IPL 2025: গত বছরের চ্যাম্পিয়ন দল কলকাতা নাইট রাইডার্স উদ্বোধনী ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে হারের সম্মুখীন হয়ে সমর্থকদের হতাশ করেছিলেন। আজ ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে নাইট বাহিনী রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে মাঠে নামে। প্রথম ইনিংসে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে। সুনীল নারিনকে ছাড়াই এই সিদ্ধান্তকে সফল প্রমাণ করেন নাইট বোলিং আক্রমণ। মঈন আলী, বরুণ চক্রবর্তীরা রাজস্থানের প্রথম ইনিংস মাত্র ১৫১ রানে থামিয়ে দেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ভরসা হয়ে ওঠেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। তার দুরন্ত ৯৭ রানে এই বছর আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ৮ উইকেটে প্রথম জয় পেল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
১) ব্যাট হাতে ব্যর্থ সঞ্জু ও জয়সওয়াল-

গুয়াহাটিতে আজ প্রথম ইনিংসে রাজস্থানের হয়ে ওপেনিং করতে আসেন সঞ্জু স্যামসন এবং যশস্বী জয়সওয়াল। গত ম্যাচে সঞ্জুর ব্যাট থেকে দুরন্ত অর্ধশতরান এসেছিল। কিন্তু আজ ম্যাচের শুরুতেই বৈভব অরোরা সঞ্জু স্যামসনের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি তুলে নেন। মাত্র ১১ বলে ১৩ রানে শেষ হয় এই তারকার ইনিংস। অন্যদিকে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে মাত্র ১ রান করেছিলেন জয়সওয়াল। আজ ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠার চেষ্টা করেন তিনি। তবে মঈন আলীর বলে বড়ো শর্ট খেলতে গিয়ে হর্ষিত রানার হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন জয়সওয়াল। ২৪ বলে ২৯ রান করে মাঠ ছাড়েন এই ওপেনার।
২) ঘরের মাঠে হতাশ করলেন রিয়ান পরাগ-

সঞ্জু স্যামসন আউট হয়ে যাওয়ার পর গুয়াহাটিতে ঘরের মাঠে রিয়ান পরাগ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে মাঠে নামেন। ৩ টি দুরন্ত ছয় হাঁকিয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনেন তিনি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময় এই তরুণ অধিনায়কও দলের স্কোরবোর্ড বেশি দূরে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। বরুণ চক্রবর্তীর ঘূর্ণি বলে উইকেটকিপার কুইন্টন ডি কককে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন। রিয়ানের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ১৫ বলে ২৫ রান।
৩) পুরোনো দলের বিপক্ষে রান পেলেন না নীতিশ-
দীর্ঘদিন নাইট রাইডার্সের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার পর এই বছর মেগা নিলামের মাধ্যমে রাজস্থান রয়্যালসে জায়গা পেয়েছেন নীতিশ রানা। আজ নতুন জার্সিতে কেকেআরদের বিপক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে জবাব দেবেন বলে ভক্তরা মনে করছিলেন। কিন্তু মাত্র ৯ বলে ৮ রান করে আউট হয়ে দলকে আরও চাপের মুখে ফেলে দেন। বল হাতে সরাসরি নীতিশের উইকেট উড়িয়ে দেন অভিজ্ঞ স্পিনার মঈন আলী।
৪) বরুণ চক্রবর্তীর প্রত্যাবর্তন-
উদ্বোধনী ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে চার ওভারে ৪৩ রান দিয়ে মাত্র একটি উইকেট সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন বরুণ। তবে আজ রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে চেনা ছন্দে ফিরলেন এই নাইট তারকা। গুয়াহাটির পিচে রিয়ান পরাগের সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কান তারকা অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার গুরুত্বপূর্ণ উইকেট সংগ্রহ করেন তিনি। ৪ ওভারে এই তারকা স্পিনার খরচ করেছেন মাত্র ১৭ রান।
৫) হাল ধরার চেষ্টা করেন ধ্রুব জুরেল-
একের পর এক উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় রাজস্থান রয়্যালস। মাত্র ৮২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। নিচের দিকে ব্যাট করতে নেমে শিমরন হেটমায়ার মাত্র ৭ রানে ড্রেসিংরুমে ফেরেন, জোফ্রা আর্চারের ব্যাট থেকে আসে ১৬ রান। এইরকম গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে ধ্রুব জুরেল ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে দলকে ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি ২৮ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩ রান করেছিলেন।
৬) নাইট জার্সিতে মাঠে নেমেই চমক মঈনের-

মেগা নিলামে এই বছর আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সে এসেছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মঈন আলী। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন সফল দল চেন্নাই সুপার কিংসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। আজ নাইটদের একাদশে জায়গা পেয়ে বল হাতে প্রথম ইনিংসে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন মঈন। আজ ৪ ওভারে মাত্র ২৩ রান দিয়ে জয়সওয়াল এবং নীতিশ রানার উইকেট সংগ্রহ করেন তিনি। এছাড়াও নাইটদের হয়ে ২ টি করে উইকেট পেয়েছেন বৈভব অরোরা এবং হর্ষিত রানা। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ওপেনিং করতে নেমে মঈন আলী ১২ বলে মাত্র ৫ রানে দুর্ভাগ্যবশত রান আউট হয়ে যান।
৮) কুইন্টন ডি ককের ম্যাচ জয়ী ইনিংস-

লখনউ সুপার জায়ান্টস ছেড়ে দেওয়ার পর মেগা নিলামে কলকাতা নাইট রাইডার্স কুইন্টন ডি কককে দলে তুলে নেয়। ইডেন গার্ডেন্সে অভিষেক ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে মাত্র চার রানে আউট হন এই দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা। তবে আজ মঈন আলী আউট হয়ে যাওয়ার পর ওপেনিং করতে নেমে একাই দলের স্কোরবোর্ড এগিয়ে নিয়ে যান তিনি। ৬১ বলে তার ব্যাট থেকে এসেছে অপরাজিত ৯৭ রান। নিজের ব্যাটিং ইনিংসে ৮ টি চার এবং ৬ টি ছয় মারেন কুইন্টন ডি কক। অঙ্গকৃষ রঘুবংশীর সঙ্গে জুটি বেঁধে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান তুলে নেন নাইট ওপেনার। অঙ্গকৃষ ১৭ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন।