গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শোরগোল পড়ে গিয়েছিলো ভারতের ঈশান কিষণকে (Ishan Kishan) নিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথেই দেশে ফিরেছিলেন তিনি। জানা গিয়েছিলো যে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে বাইশ গজের দুনিয়া থেকে কিছুদিন সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। নিরন্তর প্রত্যাশার চাপ, সংবাদমাধ্যমের স্ক্রুটিনির মুখে থেকে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন ঝাড়খণ্ডের তরুণ ক্রিকেটার। রান পাওয়ার পরেও আচমকা টিম ইন্ডিয়া’র (Team India_ প্রথম একাদশ থেকে বাদ পড়াও ঈশানকে (Ishan Kishan) ঠেলে দিয়েছিলো অবসাদের মুখে। সেই কারণেই সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন তিনি। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে সেই সময় তাঁর আর্জি মঞ্জুর’ও করেছিলো বিসিসিআই।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দেশে ফেরার পর ঈশানের (Ishan Kishan) কার্যকলাপ নিয়ে অবশ্য উঠতে থাকে প্রশ্ন। তিনি বেশ কিছু অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। গিয়েছিলেন দেশের বাইরেও। যা ভালো চোখে দেখে নি বোর্ড। জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের জন্য তাঁকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। কর্ণপাত করেন নি ঈশান (Ishan Kishan) । যা বিপক্ষে যায় তাঁর। শাস্তিস্বরূপ কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। পরে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “আমি খেলার মত মানসিক অবস্থাতেই ছিলাম না। যদি খেলতে পারতাম, তাহলে তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটই খেলতাম।” যদিও তাতে চিঁড়ে ভেজে নি। এখনও দলের বাইরেই আছেন তিনি। মানসিক স্বাস্থ্যের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে যেখানে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে, সেখানে ঈশানের (Ishan Kishan) ঘটনার এহেন পরিসমাপ্তি দুর্ভাগ্যজনক বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।
Read More: নেতৃত্বের দৌড়ে নেই কেএল রাহুল, আরও একবার অধিনায়ক করা হচ্ছে হার্দিককে !!
ঈশানের পথেই হাঁটলেন সৈফুদ্দিন-
গত বছর ঈশান কিষণ (Ishan Kishan) যেমন মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণে সরে দাঁড়িয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে, এবার সেই একই পথে হাঁটতে দেখা গেলো বাংলাদেশের পেস বোলিং অলরাউন্ডার মহম্মদ সৈফুদ্দিনকে ( Mohammad Saifuddin)। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে একটি ই-মেল মারফৎ তিনি জানিয়েছেন যে মাঠে নামার মত মানসিক অবস্থা নেই তাঁর। সেই কারণে দুই মাসের বিরতি চেয়েছেন তিনি। পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা ছিলো তাঁর। ২৭ বছরের ক্রিকেটার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশ-এ দলে। পাকিস্তান শাহীনসদের বিরুদ্ধে একটি চার-দিনের ম্যাচে অংশ নেওয়ার কথা ছিলো সৈফুদ্দিনের ( Mohammad Saifuddin)। বাংলাদেশ সিনিয়র দলের হয়ে ২৯টি একদিনের ম্যাচ ও ৩৮টি টি-২০ খেলা সৈফুদ্দিন নিজের ই-মেল বার্তায় বাংলাদেশের টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়া নিয়েও অসন্তোষ জানিয়েছেন।
বিসিবি’র থেকে কানাডার গ্লোবাল টি-২০ লীগে (GT 20) অংশগ্রহণের ছাড়পত্র বা এনওসি নিয়েছিলেন সৈফুদ্দিন ( Mohammad Saifuddin)। চেয়েছিলেন বিদেশের মাঠে ভালো পারফর্ম্যান্স করতে। কিন্তু বিধি বাম। কানাডার উদ্দেশ্যে উড়ে যাওয়ার ঠিক দুই দিন আগে জিমে শরীরচর্চা করার সময় চোট পান তিনি। ক্রিকেটারকে পূর্বে দেওয়া এনওডি প্রত্যাহার করে নেয় বোর্ড। জানিয়ে দেওয়া হয় যে গ্লোবাল টি-২০ টুর্নামেন্ট খেলতে পারবেন না তিনি। মেল বার্তায় সে নিয়েও নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার হাল বেশ খারাপ। গণ অভ্যুত্থানের পর দেশ ছেড়েছেন সংস্থার প্রধান নাজমুল হাসান পাপন। ফলে সৈফুদ্দিনের ( Mohammad Saifuddin) মেল-বার্তার কি উত্তর তারা দেয় বা আদৌ উত্তর দেয় কিনা তা নিয়ে রয়েছে কৌতূহল।
অনিশ্চিত পাক-বাংলাদেশ সিরিজের ভবিষ্যৎ-
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের যুব দলের ম্যাচের পাশাপাশি সিনিয়র দলেরও দুটি টেস্ট ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিলো রাওয়ালপিণ্ডি ও করাচীর মাঠে। ২১ তারিখ থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিলো সিরিজ। কিন্তু বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন অচলাবস্থার কারণে উপমহাদেশের দুই ক্রিকেটীয় শক্তির দ্বিপাক্ষিক টেস্ট সিরিজ পড়েছে সংকটে। গণ অভ্যুত্থানের পর থেকেই অশান্ত বাংলাদেশ। দেশ ছেড়েছেন আওয়ামি লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। চেষ্টা চলছে নিয়মশৃঙখলা ফেরানোর। কিন্তু এর মধ্যেই অগ্নিসংযোগ, সংখ্যালঘু নির্যাতন, খুনের মত খবর সামনে আসছে। এই পরিস্থিতিতে শাকিব, শান্ত’রা কিভাবে পাকিস্তানে পা রাখবেন তা অনিশ্চিত। পাক বোর্ডের তরফে যাতায়াতে সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা সত্ত্বেও খেলা যে হবেই তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।