আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে গ্রেটার নয়ডার মাঠে একমাত্র টেস্টটি ভেস্তে গিয়েছিলো নিউজিল্যান্ডের (New Zealand)। এরপর তারা পাড়ি দিয়েছিলো শ্রীলঙ্কায়। দ্বীপরাষ্ট্রে দুইটি টেস্ট ছিলো ব্ল্যাক ক্যাপসদের। দুটিতেই হতশ্রী পারফর্ম্যান্সের মাশুল দিতে হয়েছে দল’কে। লঙ্কান আক্রমণের সামনে ছিন্নভিন্ন হয়ে হারতে হয়েছে টিম সাউদীর দল’কে। গলে প্রথম ম্যাচে একটা সময় এগিয়ে ছিলো নিউজিল্যান্ড’ই (New Zealand)। প্রথম ইনিংসে ৩১ রানের লিড’ও পেয়েছিলো তারা। কিন্তু চতুর্থ দিনে রান তাড়া করতে নেমে ধসে যায় তাদের ব্যাটিং। রচিন রবীন্দ্রের (Rachin Ravindra) লড়াকু ৯১ রানের ইনিংস সত্ত্বেও ৬৩ রানের ব্যবধানে হেরে বসে নিউজিল্যান্ড। সিরিজে ১-০ এগিয়ে গিয়ে যে আত্মবিশ্বাস সংগ্রহ করেছিলো শ্রীলঙ্কা, তা দ্বিতীয় টেস্টেও অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছিলো ম্যাথিউজ, মেন্ডিসদের।
Read More: নতুন বুমরাহ’র সন্ধানে টিম ইন্ডিয়া, জাদেজা-কোহলির কাণ্ডে হাসির রোল ক্রিকেটদুনিয়ায় !!
হোয়াইটওয়াশ হলো কিউইরা-
গলের মাঠেই খেলা হয়েছে দ্বিতীয় টেস্টটিও। প্রথম ব্যাটিং করতে নামা শ্রীলঙ্কা রানের পাহাড় খাড়া করে। দীনেশ চাণ্ডিমাল, কামিন্দু মেন্ডিস, কুশল মেন্ডিসের (Kusal Mendis) শতরানের সৌজন্যে তারা তোলে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ৬০২ রান। টেস্ট কেরিয়ারে দ্রুততম ১০০০ রান করার ক্ষেত্রে স্যর ডন ব্র্যাডম্যানকে স্পর্শ করেন কামিন্দু মেন্ডিস (Kamindu Mendis)। নড়বড়ে নিউজিল্যান্ড (New Zealand) পৌঁছতে পারে নি তার ধারেকাছেও। প্রথম ইনিংসে কেবলমাত্র ৮৮ রানে গুটিয়ে যায় তারা। টম ল্যাথাম, কেন উইলিয়ামসন, রচিন রবীন্দ্র- রান পান নি কেউই। ফলো-অন করায় শ্রীলঙ্কা। ফের ভাঙন ধরে কিউই ব্যাটিং-এ। গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনার খানিক লড়লেও যথেষ্ট হয় নি তা। ৩৬০ রানে গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। ইনিংস ও ১৫৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে শ্রীলঙ্কার মাটিতে হোয়াইটওয়াশ হলো ব্ল্যাক ক্যাপস বাহিনী।
WTC-তে লজ্জার রেকর্ড নিউজিল্যান্ডের-
ঘরের মাঠে ঘাসে ভরা উইকেটে গতির আগুন ছুটিয়ে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে সিদ্ধহস্ত কিউইরা। কিন্তু অ্যাওয়ে টেস্টে যেন বারবার মুখ থুবড়ে পড়তে হয় তাদের। বিশেষ করে উপমহাদেশের ঘূর্ণি পিচে রীতিমত দিশাহারা দেখায় উইলিয়ামসন, ল্যাথাম (Tom Latham), টম ব্লান্ডেল, গ্লেন ফিলিপসদের। পরিসংখ্যানও বলছে তেমনটাই। ২০২০-২১ মরসুম থেকে শুরু হয়েছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC)। এরপর কেটেছে ১৮৮৬ দিন। টুর্নামেন্টের দুটি চক্র সম্পূর্ণ হয়েছে ইতিমধ্যে। প্রথমটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কিউইরা। তৃতীয় চক্রটিও সম্পূর্ণ হওয়ার মুখে। এর মধ্যে যে কয়টি টেস্টে জিতেছে কিউইরা, প্রতিটি সাফল্যই এসেছে ঘরের মাঠে। ভারত, অস্ট্রেলিয়ার মত দেশ যেখানে অ্যাওয়ে ম্যাচেও দাপট দেখিয়েছে, সেখানে একেবারের ম্রিয়মান নিউজিল্যান্ড (New Zealand)। একবারও বিদেশের মাঠে কোনো টেস্ট গত ৫-৬ বছরে জেতে নি তারা।
ভারতের বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা ব্ল্যাক ক্যাপসদের-
আফগানিস্তান ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুই টেস্টের সিরিজও সমাপ্ত হয়েছে আজ। এরপর নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) প্রতিপক্ষ টিম ইন্ডিয়া। আগামী ১৬ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে দুই দেশের টেস্ট দ্বৈরথ। তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথমটি আয়োজন করছে বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম। ২৪ থেকে ২৮ অক্টোবর দ্বিতীয় ম্যাচটি হওয়ার কথা পুণের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আর তৃতীয় টেস্টটি শুরু হচ্ছে ১ নভেম্বর থেকে। চলার কথা ৫ নভেম্বর অবধি। ভেন্যু হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামেওকে। মুম্বইয়ের মাঠেই গত বছরের ওডিআই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারত হারিয়ে দিয়েছিলো কিউইদের। সেই ফলাফলের পুনরাবৃত্তি হয় নাকি ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হন উইলিয়ামসন’রা, নজর থাকবে সেদিকে। যদিও ভারতের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) হতশ্রী পরিসংখ্যান (৩৬ ম্যাচ, ২ জয়) স্বস্তিতে রাখবে না কিউই সমর্থকদের।
Also Read: বারাণসীতে ঘটছে অলৌকিক ইতিহাস, “মহাদেবের স্টেডিয়ামে” হবে টি-২০ বিশ্বকাপ !!