ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের অপেক্ষা এখন শেষ হতে চলেছে। আগামী মরশুমের জন্য পুরো শিডিউলও প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে সামনে এসেছে যে ২৯ মার্চ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স-চেন্নাই সুপার কিংসের মধ্যে খেলা হতে চলা ম্যাচ দিয়ে আইপিএলের ত্রয়োদশ মরশুমের শুরু হবে। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ছাড়া আর কোনো ফ্রেঞ্চাইজিই অধিনায়ক পরিবর্তন করেনি। কলকাতা নাইট রাইডার্সের কথা ধরলে এই ফ্রেঞ্চাইজির নেতৃত্ব দীনেশ কার্তিকের হাতে থাকবে। কিন্তু কার্তিক নিয়মিত ঘরয়া ক্রিকেটে নিজের দল তামিলনাড়ুর অধিনায়কত্ব করে চলেছেন। এই অবস্থায় এটা সম্ভব হতে পারে যে এই ফ্রেঞ্চাইজি কার্তিককে আইপিএলে কিছু ম্যাচে বিশ্রাম দিতে পারে। এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন উঠতে পারে যে উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান কার্তিকের অনুপস্থিতিতে কে অধিনায়কত্ব করতে পারেন? তো আসুন এই বিশেষ প্রতিবেদনে আপনাদের সেই ৫জন খেলোয়াড়ের নাম জানানো যাক যারা দীনেশ কার্তিকের জায়গায় আইপিএল-১৩য় অধিনায়কত্ব করতে পারেন।
১. ইয়োন মর্গ্যান
দীনেশ কার্তিকের অনুপস্থিতিতে কেকেআরের কাছে বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইয়োন মর্গ্যানের বিকল্প মজুত রয়েছে। আসলে ইংল্যান্ডকে প্রথম আইসিসি বিশ্বকাপ জেতানো ইয়োন মর্গ্যান ২০২০ আইপিএলের অকশনে নিজের নাম ২ কোটি টাকার বেস প্রাইসে ড্রাফট করিয়েছিলেন। মর্গ্যানের উপর বেশকিছু ফ্রেঞ্চাইজি বাজি ধরেছিল কিন্তু শেষে কলকাতা নাইট রাইডার্স ৫ কোটি ২৫ লাখা টাকায় কিনে ইয়োন মর্গ্যানকে নিজেদের দলে শামিল করেছে। মর্গ্যানের অধিনায়কত্বের গুন সকলেই দেখেছেন। এখন ফ্রেঞ্চাইজির কাছে ইয়োন মর্গ্যানের রূপে একজন ভালো এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ইনিংস খেলতে পারা অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান মজুত রয়েছে। এই অবস্থায় যদি এই ফ্রেঞ্চাইজি দীনেশ কার্তিকের অনুপস্থিতিতে দ্বিতীয় কোনো খেলোয়াড়কে দায়িত্ব দিতে চায় তো মর্গ্যান তার জন্য সেরা বিকল্প হবেন।
২. শুভমান গিল
আইসিসি অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছিলেন শুভমান গিল। ভারতের উজ্বল তারকা। গিল গত কিছু সময়ে নিজের প্রদর্শনে সকলকেই নিজের সমর্থক করে ফেলেছেন। অনুর্ধ্ব ১৯ এ ভারতের হয়ে সর্বাধিক রান করার পর গিলকে ২০১৮য় হওয়া আইপিএল নিলামে কিনে কেকেআর নিজেদের দলে শামিল করে। তরুণ খেলোয়াড়টি গত দুটি মরশুমে নিয়মিত এই ফ্রেঞ্চাইজির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন আর রানও করছেন। এখন যদি ফ্রেঞ্চাইজি দীনেশ কার্তিকের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের সন্ধান করে তো এর জন্য গিল একজন ভালো বিকল্প হতে পারে। আসলে গিল ভারত এ-র অধিনায়কত্ব করেন। যেখানে তিনি অধিনায়ক হিসেবে বড়ো বড়ো ইনিংস খেলেন। এর মানে হল এই তরুণ খেলোয়াড় নেতৃত্বের চাপ সত্ত্বেও বড়ো বড়ো ইনিংস খেলার সক্ষমতা রাখেন। পরিসংখ্যানের কথা বলা হলে, গিল এখনো পর্যন্ত আইপিএলে খেলা ২৭টি ম্যাচে ১৩২.৩৬ স্ট্রাইকরেটে এবং ৩৩.২৬ গড়ে ৪৯৯ রান করেছেন।
