পাকিস্তানের সাথে সব রকম ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ত্যাগের দাবী তুলেছেন। “১০০ শতাংশ ভারতের এটা (পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন) করা উচিৎ। কড়া ব্যবস্থা নিতেই হবে। প্রত্যেক বছর এমন ঘটনা ঘটছে। এটা মোটেও হাস্যকর ব্যাপার নয়। সন্ত্রাসবাদ আর সহ্য করা যাচ্ছে না,” বলেছেন সৌরভ। আইসিসি টুর্নামেন্টে যাতে ভারত ও পাকিস্তানকে এক গ্রুপে না রাখা হয় সেই মর্মে নাকি সর্বোচ্চ ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থাকে চিঠি দিচ্ছে বিসিসিআই। তাতেও যে তাঁর পূর্ণ সমর্থন রয়েছে তা গতকাল ANI-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক।
ওয়াঘার ওপারে ছবিটা বেশ খানিক আলাদা। হত্যাকাণ্ডে দুঃখপ্রকাশ করলেও দায় ভারতের উপরেই চাপাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক শাহিদ আফ্রিদি (Shahid Afridi)। তিনি দুবাইতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “পাকিস্তানকেই সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের শিকার হতে হচ্ছে। কাশ্মীরে নিরীহ মানুষেরা প্রাণ হারানোয় আমি দুঃখিত। পাকিস্তানের অভ্যন্তরে যেভাবে জঙ্গি কার্যকলাপ বেড়ে চলেছে তাও দুঃখজনক।” পহলগাঁও-এর ঘটনায় পাক যোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। “প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে ভারত,” বলেছেন আফ্রিদি (Shahid Afridi)। সীমান্ত সমস্যা মেটাতে দুই দেশের উচিৎ আলোচনায় বসা, পরামর্শ দিয়েছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। তবে পাকিস্তান যেভাবে বারবার প্রকৃত সীমান্তরেখা (LOC) লঙ্ঘন, জঙ্গি কার্যকলাপ ঘটিয়ে চলেছে, তাতে আলোচনার পথ কতটা খোলা রয়েছে তা নিয়ে ধন্দে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।
পাকিস্তানকে ‘একঘরে’ করতে চায় ভারত-

২০০৮-তে মুম্বই-এর তাজ হোটেল, নরিম্যান পয়েন্ট, লিওপোল্ড ক্যাফের মত জায়গায় হামলা চালিয়েছিলো পাকিস্তানী জঙ্গিরা। বহু মানুষ প্রাণ হারান তাতে। এরপর থেকেই তলানিতে ভারত-পাক ক্রিকেটীয় সম্পর্ক। ২০০৮-এর পর আর পাকিস্তানে যায় নি ভারতীয় দল। ২০১২-১৩’র পর থেকে বন্ধ দ্বিপাক্ষিক সিরিজও। পিসিবি’র তরফে বারবার প্রস্তাব এলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছে ভারতীয় বোর্ড। অদূর ভবিষ্যতেও যে সিরিজ খেলার কোনো সম্ভাবনা নেই তা পহলগাঁও’র ঘটনার পর স্পষ্ট করেছেন বিসিসিআই-এর সহ-সভাপতি রাজীব শুক্ল (Rajeev Shukla)। “কেন্দ্রীয় সরকার যে নীতি নেবে তা মেনে আমরা চলবো,” বলেছেন তিনি। আইসিসি টুর্নামেন্টেও যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলা নিয়ে আপত্তি জানাবে ভারত, দিয়েছেন তারও আভাস। “কি ঘটছে সে বিষয়ে আইসিসি’ও ওয়াকিবহাল। ওরা বিষয়টি নিশ্চয়ই দেখবে,” বলেছেন তিনি।