সদ্যসমাপ্ত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে (IPL) দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনের কাহিনী লিখেছিলেন মহসীন খান। একটা সময় ক্রিকেটজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো চোটের কারণে। সেইখান থেকে বাইশ গজে ফেরেন বাঁ-হাতি পেসার। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের (MI) বিরুদ্ধে শেষ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করে জয় এনে দেন নিজের দল লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসকে (LSG)। ম্যাচের পর মহসীনে (Mohsin Khan) মজেছিলো সোশ্যাল মিডিয়া। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরাও সেদিন তারিফ করেছিলেন তাঁর। ভারতের জার্সিতে জাহির খানের পর অবশেষে একজন কার্যকরী বাঁ-হাতি পেসার পাওয়া যাবে, আশায় ছিলেন অনুরাগীরা। কিন্তু সাফল্যের বাতাবরণ বেশীদিন রইলো না তাঁর সঙ্গে। ধর্ষণের মত গুরুতর অপরাধে তাঁর অভিযুক্ত হতে হলো আইপিএল শেষের দিনকয়েকের মধ্যেই। লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্ট (LSG) পেসারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ যিনি এনেছেন তিনি আর কেউ নয়, সম্পর্কে মহসীনের বৌদি।
একা মহসীন (Mohsin Khan) নন, তাঁর গোটা পরিবারের দিকে আঙুল তুলেছেন নির্যাতিতা। অভিযোগ করেছেন পেস তারকার বাবা এবং দাদার বিরুদ্ধেও। পেশায় ঐ মহিলা উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একজন কনস্টেবল। তিনি অভিযোগ করেছেন যে বিয়ে নিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন মহসীন খানের দাদা। বিবাহের আগে তিনি ঐ মহিলাকে জানিয়েছিলেন যে ইসলাম ছেড়ে তিনি বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন। কিন্তু পরে তিনি জানতে পারেন যে আগাগোড়া মিথ্যে বলেছেন মহসীনের (Mohsin Khan) দাদা। উলটে মহিলাকেও জবরদস্তি ইসলামে ধর্মগ্রহণে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি তাঁর স্বামীই তাঁকে নিজের ভাই ও বাবার সাথে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের কথা বলেন বলেও অভিযোগ নির্যাতিতার। গোটা ঘটনাটি একটি সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন তিনি। আইনের সাহায্য নেওয়ার পথে হেঁটে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সহায়তা প্রার্থনা করেছেন মহিলা।
Read More: WTC ফাইনালে ঋষভ পন্থের অভাব অনুভব করবে ভারতীয় দল, পরিসংখ্যানই দিচ্ছে প্রমাণ !!
লাভ জিহাদ কাঁটায় বিদ্ধ মহসীন ও তাঁর পরিবার-
জবরদস্তি ইসলাম ধর্মগ্রহণে বাধ্য করেছে মহসীনের দাদা ইমরান। নির্যাতিতার বয়ানের ফলে ‘লাভ জিহাদ’-এর অভিযোগেও অভিযুক্ত হয়েছেন লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস (LSG) তারকা এবং তাঁর পরিবার। একই সাথে রয়েছে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থার মত গুরুতর অভিযোগও। মহিলার দাবী তিনি যখন মোরাদাবাদ গিয়েছিলেন তখনই তাঁকে ধর্ষণ করেন মহসীন। ঘটনার সময় তাঁর স্বামী অর্থাৎ মহসীনের (Mohsin Khan) দাদা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না বলেই দাবী নির্যাতিতার।
এক সাক্ষাৎকারে মহিলা জানিয়েছেন, “ইমরান বৌদ্ধধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলো কেবল আমায় ফাঁসানোর জন্য। এই ষড়যন্ত্রে গোটা পরিবার যুক্ত রয়েছে। ধর্মান্তরিত হওয়ার পরেও ও নিয়মিত নমাজ পড়ত এবং মসজিদে যেত। আমাকেও আজমের এবং বারাবাঁকি’র মসজিদে নিয়ে গিয়েছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমি যখন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলাম, তখন মোরাদাবাদ গিয়েছিলাম। মহসীন খান তখন আমায় ধর্ষণ করে। এখন ও লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের হয়ে খেললেও তখন কোথাও খেলতো না।”
মহসীনের (Mohsin Khan) বিরুদ্ধে অভিযোগের সুর চড়িয়ে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, “সেদিন বাড়িতে একটা জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিলো। সবাই ফিরে যাওয়ার পর আমার স্বামীও রাতের শিফটে কাজ করতে যায়। তখনই মহসীন আমায় ধর্ষণ করে।” গোটা ঘটনা জানিয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হলেও পুলিশের তরফ থেকে বিশেষ সাহয্য পান নি বলেও অভিযোগ করেছেন মহিলা। এই ভিডিও সামনে আসার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে কিনা সেই দিনে নজর থাকবে সকলের। অভিযোগ সত্যি বলে প্রমাণিত হলে মহসীন খানের ক্রিকেট কেরিয়ারের সামনেও যে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন উঠে যাবে তা বলাই যায়।