৩. অ্যান্দ্রে রাসেল
ওয়েস্টইন্ডিজ ক্রিকেট দলের বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান অ্যান্দ্রে রাসেল আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেন। কেকেআরের প্রথম লীগ ম্যাচ ৩১ মার্চ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের সঙ্গে খেলা হবে। আসলে অ্যান্দ্রে রাসেল কেকেআরের সিনিয়র খেলোয়াড় যিনি প্রত্যেক ম্যাচের প্রথম একাদশে থাকেন। রাসেল কেকেআরের ম্যাচ উইনার খেলোয়াড়দের তালিকায় রয়েছেন। সেই সঙ্গে তার ফর্ম প্রত্যেক আইপিএল মরশুমে প্রশংসাযোগ্য থাকে। এখন যদি শাহরুখ খানের ফ্রেঞ্চাইজি দীনেশ কার্তিকের অনুপস্থিতিতে কোনো অন্য খেলোয়াড়কে নেতৃত্বের দায়িত্ব দিতে চায় তো রাসেল দলের জন্য ভালো বিকল্প হতে পারেন। পরিসংখ্যানের কথা বলা হতে এখনো পর্যন্ত রাসেল নিজের খেলা ৬৪টি ম্যাচে ১৮৬.৪১ এর আশ্চর্যজনক স্ট্রাইকরেটের সঙ্গে ১৪০০ রান করেছেন সেই সঙ্গে তিনি ৫৫টি উইকেটও নিয়েছেন।
৪. সুনীল নারিন
কলকাতা নাইট রাইডার্সের স্পিন বোলার সুনীল নারিন সেই খেলোয়াড়দের তালিকায় রয়েছেন যিনি যে কোনো ওভারে ম্যাচকে কেকেআরের ঝুলিতে নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা রাখেন। নারিনকে কেকেআর ২০১২র আইপিএল নিলামে কিনেছিল। তখন থেকেই তিনি এই ফ্রেঞ্চাইজির সঙ্গে রয়েছেন। ৮টি মরশুমে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলা এই খেলোয়াড় ফ্রেঞ্চাইজির ধরণ ধারণ এবং খেলার ধরনের সঙ্গে ভালোমতো পরিচিত। এই অবস্থায় যদি দীনেশ কার্তিকের অনুপস্থিতিতে কেকেআর অধিনায়কের খোঁজ করে তো নারিনও ভালো বিকল্প হতে পারে। গত মরশুমের কথা বলা হয়ে এই সিনিয়র খেলোয়াড়কে কার্তিক ১২টি ম্যাচের প্রথম একাদশে রেখেছিলেন, যেখানে তিনি ৩৪.৭০ গড়ে ১০টি উইকেট নিয়েছিলেন, সেই সঙ্গে ১৬৬.২৭ স্ট্রাইকরেটে ১৪৩ রানও করেন।
৫. নীতিশ রাণা
নীতিশ রাণাকে কলকাতা নাইট রাইডার্সের দল ২০১৮য় হওয়া মেগা নিলামে কিনেছিল। যদি রাণার নেতৃত্বের অভিজ্ঞতার দিকে নিজর দেওয়া হয় তো তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে দিল্লির হয়ে অধিনায়কত্ব করেছেন। এই কারণে তিনি দীনেশ কার্তিকের অনুপস্থিতিতে কেকেআরের হয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা রাখেন। তবে বর্তমান সময় রাণা দিল্লির সহঅধিনায়ক। এখন যদি পরিসংখ্যানের কথা ধরা হয় তো রানা ২০১৮য় কলকাতার হয়ে ২৩.৩৮ গড়ে ৩০৪ রান করেন এবং ২০১৯এ ৩৪.৪০ গড়ে ৩৪৪ রান করেন এবং ৩ উইকেট নেন। ২ বার খেতাব নিজেদের নামে করা কলকাতা নাইট রাইডার্স এবার জোরে বোলার প্যাট কমিন্স, ইয়োন মর্গ্যানের মতো বড়ো খেলোয়াড়দের কিনে নিজেদের দলে যুক্ত করেছে। এই অবস্থায় এই ফ্রেঞ্চাইজিকে খেতাব জেতার প্রবল দাবীদার দেখাচ্ছে। এখন যদি নীতিশ রাণাকে নেতৃত্ব দেওয়া হয় তো আশা করা হবে যে তিনি সমস্ত খেলোয়াড়দের ভালোভাবে ব্যবহার করবেন।