বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ে না নেপালের তারকা স্পিনার সন্দীপ লমিছানের (Sandeep Lamichhane)। এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিলো তাঁর বিরুদ্ধে। ২০২৩-এর ডিসেম্বরে দোষীও সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি। বেশ কয়েক মাস কাটাতে হয়েছিলো কারাগারে। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর গত বছরের মে মাসে সন্দীপকে নিরপরাধ ঘোষণা করেছে পাটন আদালত। ধর্ষণের অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়ে ফের ক্রিকেটের বাইশ গজে ফিরেছিলেন তিনি। অংশ নেন টি-২০ বিশ্বকাপে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জোড়া উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-২০তে ১০০ উইকেটের মাইলস্টোন স্পর্শ করেন ডান হাতি লেগস্পিনার। এশিয়া ও বিশ্ব ক্রিকেটে নেপালকে নয়া উচ্চতায় তুলে নিয়ে যাবেন সন্দীপ (Sandeep Lamichhane), আশায় ছিলেন অনুরাগীরা। কিন্তু ২০২৫-এর গোড়াতেই ফের ধাক্কা খেতে হলো তাঁকে। এবার ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার সাথে সংঘাতে জড়িয়ে শাস্তি পেলেন তিনি।
Read More: TOP 4: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এই চার ক্রিকেটারের অভাব অনুভব করবে টিম ইন্ডিয়া !!
নেপাল ক্রিকেট সংস্থার রোষে সন্দীপ-
আদর্শ আচরণবিধি ভাঙার অপরাধে শাস্তির কবলে সন্দীপ লমিছানে (Sandeep Lamichhane)। জয় ট্রফি ২০৮১ টুর্নামেন্টে আম্পায়ারিং-এর মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। বাগমতী বনাম ত্রিভুবন আর্মি ম্যাচে বাগমতী দলের একজন ব্যাটার আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গণ্ডগোল বাঁধে। ভেস্তে যায় ম্যাচ। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নেপাল ক্রিকেট সংস্থাকে (CAN) কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে গত ১০ জানুয়ারি একটি ফেসবুক পোস্টে তারকা স্পিনার লেখেন, “আমার এমনটা বলা উচিৎ নয় ঠিকই, কিন্তু নেপালে আম্পায়ারিং-এর মানের প্রভূত উন্নতি প্রয়োজন রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এটা। যদি যথোপযোগ্য ব্যবস্থা দ্রুত না নেওয়া হয়, তাহলে ভুলভাল সিদ্ধান্তের শিকার হতে হবে অসংখ্য খেলোয়াড়কে। আমরা রেফারিকে ক্যাপ্টেনস রিপোর্ট দিই। কিন্তু তার পরেও কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ে না।…”
আরও লেখেন, “…খেলার মান ও খেলোয়াড়দের উন্নতির জন্য আম্পায়ারিং-এর স্তর উন্নত করা অত্যন্ত জরুরী। আশা রাখছি কর্তৃপক্ষ বিষয়টির দিকে নজর দেবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।”লমিছানের (Sandeep Lamichhane) এই চাঁচাছোলা আক্রমণ ভালোভাবে নেয় নি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ নেপাল। ম্যাচ রেফারি ও টেকনিক্যাল কমিটির রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তারকা স্পিনারকে। নেপাল ক্রিকেট সংস্থার কোড অফ কন্ডাক্টের ২.৭ ধারা লঙ্ঘনের দায়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের একটি ম্যাচ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে তাঁকে। সাথে তিনটি ডিমেরিট পয়েন্ট’ও পেয়েছেন তিনি। একইসাথে তাঁকে জবাবদিহিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত শাস্তির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি সন্দীপ (Sandeep Lamichhane)। তিনি নিজের কর্মকাণ্ডের কি ব্যাখ্যা দেন অথবা আদৌ ক্ষমা চান কিনা সেদিকে তাকিয়ে ক্রিকেটজনতা।
সন্দীপ লমিছানের কেরিয়ার পরিসংখ্যান-
ক্রিকেটের মানচিত্রে নেপালের নাম প্রথম উজ্জ্বল করেছিলেন সন্দীপ লমিছানেই (Sandeep Lamichhane)। প্রতিভাবান স্পিনার ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দুনিয়ায় পরিচিত নাম। অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সিপিএল (CPL) খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। এমনকি দিল্লী ফ্র্যাঞ্চাইজির (DC) জার্সিতে অংশ নিয়েছেন আইপিএলেও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দুর্দান্ত পরিসংখ্যান সন্দীপের। মাত্র ৫৬ ইনিংসে ১০০টি আন্তর্জাতিক টি-২০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। বর্তমানে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফর্ম্যাটে ৫৮ ম্যাচে তাঁর উইকেট সংখ্যা ১০৮। বোলিং গড় ১২.৫১। ইকোনমি ৬.১৫। একদিনের ক্রিকেটেও দ্রুততম ১০০ উইকেটের মালিক হয়েছিলেন তিনি। ৫৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১২১ টি সাফল্য রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। গত দুই বছরে এশিয়া কাপ, টি-২০ বিশ্বকাপ খেলেছে নেপাল, সেই সাফল্য সন্দীপের (Sandeep Lamichhane) অবদান অনস্বীকার্য্য।
Also Read: CT 2025: স্কোয়াড নির্বাচনে গলদ BCCI-এর, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বয়ে বেড়াতে হবে এই তিন ক্রিকেটারকে !!