IPL 2025: ক্যালেন্ডারের হিসেবে ২০২৫-এর আইপিএল (IPL) শুরু হতে বাকি এখনও আট মাসের কাছাকাছি। কিন্তু মেগা অকশনের সৌজন্যে এখন থেকেই পড়ে গিয়েছে সাজসাজ রব। এখনও পর্যন্ত বিসিসিআই-এর তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয় নি কতজনকে ধরে রাখা যাবে, রিটেনশনের পদ্ধতিই বা কি হবে। তবে ছ’জন’কে ধরে রাখার ছাড়পত্র মিলবে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। তারপর থেকেই পারমুটেশন-কম্বিনেশন শুরু হয়ে গিয়েছে লক্ষ্ণৌ (LSG) ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির অন্দরে। অধিকাংশ তারকাকেই যে ছেড়ে দিতে হবে তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার। সেট দল ধরে রাখতে তাদের সামনে চ্যালেঞ্জ থাকবে পুরনো খেলোয়াড়দের নিলামের লড়াই থেকে ফের দলে ফেরানোর। সেই চ্যালেঞ্জ স্বীকার করছে সঞ্জীব গোয়েঙ্কার (Sanjiv Goenka) দল। কোন কোন ‘চেনা মুখের’ জন্য নিলামে ঝাঁপাবে তারা, তা দেখে নিন এই প্রতিবেদনে।
Read More: BCCI এর উপর নারাজ হয়ে অবসরের ঘোষণা দিলেন চাহাল, সোশ্যাল মিডিয়ায় উগরে দিলেন ক্ষোভ !!
নবীন উল হক-
আফগানিস্তানের নবীন উল হকের (Naveen ul Haq) সাথে সুপারজায়ান্টস ফ্র্যাঞ্চাইজির সম্পর্ক খুবই ভালো। কেবল ভারতে না, দক্ষিণ আফ্রিকার SA20 টুর্নামেন্টেও গোয়েঙ্কার মালিকানাধীন ডারবান সুপারজায়ান্টসের হয়ে খেলেন তিনি। বোলিং আক্রমণের অন্যতম পরিচিত মুখ আইপিএল (IPL) খেলছেন দুই বছর। ১৮ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়েছেন। পাওয়ার প্লে ও ডেথ ওভারে ভালো পারফর্ম্যান্স তাঁর। সাম্প্রতিক টি-২০ বিশ্বকাপেও ভালো খেলেছেন। আফগানিস্তানের সেমিফাইনালে পা রাখার নেপথ্যে অন্যতম কারণ ছিলেন তিনি। ছ’টি রিটেনশন স্লটের মধ্যে নবীনকে হয়ত ধরে রাখা দুষ্কর হবে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের পক্ষে। তবে তাঁকে কোনোভাবেই হারাতে চাইবেন না গোয়েঙ্কারা। নিলামে আবারও ঝাঁপাবেন তাঁর জন্য। আপাতত ৫০ লক্ষ টাকার চুক্তি তাঁর সাথে রয়েছে, হয়ত এর দ্বিগুণেরও বেশী খরচ করতে হতে পারে তাঁর জন্য।
ক্যুইন্টন ডি কক-
তালিকায় দ্বিতীয় নাম হতে পারে ক্যুইন্টন ডি ককের (Quinton de Kock)। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের আইপিএল (IPL) অভিজ্ঞতা বিপুল। এর আগে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, দিল্লী ক্যাপিটালস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে খেলেছেন। লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের শুরুর মুহূর্ত থেকে রয়েছেন দলে। ওপেনার হিসেবে নেমে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার দক্ষতা রয়েছে তাঁর। লক্ষ্ণৌর জার্সিতে ২০২৩ মরসুমে বিশেষ সুযোগ না পেলেও ২০২২ ও ২০২৪-এ নিয়মিত ছিলেন তিনি। ছয় জনের রিটেনশন তালিকায় ঠাঁই না হওয়ার সম্ভাবনা তাঁর’ও। কিন্তু কে এল রাহুলের ওপেনিং পার্টনার হিসেবে ডি কক’ই হতে পারেন ফ্র্যাঞ্চাইজির এক নম্বর পছন্দ। সেক্ষেত্রে নিলামে তাঁর জন্য অল-আউট যেতে পারে সুপারজায়ান্টস শিবির। বর্তমানে তাঁর চুক্তিমূল্য ৬.৭৫ কোটি টাকা। নিলামে এর চেয়ে কম মূল্যে তাঁকে পেতে পারে লক্ষ্ণৌ।
আয়ুষ বাদোনি-
তালিকায় তৃতীয় নাম হতে পারে দিল্লীর আয়ুষ বাদোনি’র (Ayush Badoni)। শোনা যাচ্ছে দু’টি আনক্যাপড স্লট আলাদা করে রিটেনশনের জন্য দেওয়া হতে পারে। যদি তা হয় তাহলে আয়ুষ’কে ‘আনক্যাপড’ হিসেবে রিটেন’ও করতে পারে সুপারজায়ান্টস শিবির। তবে যদি তা না হয়, তাহলে তাঁর জন্য নিলামে বড়সড় দর হাঁকতে চলেছে তারা। ২০২২ থেকেই লক্ষ্ণৌ’তে (LSG) রয়েছেন বাদোনি। মিডল অর্ডারে হোক বা ফিনিশার হিসেবে-যখন যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন তিনি, জাত চিনিয়েছেন। ৪২ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৬৩৪ রান। ১৩৫-এর স্ট্রাইক রেট বজায় রেখেছেন তিনি। একানা স্টেডিয়ামের মন্থর বাইশ গজের নিরিখে যা মোটেও সহজ কাজ নয়। রয়েছে ৪টি অর্ধশতক’ও। বাদোনির পক্ষে যাবে তাঁর সাম্প্রতিক ফর্ম’ও। দিল্লী প্রিমিয়ার লীগে (DPL) দুর্দান্ত খেলছেন তিনি। তাঁর সাথে ২০ লক্ষের চুক্তি রয়েছে আপাতত, তা বাড়তে পারে বেশ খানিকটা।
যশ ঠাকুর-
এই তালিকায় চতুর্থ নামটি হতে পারে যশ ঠাকুরের (Yash Thakur)। গত মরসুমে মহসীন খান, মার্ক উড’দের বেশ কিছু ম্যাচে পায় নি লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস। মায়াঙ্ক যাদব সাড়া জাগিয়ে শুরুটা করলেও চোটের ধাক্কায় ছিটকে যায় গোটা মরসুম থেকে। নবীন উল হক ও মার্কাস স্টয়নিসের সাথে পেস বিভাগের দায়িত্ব কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামলেছেন ২৫ বর্ষীয় যশ ঠাকুর (Yash Thakur)। ১০ ম্যাচে তিনি নিয়েছেন ১১ উইকেট। এর মধ্যে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ৩০ রান খরচ করে ৫ উইকেট নেওয়ার নজিরও রয়েছে। ২০২৩ সালেও তিনি ৯ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়েছিলেন। রান খরচের হাত থাকলেও তাঁর দক্ষতার উপর আবারও আস্থা রাখতে পারেন কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার। আপাতত তাঁর বেতন ৪৫ লক্ষ। আগামী আইপিএলে (IPL) তার চেয়ে বেশী মূল্যেই তিনি ফিরতে পারেন লক্ষ্ণৌ’তে।