গুজরাত ক্রিকেট সংস্থা (GCA) থেকে বিশ্ব ক্রিকেটের শীর্ষ আসন-এই বিরাট যাত্রাপথটা মাত্র দেড় দশকে পেরিয়ে এলেন জয় শাহ (Jay Shah)। ২০০৯ সালে জিসিএ-র এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য হয়েছিলেন তিনি। তারপর ২০১৩ সালে সহ-সচিব। বিসিসিআই-এর অন্দরে প্রথম পা রাখেন ২০১৫ সালে। হন ফিনান্স কমিটির সদস্য। এরপর ২০১৯-এ পা সচিবের দায়িত্ব। বর্তমানে দ্বিতীয় দফায় এই আসন সামলাচ্ছেন তিনি। সাথে রয়েছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (ACC) সর্বোচ্চ পদ’ও। এবার সেসব পিছনে ফেলে আইসিসি’র মসনদে বসছেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের গ্রেগ বার্কলে জানিয়ে দিয়েছেন যে ৩০ নভেম্বরের পর আসন আর ধরে রাখতে চান না তিনি। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা ছিলো ২৭ অগস্ট অবধি। জয় শাহের (Jay Shah) বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী না দাঁড়ানোয় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় পরবর্তী সচিব হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
Read More: IPL 2025: এই ক্রিকেটারকে দলে সামিল করলেন কপাল খুলবে RCB’র, কাটবে সতেরো বছরের ট্রফি খরা !!
জয় শাহ’কে ভোট দিলো না পাকিস্তান-
আইসিসি চেয়ারম্যান নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভোটাধিকার রয়েছে ১৬টি দেশের। পূর্বে নিয়ম ছিলো যে নির্বাচিত হওয়ার জন্য কোনো প্রার্থীকে মতদাতাদের দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন পেতেই হবে। সম্প্রতি সেই নিয়মে খানিক বদল এনেছে সর্বোচ্চ ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। বর্তমানে ১৬টি ভোটের ৫১ শতাংশ, অর্থাৎ নয় দেশের সমর্থন পেলেই নির্বাচিত হতে পারেন কোনো প্রার্থী। জয় শাহ’কে (Jay Shah) অবশ্য ভোটাভুটির রাস্তায় হাঁটতে হয় নি। ১৬টি দেশের মধ্যে ১৫ জনের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া শুরু থেকেই পাশে ছিলো তাঁর। শেষমেশ সমর্থন জানিয়েছেন বাকিরাও। ব্যতিক্রম কেবল পাকিস্তান। তারা ভোট দেওয়া থেকেই বিরত থেকেছে। তবে বিসিসিআই সচিবের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থীও দাঁড় করায় নি তারা। তাদের মৌনতাকে সম্মতি ধরে নিয়ে সর্বসম্মিতক্রমেই পরবর্তী চেয়ারম্যান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে জয় শাহ’কে (Jay Shah)।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সরছে পাকিস্তান থেকে ?
পরবর্তী আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে জয় শাহের (Jay Shah) নাম ঘোষিত হওয়ার পর চাপ বেড়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের উপর। ক্রিকেটদুনিয়ার শীর্ষপদের দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতীয় প্রশাসকের প্রথম বড় টুর্নামেন্ট হতে চলেছে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025)। আর তা নিয়েই চিন্তায় পিসিবি। আইসিসি ইভেন্ট ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পাকিস্তানেই টুর্নামেন্টের আসর বসার কথা। সেইমত প্রস্তাবিত গ্রুপ বিন্যাস ও খসড়া সূচিও ইতিমধ্যে জমা করেছেন মহসীন নকভি’রা। ভারত-পাকিস্তানকে রাখা হয়েছে একই গ্রুপে। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে চেয়ে আবেদন করছে পাক বোর্ড। কিন্তু বেঁকে বসেছে টিম ইন্ডিয়া। তারা পড়শি দেশে না যেতে চেয়ে চাপ বাড়িয়েছে সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার উপর।
বিসিসিআই সচিব হিসেবে গত বছর এশিয়া কাপের (Asia Cup 2023) সময়ও ওয়াঘা সীমান্ত যাতে না পেরোতে হয় তা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন জয় শাহ (Jay Shah)। এখন তিনিই আইসিসি’র শীর্ষপদে বসায় লাহোরের মাটিতে ভারতকে খেলতে দেখার সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে চলেছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। ভারত-পাক দ্বৈরথ দেশে আয়োজন করতে না পারলে বিনিয়োগ টানতে যে বড়সড় সমস্যায় পড়বে পিসিবি, তা নিশ্চিত। ভোটদানে বিরত থেকেও নিজেদের ক্ষতি করলো পাক সংস্থা, চলছে তেমন আলোচনাও। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) আগে পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য ১২৬০ কোটি টাকা খরচ করছে পাকিস্তান। ক্ষুব্ধ জয় শাহ গোটা টুর্নামেন্টই অন্য কোথাও সরানোর সিদ্ধান্ত নিলে বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে তারা।