২০২৩-এর বিশ্বকাপের পর প্রথমবার যখন বড়সড় রদবদলের পথে হেঁটেছিলো পাকিস্তান ক্রিকেট দল (Pakistan), তখন বাবর আজম’কে (Babar Azam) সরিয়ে টেস্ট নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিলো শান মাসুদের (Shan Masood) হাতে। নতুন অধিনায়কের হাত ধরে সাফল্যের পথে হাঁটবে দল, আশায় ছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু ভুল ভাঙতে দেরী হয় নি বিশেষ। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিলো পাক শিবির। অধিনায়কত্বের প্রথম পরীক্ষাতেই মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন শান মাসুদ (Shan Masood)। পারথ্, মেলবোর্ন ও সিডনি’তে ছিলো তিনটি টেস্ট। ‘ব্যাগি গ্রিন’দের দাপটে মাথা তুলেই দাঁড়াতে পারে নি পাকিস্তান। ৩-০ হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছিলো তাদের।
অস্ট্রেলিয়ায় ধরাশায়ী হওয়ার পর দীর্ঘ সময় টেস্ট খেলে নি পাকিস্তান দল (Pakistan)। অগস্টে ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে লাল বলের বৃত্তে প্রত্যাবর্তন ঘটায় তারা। রাওয়ালপিন্ডিতে দুই ম্যাচের সিরিজেও হতাশাই জুটেছে ‘মেন ইন গ্রিন’-এর ভাগ্যে। প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ডিক্লেয়ার করেও ১০ উইকেটের ব্যবধানে হারে তারা। ঘুরে দাঁড়াতে পারে নি দ্বিতীয় টেস্টেও। ফের হারতে হয়ে ৬ উইকেটে। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি টেস্টেও জয়ের মুখ দেখে নি বাংলাদেশ (Bangladesh)। তারাই কিনা শান মাসুদের দল’কে তাদের ঘরের মাঠে এসে হারিয়ে গেলো ২-০ ফলে। পাঁচটি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান (Shan Masood)। হেরেছেন ১০০ শতাংশ ম্যাচ।
Read More: ‘অবসর নিয়ে নাও…’ দলীপ ট্রফির মঞ্চে ব্যার্থ হতেই সমাজ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়লেন KL রাহুল !!
সাদা বলে হতাশ করেছেন বাবর আজম-
গত বছরের এশিয়া কাপ (Asia Cup) থেকেই নড়বড়ে দেখাচ্ছে পাকিস্তান’কে। ভারতের বিরুদ্ধে বিশাল ব্যবধানে হারের পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারে নি তারা। সুপার ফোর থেকেই ছিটকে যায় পাক শিবির। ওডিআই বিশ্বকাপেও আহামরি পারফর্ম্যান্স করতে পারে নি। টানা ব্যর্থতার দায় চাপানো হয়েছিলো বাবর আজমের (Babar Azam) কাঁধে। সেই সময় পিসিবি তিন ফর্ম্যাটের অধিনায়কত্ব থেকেই সরিয়ে দেয় তাঁকে। টি-২০ নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিলো শাহীন শাহ আফ্রিদির (Shan Masood) হাতে। ওয়ান ডে’তে কে নেতা হচ্ছেন তখনই ঘোষণা করে নি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। অধিনায়ক হিসেবে বাম হাতি পেসারের সময়কাল অবশ্য দীর্ঘ হয় নি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-১ হারতেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিলো তাঁকে।
শাহীন’কে (Shahenn Shah Afridi) ছাঁটাই করার পর পিসিবি প্রধান মহসীন নকভি (Mohsin Naqvi) ফের একবার আস্থা রাখেন বাবর আজমের (Babar Azam) উপর। টি-২০ ও ওডিআই’তে নতুন অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয় তাঁর নাম। টি-২০ বিশ্বকাপের কথা ভেবে অভিজ্ঞ অধিনায়ককেই পুর্নিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু লাভ হয় নি কোনো। ভারতের বিরুদ্ধে লজ্জার পরাজয়, এমনকি ক্রিকেটদুনিয়ায় অপেক্ষাকৃত নতুন মুখ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও সুপার ওভারে হারে পাকিস্তান (Pakistan)। গ্রুপ পর্ব পেরোতে না পেরে বিদায় নেয় টুর্নামেন্ট থেকে। লজ্জার বহর বাড়ে দলের উপর। প্রশ্ন উঠেছিলো বাবরের (Babar Azam) অধিনায়কত্ব নিয়ে।
পাকিস্তানের অধিনায়ক হচ্ছেন রিজওয়ান-
শান মাসুদ (Shan Masood) ও বাবর আজম-নেতা হিসেবে দু’জনের পারফর্ম্যান্সেই বিরক্ত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। আগামী মাসের ৭ তারিখ থেকে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট রয়েছে দলের। বছর দুয়েক আগে বেন স্টোকসের দল হোয়াইটওয়াশ করে গিয়েছিলো পাক শিবিরকে। ঘুরে দাঁড়াতে এবার মরিয়া মহসীন নকভি’রা। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে যে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নামার আগেই সরানো হবে শান মাসুদ’কে। আতসকাঁচের নীচে বাবর আজম’ও। নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাচ্ছে পাকিস্তান (Pakistan)। সেখানে তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও তিনটি টি-২০ খেলবে তারা। কামিন্স, স্মিথদের দেশে উড়ে যাওয়ার আগে সরানো হতে পারে বাবরকেই। আর ভিন্ন ফর্ম্যাটে ভিন্ন অধিনায়কের পরীক্ষানিরীক্ষার পথে হাঁটবে না পড়শি দেশের ক্রিকেট সংস্থা। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর যে তিন ফর্ম্যাটেই নেতা বেছে নেওয়া হতে পারে মহম্মদ রিজওয়ান’কে (Muhammad Rizwan)।
Also Read: কাব্য মারানের হৃদয় ভাঙলেন অধিনায়ক, KKR দলে নিচ্ছেন এন্ট্রি !!