Team India: আগামী কয়েকমাসে বেশ কয়েকটি বড় পরীক্ষার সম্মুখীন হতে চলেছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। সেপ্টেম্বরের ২ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে ভারতের এশিয়া কাপ অভিযান। মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াইতে ভারতের প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান। বাবর আজমদের বিরুদ্ধে হেরেই গত বছর এশিয়া কাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিলো রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) দলকে। ক্যান্ডির মাঠে তাই প্রতিশোধের লক্ষ্য নিয়ে নামবে ভারত। ২০১৮ সালের পর ফের একবার নেতা হিসেবে এশিয়া কাপ স্পর্শ করার স্বপ্ন থাকবে হিটম্যানের।
এশিয়া কাপের পরেই অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হচ্ছে দল। আর তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ শেষেই শুরু হবে একদিনের ক্রিকেট বিশ্বকাপ। দেশের মাটিতে ১২ বছর পর ট্রফি জয়ের চাপ রয়েছে আকাশছোঁয়া। ওয়াংখেড়েতে ২০১১ সালের ২ এপ্রিল সাফল্যের যে শিখর ছুঁয়েছিলো ধোনির দল, তার পুনরাবৃত্তি ২০২৩-এর ১৯ নভেম্বর চাইবে টিম ইন্ডিয়া (Team India)।সাফল্যের লক্ষ্যে জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে ভারতের। আগামী ২৩ তারিখ থেকে বেঙ্গালুরুতে শুরু হচ্ছে এশিয়া কাপের জন্য ভারতের বিশেষ অনুশীলন শিবির। তারকাখচিত দল থাকলেও মিডল অর্ডার সমস্যা ভাবাচ্ছে কোচ দ্রাবিড়কে (Rahul Dravid)।
চার নম্বর পজিশনে শেষ দুই বছরে আটজনকে ব্যবহার করেছে দল, কিন্তু বিশেষ সাফল্য পান নি কেউই। একই সমস্যা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার নিয়েও। এরপর রয়েছে চোট-আঘাত। ঋষভ পন্থ, শ্রেয়স আইয়ার, কে এল রাহুল-রা চোটের কারণে এখনও দলের বাইরে। জসপ্রীত বুমরাহ এবং প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা সবে দলে ফিরেছেন। এমতাবস্থায় আদৌ পূর্ণশক্তির দল ভারত পাবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপ দুই টুর্নামেন্টই হচ্ছে উপমহাদেশে। ব্যাটিং শক্তিশালী থাকা একান্ত প্রয়োজন তাই। টিম ইন্ডিয়ার মধ্যক্রমের জটিলতা কাটাতে আসরে নামলেন সন্দীপ পাতিল (Sandeep Patil), রবি শাস্ত্রী এবং এম এক কে প্রসাদ (MSK Prasad)।
Read More: IRE vs IND: ফর্ম উধাও তিলক বর্মা’র ব্যাটে, দ্বিতীয় টি-২০’তেও দ্রুত ফিরতে হলো সাজঘরে !!
ওপেনার ঈশান, রোহিত শর্মাকে ছাড়তে হচ্ছে জায়গা-
এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের সম্ভাব্য দল নিয়ে স্টার স্পোর্টসের অনুষ্ঠানে ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে দীর্ঘ সময় কাটাছেঁড়া করতে শোনা গেলো রবি শাস্ত্রী (Ravi Shashtri), এম এস কে প্রসাদ এবং সন্দীপ পাতিলকে। বিশেষ করে মিডল অর্ডার যে টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) গত কয়েক মাসে বারবার সমস্যায় ফেলেছে সেই বিষয়ে একমত হন তিন জনেই। সূর্যকুমার যাদব, অক্ষর প্যাটেলদের মত ক্রিকেটারদের চার নম্বরে খেলিয়ে দেখেছে ভারত। কিন্তু থিতু হতে পারেন নি কেউই।
