চলছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (IPL) সপ্তদশতম মরসুম। প্রতি বছরই ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই আয়োজিত এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ প্রতিযোগিতায় লাইমলাইটে জায়গা করে নেন একঝাঁক তরুণ ক্রিকেটার। ব্যতিক্রম নয় ২০২৪-এর আইপিএল’ও। এখনও অবধি কেবল দুই সপ্তাহ গড়িয়েছে টুর্নামেন্ট, এর মধ্যেই অভিষেক পোড়েল (Abhishek Porel), রিয়ান পরাগ’রা (Riyan Parag) জায়গা করে নিয়েছেন ক্রিকেটজনতার চর্চায়। এই তালিকায় সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে মায়াঙ্ক যাদবের (Mayank Yadav) নাম’ও। ২০২২ সালের আইপিএলে এক্সপ্রেস গতিতে বোলিং করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন উমরান মালিক। কিন্তু গত কয়েক মাসে সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেন নি। গতিশীল ফাস্ট বোলারের যে শূন্যতা উমরানের (Umran Malik) অফ ফর্মের কারণে তৈরি হয়েছিলো ভারতীয় ক্রিকেটে, মায়াঙ্ক দ্রুত তা পূরণ করতে পারবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
Read More: IPL 2024: “ল্যান্ড করেছে হেলিকপ্টার…” ধোনি ধামাকায় উজ্জ্বল বিশাখাপত্তনম, উদ্দীপনার ঢেউ অনুরাগীদের মধ্যে !!
অভিষেক ম্যাচে চমকপ্রদ পারফর্ম্যান্স মায়াঙ্কের-

দিল্লীর তরুণ পেসার মায়াঙ্ক যাদব’কে (Mayank Padav) মনে ধরেছিলো গৌতম গম্ভীরের। তিনি লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের মেন্টর থাকাকালীন তাঁকে দলে সামিল করেছিলেন। গত মরসুমেই হয়ত আইপিএল খেলার স্বাদ পেয়ে যেতেন মায়াঙ্ক, কিন্তু ভাগ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাঁর সামনে। প্রস্তুতি ম্যাচে চোট পেয়ে গোটা টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে গিয়েছিলেন তিনি। এবারও প্রথম ম্যাচে রাজস্থানের বিরুদ্ধে খেলানো হয় নি তাঁকে। দ্বিতীয় ম্যাচে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের (LSG) হোমগ্রাউন্ড ভারতরত্ন শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী একানা স্টেডিয়ামে পাঞ্জাব কিংস-এর (PBKS) বিরুদ্ধে মায়াঙ্ককে পরিকল্পনায় রেখেই দল সাজান কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার। আস্থার দাম দিয়েছেন বছর ২১-এর তরুণ। অভিষেকেই ৪ ওভারে মাত্র ২৭ রানের বিনিময়ে তুলে নিয়েছেন ৩টি উইকেট। হয়েছেন ম্যাচের সেরা।
লাইন-লেন্থে নিখুঁত হওয়ার পাশাপাশি নজর কেড়েছে মায়াঙ্কের (Mayank Yadav) গতি। এর আগে দিল্লীর জার্সিতে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে (SMAT 2023) নিয়মিত ১৫০কিলোমিটার প্রতি ঘন্টার বেশী গতিতে বোলিং করেছিলেন তিনি। এবার আইপিএলেও গতির তুফান ছোটালেন তিনি। প্রথম বলটিই করেন ১৪৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিতে। এরপর ক্রমে গতি বাড়াতে থাকেন তিনি। স্পেলের তৃতীয় বলেই স্পর্শ করেন ১৫০-এর মাইলস্টোন। ষষ্ঠ ডেলিভারিতে রেকর্ড গড়েন তিনি। স্পিডোমিটারের কাঁটা ছোঁয় ১৫৫.৮ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা গতিবেগ। অভিজ্ঞ ব্যাটার শিখর ধাওয়ান (Shikhar Dhawan) অবধি মায়াঙ্কের জেট গতির নাগাল পান নি। এবারের আইপিএলে সরবোচ্চ গতির তিনটি ডেলিভারির মালিকই এখন তিনি। ২৪ বলের স্পেলে মোট ৮টি বল ১৫০ বা তার বেশী গতিতে করেছেন তিনি। এই পারফর্ম্যান্স ধরে রাখতে পারলে মায়াঙ্কের সামনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা।
জাতীয় দলের রেডারে মায়াঙ্ক যাদব-

২০২২-এর আইপিএলে (IPL) নজর কাড়ার কয়েক মাসের মধ্যেই জাতীয় দলের হয়ে সুযোগ দেওয়া হয়েছিলো উমরান মালিক’কে। একটানা বেশ কিছু টি-২০ ও টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। ২০২৪-এর আইপিএলে গতির ঝড় তোলা মায়াঙ্কের (Mayank Yadav) জন্য’ও সম্ভবত অপেক্ষা করে রয়েছে জাতীয় দলের ডাক। ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ টুর্নামেন্টের দিকে নিঃসন্দেহে নজর রয়েছে অজিত আগরকারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটির। মায়াঙ্কের মত প্রতিভাকে হাতছাড়া কোনোভাবেই করতে চাইবেন না তাঁরা। আগামী জুনে রয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর যে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে স্কোয়াড ঘোষণা হতে পারে সেই মেগা টুর্নামেন্টের জন্য। যদি ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেন মায়াঙ্ক, তাহলে বুমরাহ, সিরাজদের সাথে ভারতীয় পেস ব্যাটারির ধার বাড়াতে টি-২০ বিশ্বকাপে খেলানো হতেই পারে তরুণ তুর্কিকে।