ভারতীয় ক্রিকেট দলের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) শুধু মাঠের পারফরম্যান্সের জন্য নয়, সামাজিক ও পরিবেশবান্ধব কাজের জন্যও সমাদৃত। তাঁর স্ত্রী রীতিকা সাজদেহও ঠিক তেমনই সংবেদনশীল এবং প্রাণপ্রেমী। দাম্পত্য জীবনে তাঁরা দু’জনেই একে অপরের কাজের প্রতি সহায়ক, বিশেষ করে প্রাণীদের সুরক্ষা ও কল্যাণের ক্ষেত্রে। সম্প্রতি দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলের পথকুকুরদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশনার বিরোধিতা করে রোহিত পত্নী রীতিকা যে বয়ান দিয়েছেন, তা প্রমাণ করে এই দম্পতি শুধু জনপ্রিয় মুখই নন, বরং সামাজিক বিষয়েও সরব কণ্ঠস্বর।
পথ কুকুর নিয়ে নয়া রায় দিলো সুপ্রিম কোর্ট

দিল্লি ও এনসিআর এলাকায় পথকুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক সংক্রমণ এবং তার ফলে মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোমবার সুপ্রিম কোর্ট কঠোর নির্দেশ জারি করেছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, প্রশাসনকে অবিলম্বে সব পথকুকুর ধরতে হবে। তাদের নির্বীজকরণ করিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করেও এই অভিযান চালানো যাবে। এছাড়া, কেউ যদি এই প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়, তবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আদালতের মতে, মানুষের নিরাপত্তা এবং জলাতঙ্কের বিস্তার রোধে এই পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
Read More: বিহারের ছেলে ঈশান কিষাণের সঙ্গে আবারও অবিচার, এশিয়া কাপের দল থেকে পড়লেন বাদ !!
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, নির্দেশ কার্যকর করতে স্থানীয় পৌর সংস্থা ও প্রাণী কল্যাণ দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে অভিযান শুরু হতে পারে খুব শিগগিরই।দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলের পথকুকুরদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার স্ত্রী রীতিকা সাজদেহ। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, এলাকার সমস্ত পথকুকুরকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে নির্বীজকরণ ও টিকাদান করাতে হবে। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রীতিকা আবেগপ্রবণ একটি বার্তা দিয়েছেন।
কোর্টের রায়ের বিরোধিতা করলেন রোহিত পত্নী

নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রীতিকা লিখেছেন, “তাদের কেউ কেউ ‘হুমকি’ বলে ডাকে, কিন্তু আমাদের কাছে তারা জীবনের স্পন্দন।” তিনি আরও জানান, এই প্রাণীগুলির স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া সমাধান নয়। তিনি লিখেছেন, “যে সূর্যের আলোতে তারা প্রতিদিন সকালে আনন্দে দাঁড়ায়, সেই স্বাধীনতা যদি কেড়ে নেওয়া হয়, তবে তারা চেনা মুখ, চেনা জায়গা সব হারাবে।”
রীতিকা স্বীকার করেছেন, অনেক সময় পথকুকুর আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে এবং মানুষের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তবে তাঁর মতে, পুরো প্রাণী সম্প্রদায়কে খাঁচায় বন্দি করা সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়। বরং নির্বীজকরণ, নিয়মিত টিকাদান, নিরাপদ খাওয়ার জায়গা তৈরি এবং দত্তক গ্রহণকে উৎসাহ দেওয়ার মতো পদক্ষেপ নিলে পরিস্থিতি অনেক ভালো হবে।
তিনি সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “যে সমাজ তার নীরব প্রাণীদের রক্ষা করতে পারে না, সেই সমাজ ধীরে ধীরে তার মানবিকতা হারিয়ে ফেলে। আজ তারা কুকুর, কাল কে হবে তা কি আমরা জানি?” রীতিকার এই পোস্ট মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই তাঁর সহানুভূতি ও দায়িত্ববোধের প্রশংসা করেছেন। তবে কিছু মানুষ মনে করছেন, জননিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কোর্টের এই পদক্ষেপ প্রয়োজনীয়। বিষয়টি ঘিরে নেটিজেনদের মধ্যে এখন তর্ক-বিতর্ক চলছেই। রীতিকার বক্তব্য স্পষ্ট – পথকুকুর শুধু রাস্তায় থাকা প্রাণী নয়, তারা স্থানীয় মানুষের প্রতিদিনের জীবনের অংশ। যে সমাজ এই প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে, সেই সমাজই প্রকৃত অর্থে মানবিক।