২০০৯ সালে ক্রিকেট প্রশাসনে পা রেখেছিলেন জয় শাহ (Jay Shah)। গুজরাত ক্রিকেট সংস্থায় পেয়েছিলেন এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্যপদ। ২০১৩ সালে হন সহ-সচিব। এরপর বিসিসিআই-তে পথচলা শুরু হয়েছিলো ২০১৫ সালে। হয়েছিলেন ফিনান্স কমিটির সদস্য। এর ঠিক চার বছর পর, অর্থাৎ ২০১৯-এ বড়সড় বদল আসে তাঁর কেরিয়ারে। পান বিসিসিআই সচিবের গুরুদায়িত্ব। ২০২২ অবধি মেয়াদ ছিলো তাঁর। ইতিপূর্বে সচিব পদে টানা দু’বার দায়িত্ব পান কেউই। কিন্তু ইতিহাস গড়েন জয় শাহ (Jay Shah)। প্রথম ব্যক্তি হিসেবে দ্বিতীয় দফায় সচিব নির্বাচিত হন তিনিই। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থায় এখনও এক বছর মেয়াদ রয়েছে তাঁর। তারপর যাওয়ার কথা ৩ বছরের কুলিং-অফে। কিন্তু তার প্রয়োজন আর পড়ছে না। ভারতীয় ক্রিকেটের দায়িত্ব ছেড়ে এবার বিশ্ব ক্রিকেটের মসনদে বসার পথে তিনি।
Read More: বিয়ের পিঁড়িতে বসছে হার্দিকের প্রাক্তন স্ত্রী নাতাশা, এই বলিউড অভিনেতার সাথে ঘুরছেন সাত পাক !!
আইসিসি’র চেয়ারম্যান হলেন জয় শাহ-
বর্তমানে বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা আইসিসি’র সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন নিউজিল্যান্ডের গ্রেগ বার্কলে (Greg Barclay)। ২০২০ থেকে দায়িত্ব সালমাচ্ছেন তিনি। ২০২২-এ পুনর্নির্বাচিত হন। তৃতীয় দফায় পদ ধরে রাখার সুযোগ ছিলো তাঁর কাছে। কিন্তু কিউই প্রশাসক চান নি তা। গত ২০ অগস্ট আইসিসি’র তরফে এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানানো হয় যে আগামী ৩০ নভেম্বর মেয়াদ ফুরানোর পরেই সরে দাঁড়াচ্ছেন বার্কলে। তখন থেকেই তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে ভাসছিলো জয় শাহের (Jay Shah) নাম। আইসিসি’র পরবর্তী চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ২৭ অগস্টের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো। সাথে জানানো হয় যে একাধিক ব্যক্তি মনোনয়ন জমা দিলে ১ ডিসেম্বর আয়োজন করা হবে নির্বাচন। যদিও তার দরকার হয় নি শেষমেশ। কোনো প্রতিপক্ষের চ্যালেঞ্জ ছাড়াই জয় শাহ (Jay Shah) নির্বাচিত হয়েছেন। সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পদে বসেছেন তিনি।
পাকিস্তানের সমর্থন পেলেন না জয় শাহ-
আইসিসি চেয়ারম্যান নির্বাচনে ভোটদানের ক্ষমতা রয়েছে ১৬টি দেশের। আগে নির্বাচিত হতে গেলে এই ১৬ দেশের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন প্রয়োজন থাকত কোনো প্রার্থীর। কিন্তু সম্প্রতি সেই নিয়মে বদল এনেছে আইসিসি। এখন মোট ভোট সংখ্যার ৫১ শতাংশ বা ৯টি পেলেই কেউ নির্বাচিত হতে পারেন চেয়ারম্যান হিসেবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে কোনো রকম সমস্যার মুখে পড়তে হয় নি জয় শাহ’কে (Jay Shah)। বিসিসিআই ছাড়া ক্রিকেটের ‘বিগ থ্রি’র বাকি দুই সদস্য ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া যে ভারতীয় প্রশাসকের পাশে দাঁড়াবেন তা জানাই ছিলো। বাকি সদস্যদেরও সমর্থন পেয়েছেন তিনি। ব্যতিক্রম একমাত্র পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB)। পড়শি দেশ ভোট দেওয়া থেকেই বিরত থেকেছে। যদিও তাতে ফলাফলে কোনো প্রভাব পড়ে নি। তাদের মৌনতাকে সম্মতি ধরেই সর্বসম্মতভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে জয় শাহ’কে।
চাপ বাড়বে পাকিস্তানের উপর ?
১ ডিসেম্বর থেকে আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব সামলাবেন জয় শাহ (Jay Shah)। তাঁর প্রথম বড় আইসিসি প্রতিযোগিতা হতে চলেছে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এই টুর্নামেন্ট নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। ভেন্যু হিসেবে পাকিস্তানের নাম ঘোষণা করা হলেও পড়শি দেশে পা রাখতে নারাজ টিম ইন্ডিয়া (Team India)। বিসিসিআই সচিব হিসেবে জয় শাহ’ই (Jay Shah) বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার কাছে তদ্বির করেছেন হাইব্রিড মডেল ব্যবহার করে ভারতের ম্যাচগুলি অন্য কোনো নিরপেক্ষ দেশে সরিয়ে দেওয়ার। যা মানতে রাজী নয় পিসিবি (PCB)। এবার তিনি নিজেই আইসিসি’র সর্বোচ্চ পদে বসার পর ভারতের পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত হলো বলে মনে করছে ক্রিকেটমহল। সম্ভবত হাইব্রিড মডেলেই পড়বে সিলমোহর। পাকিস্তানও ভবিতব্য সম্ভবত বুঝতে পেরেছে। ভোটদানে বিরত থেকে তাই জাহির করেছে অসন্তোষ।