চলছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (IPL)। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই আয়োজিত এই টি-২০ ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ ঘিরে উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে গোটা দুনিয়ায়। আট থেকে আশি প্রত্যেকেই রোজ দুপুরে বা সন্ধ্যেয় চোখ রাখছেন টিভি বা মোবাইলের পর্দায় ধুন্ধুমার ক্রিকেট দেখার আশায়। প্রতিযোগিতার দশ দল তাঁদের নিরাশ করে নি এখনও। লীগ পর্বের প্রায় মাঝামাঝি পর্যায়ে চলে এসেছে আইপিএল (IPL)। এর মধ্যে একাধিক দুর্ধর্ষ ম্যাচের সাক্ষী হয়েছে ক্রিকেটজনতা। ব্যাটিং, বোলিং হোক বা ফিল্ডিং, ব্যক্তিগত মুন্সীয়ানা হোক বা দলগত সাফল্য-আইপিএল (IPL) ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছে কেন বিশ্বজোড়া ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগের রমরমার মাঝেও আলাদা স্থানে সকলে রাখে ভারতের টুর্নামেন্টকে।
জমজমাট ক্রিকেটের মাঝে মিলেছে গড়াপেটার দুঃসংবাদ’ও। আইপিএলে (IPL) গড়াপেটা বা অনৈতিক কার্যকলাপ নতুন নয়। এর আগেও স্পট ফিক্সিং-এর অভিযোগ উঠেছিলো রাজস্থান রয়্যালস-এর তিন ক্রিকেটার শান্তাকুমারন শ্রীশন্থ (S Sreesanth), অঙ্কিত চৌহান ও অজিত চাণ্ডিলার নামে। তদন্তের পর তাঁদের আজীবন নির্বাসনের সাজা ঘোষণা করে আদালত। পরে শ্রীশন্থের উপর থেকে অবশ্য নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। শাস্তির কবলে পড়তে হয়েছিলো রাজস্থান ও চেন্নাই ফ্র্যাঞ্চাইজিকেও। আইপিএল বা অন্যান্য লাইভ ইভেন্টে সম্প্রচারের বিলম্বের কয়েক সেকেন্ডকে কাজে লাগাতে মাঠ থেকে গড়াপেটার প্রচেষ্টা চালায় ‘বুকি’রা। যাকে বলা হয় পিচ সাইডিং। চলতি আইপিএলে এই পিচ সাইডিং-এর অভিযোগেই গ্রেফতার হলেন অন্তত চার জন।
Read More: IPL 2024: এই মরসুমেই অবসর MS ধোনি’র? সুরেশ রায়নার মন্তব্যে হইচই ক্রিকেটদুনিয়ায় !!
রাজস্থান ম্যাচ থেকে মিললো গড়াপেটার গন্ধ-
ম্যাচ গড়াপেটা ও বেটিং-এর সাথে সংযোগের কারণে ২০১৬ ও ২০১৭ মরসুমে আইপিএল (IPL) থেকে রাজস্থান রয়্যালস (RR) দল’কে বহিষ্কার করেছিলো জাস্টিস লোধা কমিটি। একই অপরাধে নির্বাসিত হতে হয়েছিলো চেন্নাই সুপার কিংসকেও (CSK)। দুই বছরের বিরতির পর ২০১৮ সালে আবার আইপিএলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে তারা। ২০২৪ সালে আবার গড়াপেটে কালো ছায়া আইপিএলের আকাশে। ঘটনাচক্রে আরও একবার জড়িয়ে গিয়েছে রাজস্থান রয়্যালসের (RR) নাম’ই। তাদেরই দুটি ম্যাচের দিকে নজর ক্রিকেটদুনিয়ায়। বোর্ড সূত্রে পাওয়া খবর থেকে জানা গিয়েছে যে জয়পুরের সোয়াই মানসিংহ্ স্টেডিয়ামে রাজস্থান রয়্যালস বনাম দিল্লী ক্যাপিটালস (RR vs DC) ম্যাচ চলাকালীন দুই ব্যক্তিকে গড়াপেটার সাথে যুক্ত সন্দেহ মাঠ থেকে বিতাড়িত করা হয়।
রাজস্থান বনাম দিল্লী ম্যাচের দিন যে দুইজনকে মাঠ থেকে সরানো হয়েছিলো তাঁরা ভিআইপিদের জন্য সংরক্ষিত কর্পোরেট বক্সে প্রবেশের অনুমতিপত্র কি করে পেলেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এখানেই যবনিকা পড়ে নি ঘটনার। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম রাজস্থান রয়্যালস (MI vs RR) ম্যাচটিও রয়েছে রেডারে। এই ম্যাচের দিনও ওয়াংখেড়ের প্রেসিডেন্টস বক্স থেকে দুইজনকে গড়াপেটার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই-এর অ্যান্টি করাপশন ইউনিট বা দুর্নীতিদমন শাখা। পরবর্তীতে মুম্বই পুলিশের হাতে তাদের হস্তান্তর করা হয়। বিষয়টির গভীরে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ভারতীয় বোর্ড। তবে ভিআইপি বক্সে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি যে বাড়ানোর প্রয়োজন তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে এই ঘটনা।