“ছেলের ওপর প্রত্যাশার চাপ দেবেন না…” পুত্র অর্জুনের রঞ্জি সাফল্যে নিয়ে আলোচনায় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন শচীন তেন্ডুলকর !! 1

বিখ্যাত পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করা সবস্ময় সহজ হয় না পুত্রের পক্ষে। তার ওপর পিতার নাম যদি হয় শচীন তেন্ডুলকর, তাহলে তো কথাই নেই আর। প্রতি মুহূর্তে ক্রিকেট ঈশ্বর পিতার সাথে তুলনা চলতে থাকলে পুত্রের অর্জুনের ক্রিকেট কেরিয়ার যে ক্ষতির মুখে পড়বে তা বিলক্ষণ জানেন শচীন নিজেও। তাই পারতপক্ষে অর্জুনের ক্রিকেত সম্পর্কে তাঁকে বিশেষ আলোচনা করতে দেখা যায় না। তবে সম্প্রতি খবরের শিরোনামে উঠে এসছেন অর্জুন। নিজের রঞ্জি ট্রফি অভিষেকেই শতরান করেছেন তিনি। সমাজমাধ্যম ভরছে অর্জুনের প্রশংসায়। পুত্রের কেরিয়ার নিয়ে তাই আর প্রশ্ন এড়াতে পারলেন না ‘মাস্টার ব্লাস্টার।’ তবে খুশি হলেও এখনো অনেক দূর পথচলা বাকি পুত্রের, এমনটাই জানালেন শচীন। এর আগে অর্জুনের দিদি সারা তেন্ডুলকরও ভাইকে শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

 প্রথম ম্যাচেই পিতার রেকর্ড ছুঁলেন অর্জুন-

sachin Tendulkar | image: twitter

মুম্বইয়ের ঘরোয়া ক্রিকেট দলে জায়গা পাচ্ছিলেন না অর্জুন। নিয়মিত ক্রিকেট খেয়ার লক্ষ্যে বাধ্য হয়েই যোগ দিতে হয়েছে গোয়ায়। আইপিএলে অর্জুনকে দলে রাখলেও দুই বছরে একটি ম্যাচেও খেলার সুযোগ দেয় নি মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। কেবলমাত্র তেন্ডুলকর নামের জন্য দলে রয়েছেন অর্জুন, এমন অপবাদও শুনতে হচ্ছিলো তাঁকে। গোয়ার জার্সিতে মাঠে নেমে সবকিছুর যেন জবাব দিলেন বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার । বিজয় হাজারে ট্রফিতেও বল হাতে দলকে জয় এনে দিতে দেখা গিয়েছিলো তাঁকে। এবার নিজের রঞ্জি অভিষেকে শতরান করে সাড়া ফেলে দিলেন তিনি। ছুঁলেন পিতা শচীন তেন্ডুলকরকে। ১৫ বছর বয়সী শচীনও ১৯৮৮ সালে মুম্বইয়ের হয়ে নিজের রঞ্জি ট্রফির প্রথম ম্যাচে শতরান করেছিলেন। কিংবদন্তী হওয়ার পথে প্রথম ধাপ পেরিয়েছিলেন সেদিন। একই কাজ করে দেখালেন অর্জুনও। রাজস্থানের বিরুদ্ধে ১২০ রান এলো তাঁর ব্যাট থেকে। ২০৭ বলের ইনিংসে অর্জুন মেরেছেন ১৬ টি চার এবং ২ টি ছক্কা। স্ট্রাইক রেট ৫৭.৯৭। ব্যাটিং-এ নিজের জাত চেনানোর পর বল হাতেও সাফল্যের সরণীতে শচীন পুত্র। বাঁ-হাতি পেসের ধাক্কা ভালোই অনুভব করলো রাজস্থান। ৩ উইকেট নিলেন তিনি।

বেড়ে ওঠা সহজ ছিলো না অর্জুনের, জানালেন শচীন-

Arjun Tendulkar | image: Twitter

রঞ্জি ট্রফিতে প্রথম ম্যাচেই শতরান করার পর সারা দেশের অভিনন্দনে এখন ভাসছেন অর্জুন। তার সাথে সাথে অর্জুনের থেকে জনতার আশা আকাঙ্খা যে কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে তা বিলক্ষণ জানেন শচীন। ছোতোখাটো ব্যর্থতাতেই হয়ৎ দাঁত নখ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে নিন্দুকদের দল। তাই পুত্রের ওপর প্রত্যাশার চাপ কমাতে অনুরোধ জানালেন তিনি। এক অনুষ্ঠানে ছেলের ক্রিকেট কেরিয়ার নিয়ে বলতে গিয়ে ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ বলেন, “ অর্জুনের বেড়ে ওঠাটা স্বাভাবিক ছিলো না। একজন ক্রিকেটার যে দীর্ঘদিন ধরে পেশাদার ক্রিকেটের সাথে জড়িত, তাঁর সন্তান হওয়াটা সহজ নয়। অবসর নেওয়ার পর মুম্বইতে আমি যখন সন্মানিত হচ্ছিলাম, আমি একতাই কথা বলেছিলাম, আমি চেয়েছিলাম যে অর্জুনকে যাতে ক্রিকেটটা উপভোগ করতে দেওয়া হয়। ওকে প্রাপ্য সুযোগটুকু যেন দেওয়া হয়। তারপর পারফর্ম্যান্সের ভিত্তিতে বিচার হোক। ওর ওপর প্রত্যাশার চাপ বাড়াবেন না। কারণ আমি নিজে বেড়ে ওঠার সময় বাবা-মায়ের থেকে কোনো রকম চাপ অনিভব করি নি।”

দেখে নিন সাক্ষাৎকারটি-

আরও বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে অর্জুনের জন্য-

রঞ্জি ট্রফিতে শতরান করে ছেলে যাতে আবেগে গা না ভাসায় তা নিয়েও সতর্ক করেছেন শচীন। তিনি জানিয়েছেন, “আমার বাবা-মা আমায় পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। যাতে আমি নিজের মত করে খেলতে পারি। আমার মাথার ওপরে কোনো রকম প্রত্যাশার চাপ ছিলো না। আমায় কেবল ও&নারা সমর্থন যুগিয়ে গিয়েছেন আর কি করে আরও ভালো করতে পারি বাইশ গজে, তার পরামর্শ দিয়ে গিয়েছেন। নিজের ছেলের জন্যও আমি তাই করতে চাই। আমি অর্জুনকে সবসময় বলি যে জীবনে আরও অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করে আছে ওর জন্য।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *