CT 2025: ভারতের আপত্তি, আইসিসি’র ডেডলাইন মেনে সংস্কারের কাজ শেষ করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতা- একের পর এক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হওয়ার পরেও শেষমেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। গত ১৯ তারিখ করাচীর ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছিলো টুর্নামেন্টের পথচলা। তা শেষ হয়েছে মার্চের ৯ তারিখ। লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে হবে ফাইনাল, আশায় বুক বেঁধেছিলেন পাকিস্তানের ক্রিকেটজনতা। কিন্তু ভারত ফাইনালে ওঠায় সেই সুযোগ আর আসে নি। হাইব্রিড মডেলের শর্তানুসারে খেতাবী দ্বৈরথ সরে গিয়েছিলো মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইতে। তিন দশক পর কোনো আইসিসি প্রতিযোগিতা আয়োজনের ক্ষেত্রে শিকে ছিঁড়েছিলো পাকিস্তানের ভাগ্যে। টুর্নামেন্ট শেষের পর লাভ-ক্ষতির হিসেব করতে বসে স্তম্ভিত বিশেষজ্ঞরা। লাভের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণই যে বেশী তা স্বীকার করতেই হচ্ছে তাঁদের।
Read More: IPL 2025: অধিনায়কত্বের প্রস্তাব ফেরালেন KL রাহুল, দিল্লীকে নেতৃত্ব দেবেন অক্ষর প্যাটেল !!
আয়ের চেয়ে ব্যয়ই বেশী পিসিবি’র-

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) আয়োজনের জন্য দেশের ক্রিকেট পরিকাঠামো ঢেলে সাজাতে হয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড’কে। ভেন্যু হিসেবে লাহোর, করাচী ও রাওয়ালপিন্ডির তিনটি মাঠকে বেছে নেওয়া হয়েছিলো। আউটফিল্ড, গ্যালারি, ড্রেসিংরুম থেকে যাবতীয় পরিকাঠামোর ভোলবদলের সিদ্ধান্ত নেন মহসীন নকভি’রা। এই প্রকল্পের জন্য খরচ হয় ১২৮০ পাকিস্তানী রুপি। ভারতীয় টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৪০০ কোটির কাছাকাছি। আইসিসি’র তরফে প্রথমে ১৫ জানুয়ারি’র ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো। সেই সময়কালের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ হয় নি। পরে ২৫ জানুয়ারি অবধি বাড়ানো হয় ডেডলাইন। তার মধ্যেও কাজ শেষ করে উঠতে পারে নি পিসিবি। পাকিস্তান থেকে সরে যেতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025), একটা সময় তৈরি হয়েছিলো আশঙ্কা। শেষমেশ অবশ্য ফেব্রুয়ারির গোড়ায় উদ্বোধন হয় নতুন সাজে সেজে ওঠা মাঠ তিনটির।
তিন দশকের অপেক্ষার পর ঘরের মাঠে আইসিসি প্রতিযোগিতায় কেবল একটি ম্যাচই খেলার সুযোগ পেয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচটিতেও হেরেছেন বাবর আজম (Babar Azam), মহম্মদ রিজওয়ানরা। এরপর ভারতের বিরুদ্ধে দুবাইতে গিয়ে খেলতে হয়েছে তাদের। রাওয়ালপিন্ডিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটি ভেস্তে গিয়েছে বৃষ্টির কারণে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (CT 2025) সপ্তম স্থানে শেষ করে আইসিসি’র তরফে জুটেছে ১ লক্ষ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ২ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। এর সাথে অংশগ্রহণের জন্য আলাদা করে ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা (INR) পেয়েছে তারা। এবার প্রত্যেক ম্যাচ জয়ের জন্য ৩৪০০০ মার্কিন ডলার করে দলগুলিকে দিয়েছে আইসিসি। পাকিস্তান একটিও ম্যাচ না জেতায় বঞ্চিত হয়েছে সেই প্রাইজ মানি থেকেও। ১২৮০ কোটি’র মধ্যে ভাঁড়ারে ফিরেছে মাত্র ১৩.২০ কোটি পাকিস্তানী রুপি।
দলে ব্যাপক রদবদল পাকিস্তানের-

গত বছর টি-২০ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের বাধা টপকাতে পারে নি পাকিস্তান। দুর্বল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হেরে ছিটকে যেতে হয়েছিলো তাদের। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও (CT 2025) বদলায় নি ছবিটা। গ্রুপ-এ’তে জোড়া হারের সম্মুখীন হয়েছে তারা। একটি পয়েন্ট এসেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হওয়ায়। লাগাতার ব্যর্থতায় বিপর্যস্ত পিসিবি। কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে হেঁটেছেন কর্মকর্তারা। সামনেই নিউজিল্যান্ড সফর রয়েছে পাকিস্তান দলের। সেখানে স্কোয়াড নিয়ে বড়সড় পরীক্ষানিরীক্ষা করার পথে হেঁটেছেন তাঁরা। টি-২০তে নতুন অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সলমন আলি আঘা’কে। বাদ পড়েছেন দুই তারকা বাবর আজম ও মহম্মদ রিজওয়ান (Muhammad Rizwan)। দলে ফিরেছেন মহম্মদ হারিস। তরুণ হাসান নওয়াজকেও দেওয়া হয়েছে সুযোগ। ওয়ান ডে থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বাম হাতি পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদিকে। নেই হারিস রউফ’ও।