নতুন প্রজন্মের ব্যাটারদের মধ্যে প্রতিভার নিরিখে অন্যতম সেরা পৃথ্বী শ (Prithvi Shaw)। স্কুল ক্রিকেটের আঙিনায় শচীন তেন্ডুলকরের রেকর্ড ভেঙে প্রথমবার লাইমলাইটে এসেছিলেন মুম্বইয়ের ক্রিকেটার। ২০১৮ সালে অধিনায়ক হিসেবে জেতেন অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ। সেই বছরই এসেছিলো জাতীয় দলের ডাক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেকেই শতরান করেছিলেন পৃথ্বী (Prithvi Shaw)। এরপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। চোট-আঘাত ও মাঠের বাইরে নানা সমস্যায় জড়িয়ে পড়া পৃথ্বীর আর মহাতারকা হয়ে ওঠা হয় নি। ২০২১-এর পর থেকে জাতীয় দলেও আর সু্যোগ পান নি তিনি। কিন্তু মাঝেমধ্যেই ঘরোয়া ক্রিকেটের আঙিনায় রেখেছেন নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর। তেমনই একটি ইনিংস এসেছিলো ২০২১ সালের বিজয় হাজারে ট্রফিতে। জয়পুরের মাঠে জ্বলে উঠেছিলেন পৃথ্বী।
Read More: IND vs AUS 4th Test Preview: মেলবোর্নে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ ভারতের, জয়ই ‘পাখির চোখ’ অস্ট্রেলিয়ার !!
দুর্ধর্ষ দ্বিশতক পৃথ্বী’র ব্যাটে-
বিজয় হাজারে ট্রফির পণ্ডিচেরীর বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলো পৃথ্বী শ-এর (Prithvi Shaw) মুম্বই। গ্রুপ-ডি’র ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেয় পণ্ডিচেরী। বেশীদূর এগোতে পারে নি মুম্বইয়ের ওপেনিং জুটি। ১৬ বলে ১০ করেই সাজঘরে ফেরেন যশস্বী জয়সওয়াল। তিন নম্বরে নামা আদিত্য তারে’কে সঙ্গে নিয়ে এরপর ইনিংস গড়ার কাজ শুরু করেন পৃথ্বী শ। সোয়াই মানসিংহ স্টেডিয়ামে রীতিমত ধ্বংসযজ্ঞ চালান তরুণ ব্যাটার। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৩১টি বাউন্ডারি। ৫বার বল মাঠের বাইরে আছড়ে ফেলেন তিনি। লিস্ট-এ ক্রিকেটে দ্বিশতকের নজির বেশী নেই। সেই বিরল মাইলস্টোন’ও স্পর্শ করে ফেলেন পৃথ্বী (Prithvi Shaw)। ওপেন করতে নেমেছিলেন তিনি। ইনিংসের শেষ অবধি তাঁকে আউট করতে পারেন নি পণ্ডিচেরী বোলাররা। ১৫২ বলে ২২৭ করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
পৃথ্বী’র (Prithvi Shaw) পাশাপাশি তিন অঙ্কের মাইলস্টোন পেরোন সূর্যকুমার যাদব’ও। ২২টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ৫৮ বলে তিনি করেন ১৩৩। আদিত্য তারের ব্যাট থেকে আসে ৬৪ বলে ৫৬ রান। পঞ্চাশ ওভারে মুম্বই তোলে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৪৫৭। পর্বতসম এই রান পণ্ডিচেরীর পক্ষে তোলা অসম্ভবই ছিলো। এস কার্তিক, শেল্ডন জ্যাকসনরা ব্যর্থ হতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিলো ম্যাচের দেওয়াল লিখন। অধিনায়ক দামোদরন রোহিত ৬৮ বলে ৬৩ করলেও যথেষ্ট হয় নি তা। শার্দুল ঠাকুর, তুষার দেশপাণ্ডেদের দাপটে মুখ থুবড়ে পড়ে পণ্ডিচেরী ব্যাটিং। ৫ উইকেট নেন প্রশান্ত সোলাঙ্কি। ৩৮.১ ওভারে ২২৪ রানের মধ্যেই প্রতিপক্ষকে অল-আউট করতে সক্ষম হয় মুম্বই। জয়পুরের মাঠে জয় ছিনিয়ে নেয় ২৩৩ রানের ব্যবধানে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য ২০২২ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে আরও একটি লিস্ট-এ দ্বিশতক করেন পৃথ্বী (Prithvi Shaw)।
বাদ পড়েছেন পৃথ্বী শ-
মুম্বইয়ের স্কোয়াড থেকেও ছেঁটে ফেলা হলো পৃথ্বীকে (Prithvi Shaw)। রঞ্জি থেকে বাদ পড়ার পর সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু তারও সদ্ব্যবহার করতে পারলেন না তিনি। ফের বাদ পড়তে হয়েছে বিজয় হাজারে ট্রফির স্কোয়াড থেকে। অফ ফর্মের পাশাপাশি তাঁর উচ্ছৃঙ্খলতা ও ফিটনেস সমস্যা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কর্মকর্তারা। “পৃথ্বীকে খেলাতে গিয়ে প্রতিটি ম্যাচে আমাদের দশজন ফিল্ডার নিয়ে খেলতে হয়েছে। ওকে মাঠে রীতিমত লুকিয়ে রাখতে হত। বল ওর পাশ দিয়ে চলে গেলেও ও বলের কাছে পৌঁছতে পারত না। এমনকি ব্যাটিং-এর সময়েও বলের কাছে পৌঁছতে পারে নি,” PTI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার এক কর্মকর্তা। এছাড়া নৈশজীবনের কারণে নাকি মুম্বই দলের প্র্যাক্টিস সেশনেও প্রায়ই গরহাজির থাকতেই তিনি, খবর সংবাদমাধ্যম সূত্রে।