আইপিএলের আঙিনায় সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) পদার্পণ ২০১২ সালে। কলকাতা নাইট রাইডার্সে ডাক পেয়েছিলেন তিনি। যদিও একটি ম্যাচেও সুযোগ পান নি মাঠে নামার। পরের বছর দল বদলে রাজস্থানে যোগ দেন সঞ্জু। ভাগ্য বদলে যায় তাঁর। কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে সুযোগ দিয়েছিলো রাজস্থান। ধীরে ধীরে দলের অপরিহার্য্য অঙ্গ হয়ে ওঠেন তিনি। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে রাজস্থান রয়্যালস নির্বাসিত থাকার সময় বাধ্য হয়েই দিল্লী গিয়েছিলেন সঞ্জু। কিন্তু ২০১৮তে ফিরে আসেন জয়পুরের ফ্র্যাঞ্চাইজিতেই। এখনও পর্যন্ত আর দলবদল করেন নি তিনি। ২০২১ থেকে সামলাচ্ছেন নেতৃত্বভারও। দলকে একবার ফাইনালে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে একবার প্লে-অফেও গিয়েছে রাজস্থান (RR) দল। সুখের সংসারে আচমকাই ভাঙনের জল্পনা ছড়িয়েছিলো ২০২৫ মরসুম চলাকালীন। শোনা গিয়েছিলো কর্মকর্তাদের থেকে রিলিজ চেয়েছেন সঞ্জু।
Read More: এশিয়া কাপের আগে বড়ো খবর, দলে ফিরলেন আজিঙ্কা রাহানে !!
দল ছাড়ছেন না সঞ্জু স্যামসন-

২০২৫ আইপিএলটি বিশেষ ভালো কাটে নি সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson)। প্রথম তিনটি ম্যাচে আঙুলে চোট থাকায় উইকেটকিপিং করতে পারেন নি। কেবল ব্যাটিং করেছিলেন। মরসুমের মাঝপথে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে পাঁজরে চোট পান তিনি। বেশ কিছুদিন ছিলেন মাঠের বাইরে। পাশাপাশি ড্রেসিংরুমের অশান্তিও ব্যাকফুটে রেখেছিলো সঞ্জুকে (Sanju Samson)। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে মতানৈক্যের খবর এসেছিলো প্রকাশ্যে। আইপিএল মেটার পর শোনা গিয়েছিলো যে নেতৃত্ব প্রশ্নে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। একটা অংশ সঞ্জুকেই দায়িত্বে দেখতে চায়। অন্য একটি অংশ চাইছে পূর্ণ সময়ের অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হোক অসমের রিয়ান পরাগের (Riyan Parag) নাম। আর তৃতীয় অংশের দাবী যশস্বী জয়সওয়ালকে নেতা বেছে নেওয়া হোক। এই দড়ি-টানাটানির মাঝে পড়েই নাকি সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সঞ্জু।
কেরলের তারকার জন্য আসরে নেমে পড়েছিলো একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজিও। শোনা গিয়েছিলো যে চেন্নাই সুপার কিংস (CSK) নাকি ট্রেডিং-এর প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে। তবে সঞ্জুর বদলে ঋতুরাজ গায়কোয়াড়, রবীন্দ্র জাদেজা বা শিবম দুবের মধ্যে একজনকে চেয়েছিলো ২০০৮-এর চ্যাম্পিয়নরা। ফলে সেই আলোচনা আর বেশীদূর এগোয় নি। ওপেনার, অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক-তিন ভূমিকায়ই সাবলীল সঞ্জু (Sanju Samson)। তাই স্কোয়াডের ফাঁকফোকর ঢাকতে তিনি যে আদর্শ হতে পারেন তা ভেবেছিলো নাইট রাইডার্সও (KKR)। তাই তাঁকে নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছিলো তারাও। অঙ্গকৃষ রঘুবংশী ও রমনদীপ সিং-কে রাজস্থানের হাতে তুলে দিতে প্রস্তুত ছিলো কলকাতা। দিনকয়েক আগে অবধিও মনে হচ্ছিলো যে সঞ্জু’র দলত্যাগ কেবল সময়ের অপেক্ষা। চেন্নাই বা কলকাতার মধ্যে যে কোনো দলের জার্সি পরবেন তিনি। কিন্তু হঠাৎই বদলেছে পরিস্থিতি।
রাজস্থানেই থেকে যাচ্ছেন সঞ্জু-

রাজস্থান রয়্যালসের সাথে সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) সম্পর্কের অবনতির অন্যতম অনুঘটক ছিলেন কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। দু’জনের মধ্যে দলগঠন, স্ট্র্যাটেজি নির্মাণের মত নানান বিষয়ে মতানৈক্য ছিলো বলে খবর মিলেছিলো সংবাদমাধ্যম সূত্রে। ১৪ বর্ষীয় বৈভব সূর্যবংশীকে সুযোগ দেওয়ার জন্য সঞ্জুকে তাঁর পছন্দের ওপেনার পজিশন থেকেও সরিয়ে দিয়েছিলেন দ্রাবিড়। তবে গতকাল আচমকাই কোচের দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাঁর সরে যাওয়ার খবর প্রকাশ করেছে রয়্যালস ফ্র্যাঞ্চাইজি। দ্রাবিড়ের বিদায় সঞ্জু’কে রাজস্থান না ছাড়ার ক্ষেত্রে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নেতৃত্বের বিষয়ে কর্মকর্তারা যদি তাঁকে আশ্বস্ত করেন, সেক্ষেত্রে রিলিজের অনুরোধ তিনি ফিরিয়ে নিতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গোলাপি-নীল জার্সিতে জারি থাকতে পারে তাঁর অভিযান।