ভারতীয় ক্রিকেটে মাহেন্দ্র সিং ধোনির অবদান নিয়ে নতুন করে কিছু লেখা বাতুলতা। কিন্তু তার এই অবদানের পেছনে কত আত্মত্যাগ আর মনোসংযোগ এর গল্প লুকিয়ে আছে তা একবার নতুন করে প্রকাশ পেল। সম্প্রতি বিখ্যাত সাংবাদিক আর এক খ্যাতনামা নিউজ চ্যানেলের এডিটর রাজদীপ সারদেশাইয়ের এক বই প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে এরকম অনেক নতুন তথ্য উঠে এসেছে ভারতীয় ক্রিকেট টিমের প্লেয়ারদের নিয়ে যা ইতিমধ্যেই আলোড়ন তুলেছে।
রাজদীপ সারদেশাইয়ের ক্রিকেট প্রেম নতুন কোন ব্যাপার নয়। তিনি প্রখ্যাত ক্রিকেটার দিলীপ সারদেশাইয়ের ছেলে হওয়ার সুবাদে ক্রিকেটের সাথে অনেক দিন থেকেই যুক্ত। সম্প্রতি Democracy’s XI নামের এক বই প্রকাশ করেছেন তিনি। সেখানে মাহেন্দ্র সিং ধোনির ব্যাপারে কিছু নতুন অজানা তথ্য উঠে এসেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল 2015 বিশ্বকাপ অভিযান চলাকালীন তার বাবা হওয়ার ঘটনা।
ধোনি যখন দলবল নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিমানে চড়েছিলেন তখন তাঁর স্ত্রী সাক্ষী সন্তানসম্ভবা ছিলেন। দেশ থেকে যেকোন সময় কোনো খবর আসতে চলেছে তা জানা সত্ত্বেও মনোসংযোগে যাতে কোন চিড় না ধরে সেজন্য তিনি মোবাইল অফ করে রেখেছিলেন ধোনি ! শেষপর্যন্ত তার বাবা হওয়ার কথা ধোনির স্ত্রী ধোনির দীর্ঘদিনের বন্ধু আর চেন্নাই সুপার কিংসের সতীর্থ সুরেশ রায়নাকে এসএমএস করে জানান। এই একটা ঘটনা থেকেই ধোনির দলের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রমান পাওয়া যায় যা নিঃসন্দেহে সব প্রশংসার উর্দ্ধে। কতটা দল অন্ত প্রাণ হলে নিজের ব্যক্তিগত জীবনের অন্যতম খুশির মুহূর্তকেও ভুলে থেকে শুধু দলের সাফল্যের কথা চিন্তা করা যায় !
পরে সাংবাদিক সম্মেলনে যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় এই মুহূর্তে তিনি পরিবারকে মিস করেছেন কিনা, তার উত্তরে ধোনি জানান, “আমি কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছি। এই মুহূর্তে মা ও মেয়ে দুজনেই ভাল আছে। তাই আমি পরিবার নিয়ে বেশি ভাবছিনা। কারন আমি জাতীয় দলের দায়িত্বে আছি। এবং আমরা মহাগুরুত্বপূর্ণ বিশ্বকাপ অভিযানে আছি। “
শেষ পর্যন্ত 2015 এর বিশ্বকাপে ধোনির ভারত সেমিফাইনালের বেশি না যেতে পারলেও ধোনির এই আত্মত্যাগ ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। ভবিষ্যতের নীল জার্সিধারীদের জন্য এ এক চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো শিক্ষা। একজন দক্ষ নেতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে হলে কতটা নিষ্ঠাবান আর দায়িত্ববান হতে হয়। আর এখানেই ধোনি সকলের থেকে আলাদা।