১৯৮৯ থেকে ২০১৩-দীর্ঘ ২৪ বছর আসমুদ্র হিমাচলকে নিজের ব্যাটিং-এর জাদুতে মাতিয়ে রেখেছিলেন যে মানুষটি, তিনি শচীন রমেশ তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar)। পাকিস্তানের মাঠে প্রথমবার নেমেছিলেন টিম ইন্ডিয়ার জার্সি গায়ে চাপিয়ে। মুম্বইতে যখন দাঁড়ি টানেন কেরিয়ারে, তখন তাঁর নামের পাশে ২০০ টেস্ট ও ৪৬৩টি একদিনের ম্যাচ। ঝুলিতে প্রায় ৩৫০০০ রান, ১০০টি শতরান। বিশ্বকাপ জিতেছেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছেন। এমনকি আইপিএলের পদকও রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। শচীনের আগে ও পরে একঝাঁক কিংবদন্তি তারকা গায়ে চাপিয়েছেন ভারতের জার্সি। কিন্তু তাঁর মত জাতীয় পরিচয়ের অংশ সম্ভবত হয়ে উঠতে পারেন নি কেউই। সেই কারণেই অবসরের এত বছর পরেও অটুট তাঁর আবেদন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া রেডিটে একটি প্রশ্নোত্তর পর্ব আয়োজন করেছিলেন তিনি। আট থেকে আশি-সব বয়সী নেটিজেনরা ভীড় জমিয়েছিলেন সেখানে।
Read More: ভক্তদের জন্য দারুণ খবর, টিকিট ছাড়াই দেখা যাবে এশিয়া কাপের ম্যাচ !!
অনুরাগীর সাথে মস্করা শচীনের-

রেডিটে সত্যিই অনুরাগীদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন ক্রিকেট কিংবদন্তি? বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না এক অনুরাগী। তিনি প্রশ্ন করেন, “আপনি কি সত্যিই শচীন তেন্ডুলকর?” স্বভাবসিদ্ধ রসিকতার ঢঙেই উত্তর দিয়েছেন ‘ক্রিকেট ঈশ্বর।’ তাঁর ছোঁট্টো জবাব, “আমি কি আধার কার্ড দেখাব?” নিজের কেরিয়ার ও ব্যক্তিগত জীবনের নানা অজানা দিকও রেডিটে অনুরাগীদের সামনে মেলে ধরেছেন শচীন (Sachin Tendulkar)। এক ক্রিকেটপ্রেমী তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন ২০০০-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সেমিফাইনাল প্রসঙ্গে। সেদিন নাইরোবির মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে রণংদেহী মেজাজে দেখা গিয়েছিলো ভারতীয় তারকাকে। বিশেষ করে গ্লেন ম্যাকগ্রাকে নিশানা করেছিলেন তিনি। পূর্বপরিকল্পিত ছিলো সেই সিদ্ধান্ত, জানিয়েছেন শচীন (Sachin Tendulkar)। বলেছেন, “মাঝেমধ্যে আমি জেনেশুনেই ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতাম প্রতিপক্ষ বোলারের ছন্দ নষ্ট করার জন্য।”
২০১১’র বিশ্বকাপ ফাইনালে যুবরাজ সিং-এর আগে মহেন্দ্র সিং ধোনি’কে (MS Dhoni) ব্যাট করার নামার পরামর্শ দিয়েছিলেন শচীন (Sachin Tendulkar)। শেষমেশ ধোনি’র ছক্কাকেই ২৮ বছরের খরা কাটিয়ে ঘরে আসে বিশ্বকাপ। ‘মাস্টারস্ট্রোকের’ বিশ্লেষণও করেছেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার।’ “দু’টো কারণ ছিলো। ডান হাতি-বাম হাতি জুটি প্রতিপক্ষের স্পিনারদের চাপে রাখত। আর (মুথাইয়া) মুরলীধরণ বোলিং করছিলেন। চেন্নাই সুপার কিংসের নেটে ৩ বছর ওকে খেলার অভিজ্ঞতা ছিলো (এম এস) ধোনি’র।” ক্যারিবিয়ান আম্পায়ার স্টিভ বাকনর কতবার যে তাঁকে ভুল আউট দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই। তাঁকেও গতকাল খোঁচা দিয়েছেন শচীন (Sachin Tendulkar)। বলেন, “আমি ব্যাট করলে ওনাকে বক্সিং গ্লাভস দেওয়া উচিৎ। (যাতে আঙুল তুলতে না পারেন।” ক্রিকেটার না হলে টেনিস প্লেয়ার হতেন, স্বীকারোক্তি তাঁর।
অর্জুনের বাগদান নিয়ে মুখ খুললেন শচীন-

ক্রিকেট মাঠগুলির মধ্যে লর্ডসে যে সেরা লাঞ্চ পাওয়া যায় তা অনুরাগীদের জানিয়েছেন শচীন (Sachin Tendulkar)। মুখ খুলেছেন ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও। ট্র্যাভেল ডেস্টিনেশন স্থির করার দায়িত্ব স্ত্রী অঞ্জলির (Anjali Tendulkar), অকপটে জানিয়েহেন তিনি। পিতা শচীনের (Sachin Tendulkar) মতই ক্রিকেটকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন পুত্র অর্জুন তেন্ডুলকর (Arjun Tendulkar)। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর মিলেছিলো যে উদ্যোগপতি রবি ঘাইয়ের নাতনি সানিয়া চন্দোকের সাথে বাগদান সেরেছেন বছর ২৫-এর তরুণ। গতকালের প্রশ্নোত্তর পর্বে সেই খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিলেন শচীন স্বয়ং। কাইন্ড_প্লাম১৬৯ নামে এক রেডিট ইউজার তাঁকে প্রশ্ন করেন, “অর্জুন কি সত্যিই বাগদান সেরেছেন?” উত্তরে ক্রিকেট কিংবদন্তি জানান, “হ্যাঁ। ওর জীবনের এই নতুন অধ্যায় নিয়ে আমরা সকলেই খুব উত্তেজিত।”