ক্রিকেট প্রশাসনে বেশ কয়েক বছর কাটিয়ে ফেলেছেন জয় শাহ (Jay Shah)। বাইশ গজের দুনিয়ায় তিনি প্রথম পা রেখেছিলেন নিজের রাজ্য সংস্থা গুজরাত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (GCA) সৌজন্যে। সেখানে সহ-সচিব পদে ছিলেন বেশ কয়েক বছর। এরপর ২০১৯ সালে প্রথম বড় ‘ব্রেক’ পান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুত্র। তিনি সচিব পদে নিযুক্ত হন দেশের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই-তে। তাঁর সাথে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। ২০২২-এ মেয়াদকাল ফুরোলে তিনি সরে যান। কিন্তু সরতে হয় নি জয় শাহ’কে। প্রথম সচিব হিসেবে দ্বিতীয় দফায় দায়িত্ব পান তিনি। ২০২৫ অবধি সচিব পদে থাকার কথা। তারপর যেতে হবে তিন বছরের ‘কুলিং পিরিয়ডে।’ কিন্তু এক বছর আগেই বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি। বিসিসিআই ছেড়ে যোগ দিতে পারেন আইসিসি’তে।
এতদিন আইসিসি’র সভাপতি পদে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের গ্রেগ বার্কলে (Greg Barclay)। আগামী ৩০ নভেম্বর মেয়াদ ফুরোচ্ছে তাঁর। গত মঙ্গলবার তিনি স্পষ্ট করেছেন যে তৃতীয় দফায় আর পদে থাকতে রাজী নন। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, “আইসিসি চেয়ার গ্রেগ বার্কলে নিশ্চিত করেছেন যে তিনি তৃতীয় দফার জন্য নির্বাচনে অংশ নেবেন না এবং নিজের মেয়াদকাল শেষ হওয়ার পরেই সরে দাঁড়াবেন। ২০২২ সালে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার আগে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে আইসিসি চেয়ারম্যান হিসেবে স্বাধীন দায়িত্ব নিয়েছিলেন বার্কলে।” ক্রিকেটমহলে জোর গুঞ্জন যে এই শূন্যস্থানেই বসতে পারেন জয় শাহ (Jay Shah)। জগমোহন ডালমিয়া, শরদ পাওয়ার, এন শ্রীনিবাসন ও অভিনব মনোহরের পর আবারও আইসিসি’র মসনদে বসতে পারেন একজন ভারতীয়।
Read More: বাংলাদেশ সিরিজের আগেই টনক নড়ছে BCCI-এর, ফেরানো হচ্ছে এই পুরনো অস্ত্র’কে !!
আইসিসি মসনদে বসতে চলেছেন জয় শাহ-
দিনকয়েক আগে ভারতীয় বোর্ড সচিব’কে ‘এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি’ আখ্যা দিয়েছিলেন মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (MCC) সভাপতি মার্ক নিকোলাস (Mak Nicholas)। বিসিসিআই ও এসিসি’তে গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন তিনি। রয়েছেন আইসিসি’র ফিনান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স সাব-কমিটিতেও। চেয়ারম্যান পদে বসলে জয় শাহের (Jay Shah) ক্ষমতা যে বাড়বে বিলক্ষণ তা বলাই যায়। একইসাথে আইসিসি’র অন্দরে ভারতের দাপটও অনেকটাই বাড়ার সম্ভাবনা। বার্কলের (Greg Barclay) সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা সামনে আসার পরেই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের আবেদনের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। ২৭ অগস্ট অবধি রাখা হয়েছে সময়সীমা। একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলে নির্বাচন হবে ১ ডিসেম্বর।
আগে আইসিসি চেয়ারম্যান হতে গেলে মতদানকারীদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগত কোনো প্রার্থীর। কিন্তু সেই নিয়মে বদল এনেছে ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। বর্তমান নিয়ম বলছে চেয়ারম্যান নির্বাচনে জয়ী হতে ৫১ শতাংশ ভোট প্রয়োজন কোনো প্রার্থীর। মোট ১৬টি ভোট রয়েছে। ৯টি ভোট পেলেই কোনো প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা যায়। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে যে ইতিমধ্যেই ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (CA) ও ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ECB) সমর্থন জুটিয়ে ফেলেছেন বিসিসিআই সচিব। সমর্থনের অঙ্গীকার করেছে অন্যান্য পূর্ণ সদস্য’ও। ফলে ভোটে দাঁড়ালে জয় শাহের (Jay Shah) জয় যে সময়ের অপেক্ষা, তা একপ্রকার মেনে নিচ্ছে ক্রিকেটদুনিয়া। মাত্র ৩৫ বছর বয়স তাঁর। যদি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি, সেক্ষেত্রে কনিষ্ঠতম ব্যক্তি হিসেবে আইসিসি’র দায়িত্ব নেবেন তিনি।
Also Read: অশান্ত বাংলাদেশে হচ্ছে না টি-২০ বিশ্বকাপ, ভেন্যু বদলের সিদ্ধান্ত আইসিসি’র !!