চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) নিয়ে বেড়েই চলেছে আইসিসি’র মাথাব্যথা। আসন্ন টুর্নামেন্ট আয়োজন করার কথা পাকিস্তানের। গত জুনে টি-২০ বিশ্বকাপ চলাকালীন খসড়া সূচি ও প্রস্তাবিত গ্রুপ বিন্যাস সর্বোচ্চ ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার কাছে জমা করেছিলেন পিসিবি প্রধান মহসীন নকভি। ফেব্রুয়ারি-মার্চের উইন্ডোতে ১৫ ম্যাচের এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে তারা। ১৯৯৬-এর ওডিআই বিশ্বকাপের (ICC World Cup) ২৮ বছর পর বড় মাপের কোনো আইসিসি টুর্নামেন্ট আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে পাকিস্তান। জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তারা। মানোন্নয়ন করা হচ্ছে পরিকাঠামো’র। কিন্তু এত কিছুর পরেও আদৌ পিসিবি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) আয়োজন করতে পারবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না নিশ্চিত ভাবে। ভারতের আপত্তিতে বিশ বাঁও জলে টুর্নামেন্টের ভবিষ্যত।
Read More: ভারত-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মাঝে খারাপ খবর, মাঠে প্রাণ হারালেন তারকা ক্রিকেটার !!
হাইব্রিড মডেলে রাজী নয় পিসিবি-
২০০৮ সালের ২৬/১১ নাশকতার পর পাকিস্তান বার পাঁচেক ভারতে এসেছে ঠিকই, কিন্তু পাকিস্তানে আর যায় নি টিম ইন্ডিয়া (Team India)। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতির প্রতিফলন দেখা গিয়েছে ক্রিকেটের আঙিনাতেও। ওয়াঘা সীমান্তের ওপারে দল না পাঠানোর অবস্থান থেকে এই মুহূর্তে বিসিসিআই যে সরে আসছে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন জয় শাহ (Jay Shah), রজার বিনি’রা (Roger Binny)। গত বছরে এশিয়া কাপ (Asia Cup 2023) আয়োজনের কথা ছিলো পাকিস্তানের। ভারত যেতে অসম্মত হওয়ায় দীর্ঘদিন চলে টালবাহানা। শেষমেশ হাইব্রিড মডেলের মাধ্যমে খুঁজে নেওয়া হয়েছিলো সমাধানসূত্র। টিম ইন্ডিয়ার সবক’টি ম্যাচ ও টুর্নামেন্টের নক-আউট পর্ব সরে গিয়েছিলো শ্রীলঙ্কাতে। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও (CT 2025) সেভাবে হোক। আইসিসি’র কাছে আবেদন জানিয়েছে বিসিসিআই।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) আয়োজনের স্বত্ব অন্য কোনো দেশের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে রাজী নয় পাকিস্তান। এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) সময় হাইব্রিড মডেল মেনে নিয়েছিলেন তৎকালীন পিসিবি প্রধান নাজম শেঠি (Najam Sethi), কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান মহসীন নকভি (Mohsin Naqvi) কড়া অবস্থান নিয়েছেন। প্রথমে পাক বোর্ডের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো ‘মেন ইন ব্লু’র সবক’টি ম্যাচ লাহোরে আয়োজন করার। পরে ম্যাচ খেলে রোহিত-কোহলিদের দিল্লী বা অমৃতসর ফেরার কথাও বলা হয়। কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি। এরপর সংবাদমাধ্যমের সামনে নকভি তোপ দেগেছেন ভারতের বিরুদ্ধে। আগামী বছরের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ভারত যদি পাকিস্তানে না আসে সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ভারতের মাটিতে একটিও টুর্নামেন্ট খেলতে পাক দল যে যাবে না তাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
বাদ পড়তে পারে পাকিস্তানই-
অন্যান্য দেশগুলি যখন পাকিস্তানে গিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) খেলা নিয়ে আপত্তি জানায় নি সেখানে ভারতের অসুবিধা কোথায়? প্রশ্ন তোলা হচ্ছে পাক ক্রিকেটমহলের তরফে। কেউ কেউ দাবী জানিয়েছেন যে টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) বাদ দিয়েই টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হোক। বিকল্প হিসেবে বেছে নেওয়া হোক শ্রীলঙ্কাকে। তবে বাণিজ্যিক কারণে তা যে সম্ভব নয় তা বিলক্ষণ জানে আইসিসি। সেই কারণেই হাইব্রিড মডেলকেই সমাধানসূত্র হিসেবে দেখছে তারা। মধ্যপ্রাচ্য বা দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের ম্যাচগুলি আয়োজনের কথা ভাবছে তারা। গতকাল টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য একটি ভার্চুয়াল বৈঠক রেখেছিলো ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। কিন্তু শেষমেশ আয়োজন করা যায় নি তা। সূত্রের খবর যে আজ, অর্থাৎ শনিবার স্থির হতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (Ct 2025) ভাগ্য।
পাকিস্তানের পায়ের তলার মাটি বিশেষ শক্ত নয়। শেষমেশ হয়ত চাপের কাছে নতিস্বীকার করতেই হবে তাদের। সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে আইসিসি’র অভ্যন্তরের এক সূত্র নাম না প্রকাশের শর্তে বলেছেন, “দেখুন ভারত যদি অংশ না নেয় তাহলে এক পয়সাও যে কোনো সম্প্রচারকারী সংস্থা দেবে না তা পাকিস্তানও জানে। যদি মহসীন নকভি হাইব্রিড মডেলে সায় দেন তবেই একমাত্র শনিবারের বৈঠক হবে ।” ইতিপূর্বে সংবাদমাধ্যমের সামনে পিসিবি জানিয়েছিলো হাইব্রিড মডেলে মান্যতা দেবে না তারা। যদি সত্যিই তা হয় অথবা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) বয়কটের হুমকি দেয় তারা, তাহলে বড়সড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে পাক ক্রিকেটকে। গোটা টুর্নামেন্টই পাকিস্তান থেকে সরিয়ে অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরিত করা হতে পারে। বাদ’ও দেওয়া হতে পারে বাবর, শাহীনদের। বদলে অষ্টম দল হিসেবে হয়ত শ্রীলঙ্কার ভাগ্যেই ছিঁড়তে পারে শিকে।