এই মুহূর্তে ভারতীয় ক্রিকেটের দুই অন্যতম সফল অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya) ও ক্রুণাল পান্ডিয়া। দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে মাঠে নেমেছেন দুজনেই। দাদা ক্রুণাল (Krunal Pandya) ৫টি একদিনের ম্যাচে করেছেন ১৩০ রান, নিয়েছেন ২টি উইকেট। খেলেছেন ১৯টি ট-২০’ও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অপেক্ষাকৃত অধিক সফল অবশ্য ছোটো ভাই হার্দিক (Hardik Pandya)। ইতিমধ্যে ৮৯টি একদিনের ম্যাচ ও ১১৪টি টি-২০ খেলেছেন তিনি। জিতেছেন কুড়ি-বিশের বিশ্বকাপও। লাল বলের ফর্ম্যাটেও ভারতের জার্সিতে মাঠে নেমেছেন ১১ বার। টেস্টে শতক ও এক ইনিংস পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজিরও রয়েছে তাঁর। ইতিমধ্যে ওয়ান ডে ও টি-২০ ফর্ম্যাটে নেতৃত্ব’ও দিয়েছেন ‘মেন ইন ব্লু’কে। বরোদার গলি থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের রাজপথে পৌঁছনোর লড়াইটা সহজ ছিলো না দুই ভাইয়ের, জানালেন মুম্বই ইন্ডিয়ান মালকিন নীতা আম্বানি (Nita Ambani)।
Read More: CT 2025: “ভারত-পাক নিয়ে বাড়াবাড়ি হয়…” চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মহারণের আগে বিস্ফোরক মন্তব্য হরভজন সিং-এর !!
পান্ডিয়াদের নিয়ে মুখ খুললেন নীতা আম্বানি-

আইপিএলই পরিচিতি এনে দিয়েছিলো দুই ভাইকে। ২০১৫তে যাত্রা শুরু করেন হার্দিক (Hardik Pandya)। আর এর ঠিক এক বছর পর অর্থাৎ ২০১৬তে অভিষেক হয় ক্রুণালের (Krunal Pandya)। দুজনের গায়েই ছিলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের জার্সি। তাঁদের সাথে প্রথম সাক্ষাতের কথা সম্প্রতি জানিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজির মালকিন নীতা আম্বানি (Nita Ambani)। তুলে ধরেছেন তাঁদের লড়াই ও হার না মানা জেদের কথা। সাক্ষাৎকারে ধনকুবের মুকেশ আম্বানির স্ত্রী বলেছেন, “আইপিএলে আমাদের হাতে একটা নির্দিষ্ট বাজেট থাকে। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থই দলগুলো খরচ করতে পারে। সেই কারণেই আমাদের প্রতিভা খুঁজে নেওয়ার জন্য নতুন নতুন উপায় অবলম্বন করতে হয়। আমার মনে আমি স্কাউটিং করছিলাম। প্রত্যেকটা রঞ্জি ম্যাচে যেতাম। আমি ও আমার স্কাউটেরা ঘরোয়া ক্রিকেটের ম্যাচ দেখতাম। এক দিন এক স্কাউটই দু’জন রোগা, লম্বা ছেলেকে আমাদের শিবিরে নিয়ে আসে।”
প্রথম দিন হার্দিক (Hardik Pandya) ও ক্রুণালের (Krunal Pandya) সাথে যে কথোপকথন হয়েছিলো তাঁর, তা এখনও মনে রয়েছে নীতা আম্বানির। তিনি জানিয়েছেন, “আমি ওদের সাথে কথা বলছিলাম, তখনই ওরা জানিয়েছিলো যে তিন বছর শুধু ম্যাগি খেয়ে কাটিয়েছে, কারণ ওদের কাছে টাকা ছিলো না। কিন্তু ওদের মধ্যে উদ্যম দেখেছিলাম আমি। বড় হওয়ার প্যাশন, খিদেটা ছিলো। ঐ দুই ভাই’ই হার্দিক ও ক্রুণাল পান্ডিয়া। ২০১৫ সালে ১০০০০ মার্কিন ডলারে হার্দিকের সাথে চুক্তি হয়েছিলো। আর আজ ও মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের গর্বিত অধিনায়ক।” ক্রিকেটকে সম্বল করেই দারিদ্রের অন্ধকারকে দূর করতে সক্ষম হয়েছেন দুই ভাই’ই। সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের তথ্য অনুযায়ী আজ হার্দিকের (Hardik Pandya) নেট ওয়ার্থ ৯৪ কোটি টাকা। পিছিয়ে নেই ক্রুণালও। তাঁর’ও নেট ওয়ার্থ ইতিমধ্যেই ছাড়িয়েছে ৬০ কোটি’র গণ্ডী।
দুই আলাদা দলের হয়ে খেলবেন দুই ভাই-

২০২২ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI) ছাড়েন দুই ভাই। হার্দিক (Hardik Pandya) যোগ দিয়েছিলেন গুজরাত টাইটান্সে আর ক্রুণাল গিয়েছিলেন লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসে। নতুন দল গুজরাতের অধিনায়ক হিসেবে প্রথম মরসুমেই বাজিমাত করেন হার্দিক। জিতে নেন ট্রফি। দ্বিতীয় মরসুমেও তাঁর হাত ধরে দল পৌঁছেছিলো ফাইনালে। যদিও শেষ মুহূর্তে হারতে হয় চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে। ২০২৪-এ ফের দলবদল করেন তিনি। ট্রেডিং পদ্ধতিতে ১৫ কোটি টাকা খরচ করে তাঁকে দলে ফেরায় মুম্বই। রোহিত শর্মা’র মত কিংবদন্তিকে সরিয়ে হার্দিকের হাতে তুলে দেয় অধিনায়কের দায়িত্ব। অন্যদিকে ২০২২ থেকে ২০২৪ অবধি লক্ষ্ণৌতেই ছিলেন ক্রুণাল (Krunal Pandya)। বেশ কিছু ম্যাচে ফ্র্যাঞ্চাইজির অধিনায়কত্ব’ও করেছেন তিনি। তবে ২০২৫-এর মেগা নিলামের আগে তাঁকে রিলিজ করে দিয়েছিলো লক্ষ্ণৌ। ৮.৪ কোটি টাকায় বাম হাতি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার নাম লিখিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে।