IPL 2025: অনেক ঢাক-ঢোল পিটিয়ে জোফ্রা আর্চারকে (Jofra Archer) দলে ফিরিয়েছিলো রাজস্থান রয়্যালস। ট্রেন্ট বোল্টের বদলি হিসেবে নতুন বল হাতে ঝড় তুলবেন ক্যারিবিয়ানজাত ইংল্যান্ড পেসার, আশায় ছিলেন কর্মকর্তারা। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে উলটো ছবি। প্রথম ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে মুখ থুবড়ে পড়েছেন আর্চার। চার ওভারে ১৯ ইকোনমি রেটে তিনি খরচ করেছেন ৭৬ রান। বাসিল থাম্পি, ঈশান্ত শর্মাদের ছাপিয়ে আইপিএলের (IPL) ইতিহাসে এক ওভারে সবচেয়ে বেশী রান বিলোনোর অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডটিও নিজের করে নিয়েছেন আর্চার (Jofra Archer)। দ্বিতীয় ম্যাচেও আহামরি পারফর্ম করতে পারেন নি তিনি। নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ২.৩ ওভারে ৩৩ রান খরচ করেন। আর্চারের বিরুদ্ধে জ্বলে উঠেছিলো ক্যুইন্টন ডি ককের ব্যাট। তাঁর ধারাবাহিক বাজে পারফর্ম্যান্সে ক্ষোভ বাড়ছে ক্রিকেটজনতার।
Read More: IPL 2025: টুর্নামেন্টের শুরুতেই কোহিনুর হীরা হাতে পেলেন ঋষভ পান্থ, LSG’কে ট্রফি জিতেয়েই নেবেন দম!!
আগেও হতাশ করেছেন আর্চার-

ক্যারিবিয়ান ঘরোয়া ক্রিকেটে সাড়া ফেলে দেওয়ার পর ২০১৮ সালে আইপিএলের (IPL) দরজা খুলেছিলো জোফ্রা আর্চারের (Jofra Archer) জন্য। ৭.২০ কোটি টাকার খরচ করে তাঁকে দলে সামিল করেছিলো রাজস্থান রয়্যালস। প্রথম মরসুমে ১০ ম্যাচ খেলে তিনি তুলে নিয়েছিলেন ১৫টি উইকেট। গতি ও নিখুঁত নিয়ন্ত্রণ নজর কেড়েছিলো বিশেষজ্ঞদের। ২০১৯-এর আইপিএলেও (IPL) ভালো ছন্দে ছিলেন আর্চার। ১১ ম্যাচে নেন ১১ উইকেট। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে তিনি সেরা পারফর্ম্যান্স করেছিলেন ২০২০-২১ মরসুমে। ১৪ ম্যাচে ১৮.২৫ গড় ও ৬.৫৫ ইকোনমি রেটে ২০ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি লোয়ার অর্ডারে নেমে ১১৩ রান’ও করেন আর্চার (Jofra Archer)। টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটার বা মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ারের খেতাব জিতেছিলেন জোফ্রা আর্চার। তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন অনুরাগীরা। কিন্তু ছন্দপতন হয় এরপরই।
বারবার সম্ভাবনাময় পেসারের পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে চোট-আঘাত। ২০১৯ সালে ডান হাতের কনুইতে স্ট্রেফ-ফ্র্যাকচার হয়েছিলো আর্চারের (Jofra Archer)। সেই আঘাত সারিয়ে ফিরেছিলেন ছন্দে। এরপর ২০২১-এর মে ও ডিসেম্বরে ডান হাতের কনুইতে জোড়া অস্ত্রোপচার হয় তারকা পেসারের। এক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে পারেন নি তিনি। ২০২১-এর আইপিএলেও (IPL) দেখা যায় নি আর্চারকে। ২০২২-এ পিঠে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার ধরা পড়ায় ফের লম্বা সময়ের জন্য ছিটকে যেতে হয় তাঁকে। ২০২৩ আইপিএলের (IPL) জন্য আর্চারকে ৮ কোটি টাকার বিনিময়ে দলে নিয়েছিলো মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI)। কিন্তু মাত্র পাঁচটি ম্যাচই খেলতে পারেন তিনি। নিয়েছিলেন ২টি মাত্র উইকেট। এরপর কনুইতে ফের সমস্যা শুরু হয় তাঁর। আইপিএলের মাঝপথে ছিটকে যান তিনি। অ্যাসেজ ও ওয়ান ডে বিশ্বকাপে পাওয়া যায় নি তাঁকে।
১২.৫০ কোটি জলে রাজস্থানের ?

২০২৪-এর আইপিএলে (IPL) চোটের জন্য খেলতে পারেন নি জোফ্রা আর্চার (Jofra Archer)। মিনি নিলামে নাম দিয়েও শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ান। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন ২০২৫-এ। দীর্ঘ অফ ফর্ম, চোট-আঘাত সত্ত্বেও তাঁর পুরনো পারফর্ম্যান্স মাথায় রেখে ১২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে আর্চারকে স্কোয়াডে সামিল করেছিলো রাজস্থান রয়্যালস (RR)। কিন্তু মরসুমের প্রথম দু’টি ম্যাচে যেভাবে বোলিং করেছেন তিনি, তাতে বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশই মনে করছেন যে রাহুল দ্রাবিড় ও কুমার সাঙ্গাকারার মত দুই ধুরন্ধর ট্যাকটিশিয়ানও ভুল করে বসেছেন আর্চারকে দলে সামিল করে। এমনিতেই এবার রাজস্থানের বোলিং গভীরতা কম। পেস বিভাগে রয়েছেন কেবল সন্দীপ শর্মা, আকাশ মাধওয়াল, কোয়েনা মাপাখা ও তুষার দেশপাণ্ডে। বড় মঞ্চে খেলার বিশেষ অভিজ্ঞতা তাঁদের কারও নেই। আর্চার যদি দ্রুত ছন্দ খুঁজে না পান, সেক্ষেত্রে ভুগতে হবে দলকে।