মধ্যক্রমে ভারতের হাল যে দুই ক্রিকেটার ধরতে পারেন, সেই শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) এবং কে এল রাহুল (KL Rahul), দুজনেই বর্তমানে রয়েছেন মাঠের বাইরে। চোট সারিয়ে ফিরলেও কতখানি ম্যাচ ফিট থাকবেন, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সন্দীপ পাতিল। বরং তিনি মনে করেন দলের সিনিয়র তারকাদের ব্যাটিং অর্ডারে খানিক নীচে নামিয়ে এনেই সমস্যার সমাধান করতে পারে টিম ইন্ডিয়া।কে এল রাহুল (KL Rahul) খেললে কেবলমাত্র পাঁচ নম্বর ব্যাটার হিসেবে সমস্যা দূর হয় না, একই সাথে উইকেটরক্ষক সমস্যাও কেটে যায়। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করে রাহুল ১৮ ম্যাচে ৫৩ গড়ে করেছেন ৭৪২ রান। ৭টি অর্ধশতক এবং ১টি শতরান করেছেন তিনি।
তাঁর বদলি হিসেবে ঈশান কিষণ (Ishan Kishan) খেললে তাঁকে ওপেনিং-এ খেলানো ছাড়া গতি নেই বলে মনে করছেন সন্দীপ পাতিল (Sandeep Patil)। সেক্ষেত্রে শুভমান গিল এবং রোহিত শর্মার মধ্যে একজনকে জায়গা ছাড়তে হবে। পাতিলের ভোট রোহিতের দিকেই। তিনি অনুষ্ঠানে বলেন, “আমি মনে করি ঈশান কিষণ খেললে কেবলমাত্র ওপেনিং-এ খেলতে পারে। ওর সাথে শুভমান গিল বা রোহিত শর্মা যেই খেলুক না কেনো। আমরা এই নিয়ে অনেক আলোচনা করেছি। আমি মনে করি রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি এতটাই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, ওরা সহজেই স্থান বদলাতে পারবে।”
মত প্রকাশ করলেন রবি শাস্ত্রীও-
সন্দীপ পাতিলের (Sandip Patil) কথা মত যদি ঈশান কিষণ এবং শুভমান গিল (Shubman Gill) ওপেন করেন আসন্ন এশিয়া কাপে, তাহলে তিন নম্বরে নামার সম্ভাবনা অধিনায়ক রোহিতের (Rohit Sharma)। পরিসংখ্যান বলছে তিন নম্বরে আদৌ সফল নন তিনি। ৯ ম্যাচ খেলে করেছেন ১২৬ রান। ব্যাটিং গড় ১৫। সর্বোচ্চ ২৫। সেক্ষেত্রে এই রদবদল আদৌ ফলপ্রসূ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ থেকেই যায়। অন্যদিকে চার নম্বরে বিরাটের (Virat Kohli) ব্যাট হাতে পরিসংখ্যান বেশ ভালো। ৫৫.২২ ব্যাটিং গড়-সহ ৩৯ ম্যাচে ১৭৬৭ রান করেছেন তিনি। সেক্ষেত্রে শ্রেয়স আইয়ারের জায়গায় তিনিই খেলতে পারতেন শ্রীলঙ্কার মাঠে।
রাহুল (KL Rahul) যদি মাঠে ফিরতে না পারেন সেক্ষেত্রে পাঁচে সূর্যকুমার যাদব বা হার্দিক পান্ডিয়াকে ভেবে দেখতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট।গোটা বিষয়টি নিয়ে মতামত জানিয়েছেন প্রাক্তন ভারতীয় কোচ রবি শাস্ত্রী’ও (Ravi Shastri)। সঞ্চালক যতীন সপ্রু তাঁকেও পছন্দে ব্যাটিং অর্ডার জিজ্ঞেস করেন। তিন নম্বরে ব্যাট করে বিরাট ৬০.২১ ব্যাটিং গড়ে ১০২৭৭ রান করেছেন। সেই কথা মনে করিয়ে দেন তিনি।
সন্দীপ পাতিলের বক্তব্যের রেশ ধরেই শাস্ত্রী বলেন, “দলের প্রয়োজনটাই আগে। ব্যক্তি পরে। যেমনটা সন্দীপ বললো, এই কম্বিনেশনগুলো খুঁজে বের করাই আসল। যে এক নম্বর, দুই নম্বর বা তিন নম্বর পাঁচ বছর আগে ছিলো, তার মানে এই নয় সে সবসময় একই পজিশনে থেকে যাবে। দেখা উচিৎ বর্তমানে কে ছন্দে আছে। কোন খেলোয়াড় এই নির্দিষ্ট পজিশনে খেলতে পারছে,কার কাছে অভিজ্ঞতা রয়েছে সব পজিশনে মানিয়ে নেওয়ার। যেমন রোহিত বা বিরাট। ওদের কাছে মানিয়ে নেওয়া কঠিন নয়, কিন্তু ঈশান কিষণ বা শুভমান গিলের পক্ষে নতুন ভূমিকায় মানিয়ে নেওয়া কঠিন।”