২০০৯ সালে ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবে পথচলা শুরু করেছিলেন জয় শাহ (Jay Shah)। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র গুজরাত ক্রিকেট সংস্থার এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য হয়েছিলেন। এরপর রাজ্য সংস্থারই সহ-সচিব হন ২০১৩ সালে। বিসিসিআই-এর অন্দরে পা রাখা ২০১৫ সালে, ফিনান্স কমিটির সদস্য হিসেবে। প্রশাসনিক কেরিয়ারে প্রথম বড় লাফটি তিনি দিয়েছিলেন ২০১৯-এ। সচিব পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। প্রথা ভেঙে দ্বিতীয় দফার জন্য নির্বাচিত হন ২০২২-এ। মেয়াদকাল ছিলো ২০২৫ অবধি। কিন্তু তার প্রায় এক বছর আগেই ভারতীয় বোর্ডকে বিদায় জানাচ্ছেন তিনি। এবার তাঁর লক্ষ্য ক্রিকেটদুনিয়ার শীর্ষপদ। আইসিসির আগামী চেয়ারম্যান হচ্ছেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের গ্রেগ বার্কলে যে সরে যাচ্ছেন তা জানা গিয়েছিলো ২০ অগস্ট। গতকাল সর্বসম্মতিক্রমে আগামী চেয়ারম্যান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে জয় শাহ’কে (Jay Shah)।
Read More: “RIP… English..”, ICC’র চেয়ারম্যান হতেই ইংরেজি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চরম ট্রোলড জয় শাহ !!
সমস্যার মুখে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড-
জয় শাহ (Jay Shah) আইসিসি’র মসনদে বসার পর বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতের অবস্থান যে আরও মজবুত হলো তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। পক্ষান্তরে মহা সমস্যার সম্মুখীন হলো পড়শি দেশ পাকিস্তান। এর আগে নানা সময় বিসিসিআই-এর নানা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইসিসি’র (ICC) কাছে আবেদন জানানোর হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে পিসিবি (PCB) কর্মকর্তাদের। জয় শাহের নেতৃত্বাধীন সংস্থাতে ভারতীয় বোর্ডের বিরুদ্ধে নালিশ করলে আদৌ পাক বোর্ডের অভিযোগ পাত্তা পাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় বিশেষজ্ঞদের মনে। ডিসেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর চেয়ারম্যান হিসেবে জয় শাহের (Jay Shah) প্রথম বড় টুর্নামেন্ট হতে চলেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025)। ঘটনাচক্রে এই টুর্নামেন্ট নিয়েও মতভেদ রয়েছে বিসিসিআই ও পিসিবি’র মধ্যে। দুই পক্ষের দড়ি টানাটানিতে ভারত যে অনেকখানি অ্যাডভান্টেজ পাবে আগামীতে তা বলাই বাহুল্য।
পিসিবি হারাতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দায়িত্ব-
আইসিসি’র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পাকিস্তানে আয়োজিত হওয়ার কথা ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025)। ইতিমধ্যে সম্ভাব্য গ্রুপ বিন্যাস ও খসড়া সূচিও জমা দিয়েছে পিসিবি। কিন্তু বেঁকে বসেছে ভারতীয় বোর্ড। কোনো মূল্যেই তারা চাইছে না প্রতিবেশী দেশে পা রাখতে। এর আগে ২০২৩-এর এশিয়া কাপের সময় পাকিস্তানে ম্যাচ খেলার বদলে নিজেদের ম্যাচগুলি টিম ইন্ডিয়া (Team India) খেলেছিলো শ্রীলঙ্কাতে। ভারতের চাপেই মান্যতা পেয়েছিলো হাইব্রিড মডেল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্যও তেমনই হাইব্রিড মডেল চেয়েছে বিসিসিআই। তদ্বির করেছেন জয় শাহ স্বয়ং। কিন্তু এতদিন রাজী হয় নি পাকিস্তান বোর্ড। তারা চাপ বাড়িয়েছিলো বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার উপর। কিন্তু জয় শাহ (Jay Shah) নিজেই এবার আইসিসি চেয়ারম্যান হওয়ার পর চাইলে কেবল ভারতের ম্যাচ নয়, গোটা টুর্নামেন্টই সরিয়ে দিতে পারেন পাকিস্তান থেকে।
প্রত্যাঘাতের পথ’ও বন্ধ পাকিস্তানের সামনে-
২০২৬ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) ও এশিয়া কাপ আয়োজনের কথা রয়েছে ভারতের। যদি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে টিম ইন্ডিয়া না যায় সেক্ষেত্রে পালটা হিসেবে পাকিস্তানের তরফেও দুই মেগা টুর্নামেন্ট বয়কটের হুমকি দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু জয় শাহ (Jay Shah) চেয়ারম্যান পদে থাকায় আপাতত সেই হুমকিও অর্থহীন হয়ে পড়লো বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। পাকিস্তান ক্রিকেট দল না চাইলেও আইসিসি’র তরফ থেকে তাদের চাপ দিয়ে ভারত যেতে বাধ্য করা হতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা। সমস্যা যে বাড়তে পারে তা গতকাল তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকেই বুঝছেন পড়শি দেশের ক্রিকেট অনুরাগীরা। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই আশঙ্কার কথা লিখতেও শুরু করেছেন তাঁরা। কোন পথে জল গড়ায় তা অবশ্য বোঝা যাবে ১ ডিসেম্বর জয় শাহ (Jay Shah) সরকারী ভাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই।