২০২১ সালে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি এবি ডি ভিলিয়ার্স (AB de Villiers)। প্রায় চার বছর পর বাইশ গজে প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সংস্করণে সাউথ আফ্রিকা চ্যাম্পিয়ন্স দলের জার্সিতে মাঠে নেমেছেন ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রী।’ ব্যাটিং দক্ষতায় যে মরচে ধরে নি তার প্রমাণ ডিভিলিয়ার্স দিয়েছেন গত বারের খেতাবজয়ী দল ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়ন্সের বিপক্ষে। মাত্র ৩০ বলে ধুন্ধুমার ৬৩ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। তাঁর ব্যাট থেকে দেখা গিয়েছে ট্রেডমার্ক সব চোখধাঁধানো শট। বয়স থাবা বসায় নি তাঁর ফিটনেসেও। যেভাবে বাউন্ডারি লাইনের ধারে ইউসুফ পাঠানের ক্যাচ তালুবন্দী করেছেন, তা চমকে দিয়েছে সকলকে। WCL খেলাকালীনই এক সাক্ষাৎকারে সর্বকালের সেরা একাদশ বেছে নিয়েছেন এবিডি (AB de Villiers)। ভারত থেকে রেখেছেন দু’জনকে।
Read More: পন্থের চোটে কপাল খুললো এই তারকা’র, দুই বছর পর ফিরছেন ভারতীয় স্কোয়াডে !!
কোহলি থাকলেও এবিডি’র দলে নেই শচীন-

ইংল্যান্ডে বসেছে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অফ লেজেন্ডস (WCL) টুর্নামেন্টের আসর। খেলার ফাঁকে এক সাক্ষাৎকারে সর্বকালের সেরা একাদশ বেছে নিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি এবি ডি ভিলিয়ার্স (AB de Villiers)। ওপেনিং জুটি হিসেবে তাঁর পছন্দ স্বদেশীয় গ্রেম স্মিথ (Greame Smith) ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথু হেডেন। কেরিয়ার জুড়েই আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে ভরসা রেখে এসেছেন ডি ভিলিয়ার্স নিজে। সেই কারণেই সম্ভবত দুই আগ্রাসী বাম হাতি’কে বেছে নিয়েছেন ওপেনার হিসেবে। তিন নম্বরে তাঁর পছন্দ আরেক অস্ট্রেলীয় তারকা রিকি পন্টিং (Ricky Ponting)। চারে ডি ভিলিয়ার্স জায়গা দিয়েছেন বিরাট কোহলি’কে (Virat Kohli)। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে দীর্ঘদিন সাজঘর ভাগ করে নিয়েছেন দুই তারকা। বহু ম্যাচে বাইশ গজে জুটি গড়তে দেখা গিয়েছে তাঁদের দু’জন’কে। শ্রেষ্ঠ একাদশ বেছে নেওয়ার সময়েও ‘বন্ধু’ বিরাটকে ভুলতে পারেন নি প্রোটিয়া প্রাক্তনী।
পাঁচ ও ছয়ে ডি ভিলিয়ার্স (AB de Villiers) রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ (Steve Smith) ও নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসন’কে। সাত নম্বরে তাঁর পছন্দ মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে তাঁর পরিসংখ্যান চমকপ্রদ। সাথে অধিনায়ক হিসেবে ধোনি’র প্রশ্নাতীত দক্ষতাও তাঁকে জায়গা করে দিয়েছে এবিডি’র পছন্দের একাদশে। দুই পেসার ও দুই স্পিনারে ছক সাজিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা। ফাস্ট বোলার হিসেবে তাঁর পছন্দ অস্ট্রেলিয়ার মিচেল জনসন (Mitchell Johnson) ও পাকিস্তানের বিতর্কিত তারকা মহম্মদ আসিফ। আর ঘূর্ণি বোলিং-এর ক্ষেত্রে তিনি আস্থা রেখেছেন শ্রীলঙ্কার মুথাইয়া মুরলীধরণ ও অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্নের উপর। ডি ভিলিয়ার্সের এই একাদশ ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের মালিক শচীন তেন্ডুলকর’কে (Sachin Tendulkar) ছাড়া যে কোনো শ্রেষ্ঠ একাদশ অসম্পূর্ণ, সওয়াল করেছেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার’ অনুরাগীরা।
এক নজরে ডি ভিলিয়ার্সের সেরা এগারো-
ম্যাথু হেডেন, গ্রেম স্মিথ, রিকি পন্টিং, বিরাট কোহলি, স্মিথ স্মিথ, কেন উইলিয়ামসন, মহেন্দ্র সিং ধোনি, মিচেল জনসন, শেন ওয়ার্ন, মহম্মদ আসিফ, মুথাইয়া মুরলীধরণ।
দেখুন ডি ভিলিয়ার্সের সাক্ষাৎকার-
এবি ডি ভিলিয়ার্সের পরিসংখ্যান-

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১১৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স (AB de Villiers)। ৫০.৬৬ গড়ে তিনি করেছেন ৮৭৬৫ রান। ২২টি শতরান ও ৪৬টি অর্ধশতক এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। সাদা বলের ক্রিকেটেও সর্বকালের সেরাদের তালিকায় থাকবেন এবিডি। তিনি ২২৮টি একদিনের ম্যাচ খেলে করেছেন ৯৫৭৭ রান। গড় ৫৩.৫০। শতরানের সংখ্যা ২৫, পঞ্চাশের মাইলস্টোন পেরিয়েছেন ৫৩ বার। স্ট্রাইক রেট ১০১.০৯। আন্তর্জাতিক ওয়ান ডে’র ইতিহাসে দ্রুততম শতকটি মালিক ডি ভিলিয়ার্সই (AB de Villiers)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মাত্র ৩১ বলে ছুঁয়ে ফেলেছিলেন তিন অঙ্কের মাইলস্টোন। ৭৮টি আন্তর্জাতিক টি-২০তে তিনি করেছেন ১৬৭২ রান। রয়েছে ১০টি অর্ধশতক। আইপিএলের দুনিয়াতেও সুপারস্টার ডি ভিলিয়ার্স। কেরিয়ার শুরু করেছিলেন দিল্লীর হয়ে। কিন্তু বেঙ্গালুরুতেই তারকা হয়ে ওঠেন তিনি। ১০৪ ম্যাচে করেছেন ৫১৬২ রান। শতরান ৩টি, হাফ-সেঞ্চুরির সংখ্যা ৪০।