IPL 2025: রুদ্ধশ্বাস এক টি-২০ যুদ্ধের সাক্ষী থাকলো রবিবারের ইডেন গার্ডেন্স। আইপিএলের (IPL) প্লে-অফে পা রাখার ক্ষীণতম আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে আজ জয় ছাড়া রাস্তা ছিলো না কলকাতা নাইট রাইডার্সের সামনে। ইতিমধ্যে ছিটকে যাওয়া রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে কোনোক্রমে মান বাঁচলো তাদের। টসে জিতে প্রথম ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নাইট অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে। আন্দ্রে রাসেলের ধুন্ধুমার অর্ধশতকের সৌজন্যে তারা ২০ ওভারে তোলে ২০৬ রান। তাড়া করতে নেমে একটা সময় বেশ চাপে ছিলো রাজস্থান। ৯০ রানের মধ্যে তারা হারিয়েছিলো ৫ উইকেট। কিন্তু এরপর খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন রিয়ান পরাগ। অসমের তরুণের অবিশ্বাস্য ইনিংস চালকের আসনে বসিয়েছিলো রাজস্থানকে। শেষ ওভারে ধুন্ধুমার ব্যাটিং করে রয়্যালসদের বৈতরণী পার করানোর চেষ্টা করেন শুভম দুবেও। কিন্তু রান আউটে ভাঙলো স্বপ্ন।
Read More: “জন্মগত চোকার্স…” রাজস্থানের বিরুদ্ধে ১ রানে জয় ছিনিয়ে নিলো KKR, সমাজ মাধ্যমে শুরু হলো চর্চা !!
ধুন্ধুমার ইনিংস রিয়ান পরাগের-

গুজরাতের বিরুদ্ধে শতরানের পর আচমকাই নিম্নগামী বৈভব সূর্যবংশীর (Vaibhav Suryavanshi) ফর্মের গ্রাফ। গত ম্যাচে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরেছিলেন তিনি। ক্রিজে টিকেছিলেন ঠিক দুই বল। আজও দুই বলের বেশী এগোলো না তাঁর ইনিংস। শুরুটা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু দ্বিতীয় বলে বড় শট মারতে গিয়ে অজিঙ্কা রাহানের হাতে ক্যাচ তুলে আসেন তিনি। তাঁকে ফেরান বৈভব আরোরা। তিন নম্বরে নামা কুণাল সিং রাঠৌরও রানের মুখ দেখেন নি। শূন্য রানের মাথায় তাঁকে আউট করেন মঈন আলি। ৮ রানের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে বসা রাজস্থানের হয়ে প্রত্যাঘাতের শুরুটা করেন যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal)। তবে বেশী দূর এগোতে পারেন নি তিনিও। ২১ বলে ৩৪ করে থামতে হয় বাম হাতি ওপেনারকে। মঈনেরই দ্বিতীয় শিকার হন তরুণ তুর্কি।
শূন্যের গেরো কাটাতে পারেন নি ধ্রুব জুরেল (Dhruv Jurel) ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। দু’জনকেই আউট করেন বরুণ চক্রবর্তী। পাঁচ উইকেট হারানোর পর মনে হয়েছিলো সহজেই দুই পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়ে যাবে নাইটরা। কিন্তু রুখে দাঁড়ান রিয়ান পরাগ (Riyan Parag)। অপর প্রান্তে একের পর এক উইকেট পড়লেও বুক চিতিয়ে লড়াই করলেন রাজস্থানের কার্যনির্বাহী অধিনায়ক। হর্ষিত রাণা, বরুণ চক্রবর্তীদের একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকান। রীতিমত ছেলেখেলা করলেন মঈন আলিকে নিয়ে। তাঁর এক ওভারে টানা পাঁচটি ছক্কা হাঁকান রিয়ান (Riyan Parag)। এক ওভারে না হলেও পরপর ছয় বলে ছয় ছক্কার রেকর্ডও আজ গড়ে ফেললেন তিনি। শিমরণ হেটমায়ারের সাথে জুটি বেঁধে একটা সময় রাজস্থানকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। ছন্দপতন ঘটে অষ্টাদশতম ওভারে। ৪৫ বলে ৯৫ করে আউট হন রিয়ান।
কোনোক্রমে রক্ষা পেলো নাইট রাইডার্স-

শেষ ওভারে রাজস্থানের প্রয়োজন ছলো ২২ রান। বৈভব আরোরার হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অজিঙ্কা রাহানে। প্রথম দুই বলে তিন রান নেন জোফ্রা আর্চার। ৪ বলে প্রয়োজন ১৯, দাঁড়িয়েছিলো সমীকরণ। ফেভারিটের আসনে ততক্ষণে নাইট রাইডার্সকেই (KKR) বসিয়ে ফেলেছেন সকলে। কিন্তু এরপরেও রাহানে-নারাইনদের শিঁড়দাঁড়া দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত বইয়ে দেন শুভম দুবে। বৈভবের পরবর্তী তিনটি ডেলিভারিতে ছিনিয়ে নেন যথাক্রমে ছক্কা, চার ও ছক্কা। তীরে এসে তরী ডোবার আশঙ্কা জাঁকিয়ে বসেছিলো কলকাতার ডাগ-আউটে। শেষমেশ অবশ্য ঘটে নি বিপর্যয়। শেষ বলে দ্বিতীয় রান নিয়ে ম্যাচ টাই করার মরিয়া চেষ্টায় রান-আউট হন জোফ্রা আর্চার। রক্ষা পায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। আজকের ২ পয়েন্টের ফলে ১১ ম্যাচে ১১ পয়েন্টে পৌঁছলো কলকাতা। আইপিএলের (IPL) লীগ তালিকায় উঠে এলো ষষ্ঠ স্থানে।